সোয়েব বাসিত
নগরীর পশ্চিম কাজিরবাজারে কাঁঠালহাটা সহ বিভিন্ন স্পটে প্রশাসনের চোখ ফঁাঁকি দিয়ে প্রতিনিয়তই চলছে রমরমা জুয়ার আসর। জুয়া ছোট শব্দ হলেও মানুষকে নিঃস্ব করার অসীম ক্ষমতা রয়েছে। জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে প্রতিনিয়ত পারিবারিক অশান্তিসহ সামাজিক সমস্যা বাড়ছে। এতে ভুক্তভোগীরা সর্বস্বান্ত হলেও জুয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে আয়োজক চক্র।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নগরীর পশ্চিম কাজিরবাজার কাঁঠালহাটাতে দোকান ভাড়া নিয়ে এবং খোলা জায়গায় অস্থায়ী সেড তৈরি করে স্থানীয় একটি মহল প্রকাশ্যে বসাচ্ছে জুয়ার আসর। বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত লাখ লাখ টাকার জুয়া খেলা হয় এ আসরে। পবিত্র রমজানের মধ্যেও কোনো কিছুর তোয়াক্কা না করে স্পটগুলোতে দেদারসে চলছে আসর। বিকেল ৫ টা থেকে খেলা শুরুর আগ পর্যন্ত চলে ক্রিকেট খেলাকে নিয়ে বিভিন্ন অংকের টাকা কালেকশন, তীরের নাম্বার ও টাকা কালেকশন। এশার নামাজের পর থেকে বসে ওয়ান-টেন বোর্ড, ক্যারাম, তাস, লুডু, ছাড়াও বিভিন্ন খেলার বোর্ড। বিতর্কিত পরিচিত মুখ আর অপরিচিত অনেক লোকজনের আনাগোনা দেখা যায় সেখানে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন এজেন্টের মাধ্যমে জুয়াড়িদের কাছ থেকে আয়োজকরা টাকা আদায় করে। আর এর বিনিময়ে জুয়া খেলার জন্য বিকাশ, নগদ টাকা ধার, বন্ধক, মোবাইল, ঘড়ি, স্বর্ণ, মাদকসহ নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে আয়োজকরা। এতে করে সর্বস্বান্ত হচ্ছে আসক্তরা আর লাভবান হচ্ছে আয়োজকরা।
এলাকা থেকে অভিযোগ উঠেছে জুয়া আসরকে ঘিরে বিভিন্ন মাদকের সহজ প্রাপ্যতা হওয়ায় দিন দিন এলাকার উঠতি যুবক ও ছাত্রসমাজ মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। কোনো অবস্থাতেই তাদের সন্তানদের এই মরণ নেশার থেকে দূরে রাখতে পারছেন না। অনেক সময় অধিকাংশ পরিবারে বিরাজ করছে অশান্তি। পরিবার থেকে অর্থ না পাওয়ায় জুয়া বোর্ডের দিকে ঝুঁকছে আর জুয়াড়িদের নির্বিঘেœ খেলায় সহযোগিতা করতে বোর্ড পরিচালনাকারী চক্র এদেরকে ব্যবহার করছে। বিভিন্ন খাবার, মাদক সরবরাহ, জুয়াড়িদের নির্দিষ্ট আসরে পৌঁছে দেওয়া, মোটরসাইকেল হেফাজতে রাখাসহ মোড়ের চায়ের দোকনগুলোতে পাহারাদার হিসাবে দিন-রাত বসিয়ে রাখা হচ্ছে এদের। দিন শেষে হাতে কিছু টাকা ধরিয়ে দিচ্ছে। আর এই টাকা দিয়েই অনেকে নেশা করছে, কেউ কেউ জুয়া খেলছে। মাঝে মাঝে এলাকায় কিছু ছোট-বড় চুরির ঘটনাও ঘটছে। বর্তমানে জুয়ার আসরের সাথে মাদকের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পাওয়ায়, জুয়া ও মাদকের আসরকে ঘিরে এলাকার অভিভাবকরা তাদের সন্তান ও পরিবেশ নিয়ে চিন্তিত। সব কিছু জানা সত্তে¡ও অহেতুক বিপদে পড়ার ঝামেলা এড়াতে নীরবতা পালন করে চলেছেন তারা।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও এলাকার লোকজন পুলিশ ও র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (র্যাব) এর তরিৎ জোরালো অভিযানের দাবি জানিয়েছেন।