কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের কানাইঘাট দীঘিরপার ইউনিয়নের সাতবাঁক ঈদগাহ হাফিজিয়া মাদরাসার সামনে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় সিলেট এম.সি কলেজের মেধাবী শিক্ষার্থী রেদওয়ান মাহমুদ চৌধুরী (২৭) নিহত এবং ৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন।
এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে। দুর্ঘটনার পর কানাইঘাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নিহত রেদওয়ান আহমদ চৌধুরীর লাশ ও মুখোমুখি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত সিএনজি (অটোরিক্সা) ও ফুলকলির কোম্পানীর মালামাল বহনকারী টেম্পু উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য থানায় রাখা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও থানাপুলিশ সূত্রে জানা যায়, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী তার মা পান্না বেগমকে নিয়ে সিলেট শহর থেকে অটোরিক্সা (সিএনজি) যোগে তার নিজ বাড়ি জকিগঞ্জ উপজেলার খলাদাপনিয়া গ্রামে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে কানাইঘাটের সাতবাঁক ঈদগাহ হাফিজিয়া মাদ্রাসার সামনে আসামাত্র বিপরীত দিক থেকে আসা ফুলকলি কোম্পানীর মালামাল বহনকারী টেম্পুর সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটলে ঘটনাস্থলেই রক্তাক্ত অবস্থায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এমসি কলেজের অর্থনীতি ৩য় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী।
এ সময় নিহতের মা পান্না বেগম সহ সিএনজি ও টেম্পুতে থাকা কানাইঘাট লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের দনা খাসিয়াপুঞ্জিতে বসবাসরত কমপাটের স্ত্রী মিরিয়াম (৬২) ও তার ছেলে মাহ ইউ রিমেন (২৮), জকিগঞ্জ উপজেলার দরগাবাহার এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের পুত্র টেম্পু চালক সেলিম আহমদ (৩৫), চৌধুরী বাজার জামুরা গ্রামের বশির আলীর পুত্র শাহিন আহমদ (২৬) গুরুতর হন। তাদের মধ্যে আদিবাসী মাহ ইউ রিমেন এর বাম হাতের কজি¦ পর্যন্ত বিচ্ছিহ্ন হয়ে গেছে, তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানা গেছে। দুর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
জানা যায়, মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় নিহত রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী জকিগঞ্জ অনলাইন টিভির উপস্থাপক ছিলেন। পাশাপাশি লেখালেখির সাথে সে জড়িত ছিল। তার পিতার নাম মাওলানা আহমদ আল কবির। বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ছিলেন তিনি।
নিহতের চাচাতো ভাই জয়নাল আবেদীন চৌধুরী জানান, দাদীর কুলখানীতে যোগদানের উদ্দেশ্যে সিলেট শহরের বসবাসরত রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী তার মাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। পথিমধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় তার মৃত্যুতে আত্মীয়-স্বজন সহ এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
এ ব্যাপারে কানাইঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ তাজুল ইসলাম পিপিএম’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, একটি অটোরিক্সা (সিএনজি) ও টেম্পুর মুখোমুখি সংঘর্ষে রেদওয়ান আহমদ চৌধুরী ঘটনাস্থলে মারা যান এবং ৫ জন আহত হন। ঘটনার পরপরই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য থানায় রাখা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে তিনি জানান।
স্থানীয়রা জানান, সিলেট-জকিগঞ্জ সড়কের কানাইঘাট দিঘীরপাড় ইউনিয়নের সাতবাঁক ঈদগাহ হাফিজিয়া মাদ্রাসার সামনে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। বছরে অনেকে এই জায়গায় দুর্ঘটনায় মারা যান এবং আহত হন অনেকে। এই দুর্ঘটনা কবলিত স্থানকে বিপদজনক মোড় হিসেবে চিহ্নিত সহ দুর্ঘটনা এড়াতে স্পীড বেকার স্থাপন ও সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড দেয়ার জন্য সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন এলাকাবাসী।