সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, সিলেটের ইতিহাস-ঐতিহ্য অনেক সমৃদ্ধ। এর পেছনে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের অশেষ অবদান রয়েছে। আমি নিজেও ব্যক্তিগতভাবে এ সংসদ থেকে উপকৃত ও অনুপ্রাণিত হয়েছি। সংসদ থেকে উৎসাহ পেয়েই নগরীর শিক্ষাসহ সামগ্রিক উন্নয়নে কাজ করছি। এ লক্ষ্যে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে একটি পাঠাগার স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি প্রতিটি কাউন্সিলর অফিসে জনগণের জন্য স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ব্যবস্থা থাকবে। শুধু তাই নয়, সিলেটের কবি-সাহিত্যিকদের বসার জন্য ‘কবিদের আড্ডা’ নামক একটি স্থান নির্মাণ করা হবে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে বইমুখী করার জন্য অভিভাবকদেরকে ভ‚মিকা রাখতে হবে।
কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ, সিলেট-এর উদ্যোগে ষোড়শ কেমুসাস বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কেমুসাসের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরীর সভাপতিত্বে গত মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহিদ সুলেমান হলে লেখক-পাঠকদের উপস্থিতিতে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে ভাষাসৈনিক মুসলিম চৌধুরীকে নিবেদিত কেমুসাস বইমেলার সমাপনী ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।
কেমুসাসের কার্যকরী কমিটির সহ সভাপতি ও বইমেলা বাস্তবায়ন উপকমিটির আহবায়ক অধ্যাপক দেওয়ান মাহমুদ রাজা চৌধুরীর শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন ভাষাসৈনিক ও কেমুসাসের সাবেক সভাপতি মরহুম জনাব মুসলিম চৌধুরীর সুযোগ্য ছেলে লেখক-গবেষক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব (অব.) চৌধুরী মুফাদ আহমদ এবং সম্মানিত অতিথির বক্তব্য রাখেন কেমুসাসের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম. করিম চৌধুরী এবং বর্তমান সাধারণ সম্পাদক লেখক, গবেষক আবদুল হামিদ মানিক।
মুখ্য আলোচকের বক্তব্যে লেখক-গবেষক ও সাবেক অতিরিক্ত সচিব (অব.) চৌধুরী মুফাদ আহমদ বলেন, কেমুসাস আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং গৌরবের ধন। এ কেমুসাস আমাকে ছোটবেলায় বই পড়তে দারুণভাবে উৎসাহিত করেছে। এর কারণে ছোটবেলা থেকেই বইপড়ার প্রতি আলাদা আগ্রহ জন্মে। শিশুদেরকে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তি থেকে দূরে রাখার জন্য তাদেরকে বই পাঠে উৎসাহিত করতে হবে। কেমুসাসের এমন আয়োজন সবাইকে বইপাঠে অনুপ্রাণিত করবে।
কেমুসাসের প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম করিম চৌধুরী বলেন, ভবিষ্যত প্রজন্মকে স্বাধীনতা ও বিজয়ের ইতিহাস জানাতে হবে। এর জন্য শিশুদেরকে বই পাঠের প্রতি আকৃষ্ট করতে হবে। এর জন্য অভিভাবকদেরকেও সচেতন ভ‚মিকা রাখতে হবে।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে কেমুসাসের সাধারণ সম্পাদক লেখক, গবেষক আবদুল হামিদ মানিক বলেন, শিশুদের সৃজনশীল চেতনার বিকাশ সাধনের জন্য কেমুসাস বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এর মাধ্যমে শিশুদেরকে বই পাঠের প্রতি আকৃষ্ট করার প্রয়াস চলছে। শিশুরা যদি বই পাঠে এগিয়ে আসে, তবে তারা জাতিকে অনেক কিছু দিতে পারবে।
সভাপতির বক্তব্যে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, কুরআনের প্রথম শব্দ ‘ইকরা’ অর্থাৎ পড়ো। বেদসহ অনেক ধর্মগ্রন্থে জ্ঞানার্জনের জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। কেমুসাস বইমেলা একটি বড় উৎসব হিসেবে জ্ঞান-বিজ্ঞানে এগিয়ে নিতে সবাইকে উৎসাহিত করবে। এছাড়া শিশুরাও এই বইমেলা থেকে বই পাঠে মনোযোগী হবে।
কেমুসাসের সহ পাঠাগার সম্পাদক ইসমত হানিফা চৌধুরী ও বইমেলা বাস্তবায়ন উপকমিটির সদস্য সচিব মাহবুব মুহম্মদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কেমুসাসের সহ সভাপতি অধ্যক্ষ সৈয়দ মুহাদ্দিস আহমদ, সহ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মবনু, কেমুসাস মতিন উদদীন আহমদ জাদুঘরের পরিচালক ডা. মোস্তফা শাহজামান চৌধুরী বাহার, আল ইসলাহ সম্পাদক সাংবাদিক-গল্পকার সেলিম আউয়াল, কোষাধ্যক্ষ এডভোকেট আব্দুস সাদেক লিপন, সাহিত্য ও গবেষণা সম্পাদক আহমদ মাহবুব ফেরদৌস, কার্যকরী কমিটির সদস্য এডভোকেট আব্দুল মুকিত অপি, সৈয়দ মৈাহাম্মদ তাহের প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন কেমুসাসের জীবন সদস্য ক্বারী আবদুল কাদির জীবন ও জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী মাসুম বিল্লাহ। অনুষ্ঠানের শেষে কেমুসাস বইমেলায় আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার তুলে দেন প্রধান অতিথি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীসহ অতিথিবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি