কাজিরবাজার ডেস্ক :
কয়েক দফা বেড়ে বর্তমানে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে বিক্রি হচ্ছে সোনা। এ পরিস্থিতিতে আরও এক দফা বাড়তে যাচ্ছে সোনার দাম। আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় বাজারে তেজাবী সোনার (পাকা সোনা) দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে এই দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস)।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, দেশের বাজারে সর্বশেষ দাম বাড়ার পর এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম ৪০ ডলারের ওপরে বেড়েছে। তাছাড়া স্থানীয় বাজারেও তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে। এ কারণে দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
দেশের বাজারে নতুন করে ভরিতে সোনার দাম কতো বাড়বে, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি। শনিবার (৭ জানুয়ারি) এই কমিটি সোনার দাম নির্ধারণ করা নিয়ে বৈঠকে বসবে। ওই বৈঠকের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সোনার দাম কী পরিমাণ বাড়ানো হবে। তারপর বাজুস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে সোনার দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
সর্বশেষ গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর দেশের বাজারে সোনার দাম বাড়ানো হয়। তার আগে ৪ ডিসেম্বর এবং ১৮ ও ১৩ নভেম্বর সোনার দাম বাড়ায় বাজুস। এভাবে দফায় দফায় দাম বাড়ানোর কারণে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ দামে ওঠে মূল্যবান এ ধাতু।
গত ৩০ ডিসেম্বর সব থেকে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেট প্রতি ভরি (১১ দশমিক ৬৬৪ গ্রাম) সোনার দাম এক হাজার ১৬৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৮ হাজার ৪১৩ টাকা করা হয়। দেশের ইতিহাসে এর আগে কখনো এক ভরি সোনার দাম ৮৮ হাজার টাকা হয়নি।
ভালো মানের সোনার পাশাপাশি বাড়ানো হয় সব ধনের সোনার দাম। ২১ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম এক হাজার ১০৮ টাকা বাড়িয়ে ৮৪ হাজার ৩৮৯ টাকা করা হয়। এছাড়া ১৮ ক্যারেটের প্রতি ভরি সোনার দাম ৯৩৩ টাকা বাড়িয়ে ৭২ হাজার ৩১৭ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির সোনার দাম ভরিতে ৮১৭ টাকা বাড়িয়ে ৬০ হাজার ৩০৩ টাকা নির্ধারণ করে বাজুস। বর্তমানে এ দামেই বিক্রি হচ্ছে সোনা।
দেশের বাজারে দাম বড়ানোর পর গত এক সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্রতি আউন্স সোনার দাম বেড়েছে ৪১ দশমিক ৪১ ডলার। এতে এক আউন্স সোনার দাম বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৮৬৫ দশমিক ৭৯ ডলার। গত বছরের ১০ জুনের পর বিশ্ববাজারে সোনার এতো দাম আর হয়নি। গত সপ্তাহে সোনার যে পরিমাণ দাম বেড়েছে তার মধ্যে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবার বেড়েছে ৩২ দশমিক ৬০ ডলার বা এক দশমিক ৭৮ শতাংশ।
সোনার পাশাপাশি গত সপ্তাহে বিশ্ববাজারে প্লাটিনামের দামও বেড়েছে। তবে রুপার দাম কিছুটা কমেছে। গত এক সপ্তাহে রুপার দাম শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স ২৩ দশমিক ৮৩ ডলারে দাঁড়িয়েছে। আর প্লাটিনামের দাম এক দশমিক ৯২ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৯০ দশমিক শূন্য ৬ ডলারে দাঁড়িয়েছে।
যোগাযোগ করা হলে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান এম এ হান্নান আজাদ বলেন, বিশ্ববাজারে সোনার দাম বাড়ার বিষয়টি আমরা দেখেছি। এছাড়া স্থানীয় বাজারেও তেজাবী সোনার দাম বেড়েছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে দেশের বাজারেও সোনার দাম বাড়ানো হবে।
তিনি বলেন, আজ মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির বৈঠক আছে। সোনার দাম কী পরিমাণ বাড়ানো হবে, আমরা এই বৈঠকের মাধ্যমে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো। বিশ্ববাজারের দাম এবং স্থানীয় বাজারের দাম বিবেচনায় নিয়েই আমরা একটি যুক্তিসংগত দাম নির্ধারণ করবো। এ বিষয়ে কমিটির সদস্যদের পাশাপাশি সমিতির সিনিয়র সদস্যদের পরামর্শ নেওয়া হবে।