মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজার মডেল থানার সামনে রাস্তায় পুলিশের চেকপোস্টে সিগন্যাল অমান্য করায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবককে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। মোটর সাইকেল আরোহী দুইযুবককে পেটানোর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
রবিবার (৪ মার্চ) দুপুর আড়াইটার দিকে মৌলভীবাজার মডেল থানার সামনে পুলিশ চেকপোস্টে এ ঘটনা ঘটে।
মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবককে পেটানোর আনীত অভিযোগ মৌলভীবাজার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মো. মহসিন ভুইয়া অস্বীকার করেছেন।
মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবক হল, শ্রীমঙ্গল শহরের কলেজ রোডস্থ সৈয়দ কামরুল ইসলামের ছেলে সৈয়দ মাসুদ আরেফিন (২৩) ও একই এলাকার বাসিন্দা শেখ নুরুল ইসলাম এর ছেলে শেখ নুরুজ্জামান (২২)।
শেখ নুরুজ্জামান মৌলভীবাজার সরকারী কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। অপরজন সৈয়দ মাসুদ আরেফিন লেখাপড়া বন্ধ করে দিয়েছেন।
মোটর সাইকেল আরোহী শেখ নুরুজ্জামান সোমবার দুপুরে জানান, আমার তাড়া ছিল। বন্ধুর মোটরসাইকেল নিয়ে শ্রীমঙ্গল থেকে মৌলভীবাজার উদ্যোশে রওয়ানা হই। আমি খুব দ্রুতগতিতে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিলাম। মূল উদ্যোশ ইউকে ইমিগ্রেশন কন্সালটেন্স এর সাথে দেখা করা, পাসপোর্ট অফিস এবং ডাচ বাংলা ব্যাংকে কাজ ছিল। হাতে সময় নেই সঙ্গে ছিল আমার এক বন্ধু। অফিস টাইমের মধ্যে সব কাজ করতে হবে। অন্যদিকে আরেক বন্ধুর মোটরসাইকেল নিয়ে আসছি। সাইকেল এর কাগজপত্র সাথে ছিল না। প্রথমে পুলিশ চেকপোস্টে আমাকে সিগন্যাল দিলে তা অমান্য করে দ্রুতগতি চলে যাওয়ার চেষ্টা করি। পেকেটে টাকাও ছিল না। আর যা ছিল মোটরসাইকেলে তেল নিয়েছি। টাকা পেকেটে থাকলে পুলিশের সিগন্যাল মানতাম। কিন্তু কিছু দূর গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আরেকটি মোটরসাইকেলের সাথে ধাক্কা খেয়ে সড়কে পড়ে যাই। পরে পুলিশ আমাদের দুইজনকে ঝাপটে ধরে মারপিট করে থানায় নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ১০টার দিকে আমার আব্বা, শ্রীমঙ্গল থানার ওসি নজরুল স্যার, শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মসুদ আহমদ ও তার ভাতিজা এড: ফাহাদ আহমদ মুচলেকা দিয়ে আমাদের দুইজনকে ছাড়িয়ে নেন।’
নুরুজ্জামান পুলিশের ভয়ে মারপিটের বিষয়টি অস্বীকার করলেও এক পর্যায়ে তিনি স্বীকার করে বলেন, ‘আমারতো কোন সমস্যা হবে কি ? কারণ আমরা এ ব্যাপারে কোন কথা বলতে নিষেধ করা হয়েছে।’
মৌলভীবাজার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মহসীন ভূঁইয়া বলেন, ‘থানার সামনে পৌঁছালে পুলিশ সিগন্যাল দেয়। তারা পুলিশের সিগন্যাল অমান্য করে পাশ কাটিয়ে দ্রুত গতিতে চলে যায়। এরপর কিছু দূরে গিয়ে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তারা পড়ে যায়। এ অবস্থায় আমি (এসআই মহসীন ভূঁইয়া) কাছে গিয়ে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। এর আগে আমি তাদেরকে কোন মারপিট করিনি। চিকিৎসা শেষে তাদেরকে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওইদিন রবিবার রাতে দুই যুবকের পরিবার ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আসলে তাদের জিম্মায় দেয়া হয়। তিনি আরও বলেন, মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়েছে, কাগজপত্র যাচাই বাছাইয়ের পর দেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘এই দুই যুবক শ্রীমঙ্গল থেকে মৌলভীবাজার শহরে প্রবেশ পর্যন্ত মোট চারটি চেকপোস্টে দায়িত্বরত পুলিশের সিগন্যাল অমান্য করেছিল।’
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহ্জালাল মুঠোফোনে (নং-০১৭১৩৩৭৪৪৩৩) যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।