শুধু মানুষ গড়ার কারিগর নয়, তাঁরা গড়ে দেন কারও স্বপ্ন, কারও ঘর

23
শাবি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বন্যার্ত ১০ পরিবারকে নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে ঘর।

শাদমান শাবাব শাবি থেকে :
মানুষের প্রতি মানুষের রয়েছে কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতা। এই দায়বদ্ধতা থেকে যুগ যুগ ধরে সময়ে–অসময়ে কিংবা যে কোনো প্রয়োজনে মানুষই মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে আস্থার প্রতীক হয়ে। মানুষের প্রয়োজনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়ে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষকরাও যেন গাইছেন সেই মানবতারই জয়গান। শুধু পাঠদানে সীমাবদ্ধ না থেকে সংকটকালীন সময়ে মানুষ গড়ার এই কারিগররা অব্যাহত রাখেন তাঁদের মানবিক কার্যক্রম।
এ বছর স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় যখন বিপর্যস্ত সিলেট ও সুনামগঞ্জের মানুষের জনজীবন, তখন দেশের অন্যান্য মানুষের মতো ত্রাণ সহায়তা হিসেবে শুকনো ও রান্না করা খাবার, বই-খাতা বিতরণসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পৌঁছে দিয়ে এসব বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছিল শাবি শিক্ষক সমিতি। এছাড়া বন্যা পরবর্তী সময়ে পুনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নিজেদের একদিনের বেতনের অর্থ দিয়ে বন্যায় নষ্ট হয়ে যাওয়া দুস্থ ১০ পরিবারের ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেন শাবির শিক্ষকরা৷
শুক্রবার (১১ নভেম্বর) নির্মাণ কাজ শেষে সর্বশেষ ঘরটি হস্তান্তরের মাধ্যমে শাবি শিক্ষক সমিতির এই পুনর্বাসন কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘটে। শাবি শিক্ষক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ড. আহসান হাবীব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷ তিনি বলেন, শাবি শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি পরিবারকে ঘর উপহার দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। গত শুক্রবার সর্বশেষ ঘরটি হস্তান্তরের মাধ্যমে আমাদের এই কার্যক্রম সমাপ্ত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, কোম্পানিগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৮টি, গোয়াইনঘাট উপজেলায় ১টি এবং সিলেট সদরের ১টি দুস্থ পরিবারকে এই ঘরগুলো উপহার দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ভয়াবহ বন্যা হলেও যেন ঘরগুলোর অবয়ব ঠিক থাকে, সেদিকে গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি ঘরের কাঠামো ডিজাইন করা হয়েছে। উপহারের ঘরগুলোর কাঠামো ডিজাইন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ।
এ বিষয়ে শাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকরা মনে করেছেন এই অঞ্চলে আমাদের কিছু সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে। ভয়াবহ এক বন্যা হয়ে গেছে। মানুষের দুর্ভোগ দেখে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকরা মনে করেছি কোন না কোনভাবে আমাদের মানবিক সাহায্য করা দরকার। এজন্য আমাদের শিক্ষকরা স্বেচ্ছায় এই কাজে সহযোগিতা করেছেন। পুনর্বাসন কার্যক্রমের অংশ হিসেবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কিছু দুস্থ পরিবারকে আমরা নির্ভরযোগ্য এবং টেকসই ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার উদ্যোগ নেই। আমরা সন্তুষ্ট, আমরা এই কাজটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি।