কাজির বাজার ডেস্ক
চারদিকের নদী-হাওর-বিলে শুধু স্বচ্ছ পানি। ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ আর ধরা পড়ছে না জেলেদের জালে। প্রতিবছর এ সময়টায় ফেঞ্চুগঞ্জের হাওর-নদী-বিলে নানা প্রজাতির মাছ জেলেদের জালে আটকা পড়লেও এবারের চিত্র ভিন্ন। সারাদিন পানিতে জাল ফেলে হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও দুইশ-তিনশ টাকার মাছও ধরতে পারছেন না স্থানীয় জেলেরা।
কুশিয়ারা নদীর নাদানজুড়ি বিল, চিলুয়া-চাতল বিলসহ বেশিরভাগ হাওর-বিলে মাছের অভাবে উপজেলার জেলে পরিবারগুলোতে দুর্দিন নেমে এসেছে। আয়-রোজগার কমে যাওয়ায় পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে জীবন চলছে জেলেদের। যাঁরা এনজিও থেকে ঋণ নিয়েছিলেন, তাঁদের সময়মতো কিস্তি পরিশোধ করতে পারছেন না। অনেকেই পেশা বদল করে অন্যত্র চলে গেছেন।
কুশিয়ারা নদীর জেলে সুনু মিয়া বলেন, ‘সারাদিন জাল বাইয়া বড় মাছ পাই না। যা পাই, সব ছোট মাছ। মাছ ধরে পরিবার পরিজন নিয়ে সংসার চালানো দায় হয়ে পড়েছে।’ উপজেলার ফেঞ্চুগঞ্জ, মাইজগাঁও, সারকারখানা, পালবাড়ী, কটালপুর ও মানিকগঞ্জ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এসব বাজারে বাইরে থেকে আমদানি করা মাছ দিয়েই স্থানীয় চাহিদা পূরণ হচ্ছে। আড়তদারদের হাত ঘুরে খুচরা বিক্রেতারা বাইরে থেকে আসা মাছ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করছেন। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, সরকারিভাবে ফেঞ্চুগঞ্জে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৮ হাজার ১৬০ জন। উপজেলায় ১ হাজার ৩টি পুকুর, ১৮টি জলমহাল এবং জেলে নৌকা রয়েছে ১ হাজার ২২০টি। ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ফারহানা বিনতে রশীদ বলেন, হাওর-বিলে এভাবে কারেন্ট জাল, কাপড়ি জাল দিয়ে অবাধে মাছ ধরায় মাছের পোনা ধ্বংস হচ্ছে। ফলে জেলেরা আশানুরূপ মাছ পাচ্ছেন না। এ বছর হাওর-বিলে মাছের পোনা অবমুক্ত করার কোনো বাজেট এখনও পাওয়া যায়নি। বাজেট পেলে মাছের পোনা অবমুক্ত করা হবে।