ভিটামিন ‘এ’র অভাবে শিশুদের মধ্যে রাতকানা রোগ, এমনকি অন্ধত্ব দেখা দিতে পারে। শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যায়। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে, বাংলাদেশে বছরে প্রায় ৪০ হাজার শিশু এমন অন্ধত্বের শিকার হয়, যা একটু সচেতন হলেই প্রতিরোধ করা যেত। এমন অবস্থা থেকে রক্ষা করতে বছরে দুইবার বিনা মূল্যে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়।
তার পরও অবস্থার খুব একটা পরিবর্তন দেখা যায় না। দ্বিতীয় জাতীয় অনুপুষ্টিকণা জরিপে উঠে এসেছে, দেশে ছয় মাস থেকে চার বছর ১১ মাস বয়সী প্রতি দুটি শিশুর মধ্যে একটি শিশুর ভিটামিন ‘এ’ ঘাটতি রয়েছে। এ ছাড়া প্রতি ১৩ জনের মধ্যে একজন নারীরও ভিটামিন ‘এ’র ঘাটতি রয়েছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ বা আইসিডিডিআরবি পরিচালিত এই জরিপের ফলাফল গত রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয়।
আইসিডিডিআরবির গবেষণাটি আমাদের কিছু ভয়ংকর সত্যের মুখোমুখি করেছে। নারী ও শিশুদের মধ্যে অনুপুষ্টিকণার যে ঘাটতি দেখা যাচ্ছে, তা কোনোভাবেই আমাদের একটি সুস্থ-সবল জাতি হিসেবে গড়ে ওঠার ইঙ্গিতবাহী নয়। নারী ও শিশুদের পুষ্টির ঘাটতি মোকাবেলায় নতুন করে জাতীয় কর্মকৌশল প্রণয়ন করা জরুরি হয়ে উঠেছে। পুষ্টি নিরাপত্তাহীনতার বিরুদ্ধে লড়াইকে আরো জোরদার করতে বিদ্যমান কর্মসূচিগুলোও ঢেলে সাজাতে হবে। অতীতে আমদানি করা ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলের মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। তেমনটি যেন আর না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি এ ব্যাপারে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বৃহত্তর কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।