কাজিরবাজার ডেস্ক :
পরিবহন, জ্বালানি, ডাক ও টেলিযোগাযোগসহ অত্যাবশ্যকীয় বেশ কিছু জরুরি সেবা খাতের বেআইনিভাবে ধর্মঘট ডাকলে বা সমর্থন দিলে জেল-জরিমানার বিধান রেখে একটি আইনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
আইনটি কার্যকর হলে জনজীবনে দুর্ভোগ সৃষ্টি হয় এমন কোনো ক্ষেত্রে ইচ্ছা করলেই আর ধর্মঘট বা হরতাল ডাকা যাবে না। আইনের অমান্য হলে সর্বোচ্চ এক বছরের কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে অত্যাবশ্যক পরিষেবা আইন-২০২২ চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয় বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল জানিয়েছেন।
এর আগে ২০২১ সালের ৪ অক্টোবর আইনটির খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা। চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়ায় এটি এখন পাসের জন্য সংসদে উঠবে। সংসদে পাসের পর গেজেট জারি করবে সরকার।
মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘কেউ যদি বেআইনিভাবে ধর্মঘট ডাকে সাধারণভাবে ৬ মাসের কারাদণ্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা হবে। আবার কেউ যদি বেআইনি ধর্মঘটে সমর্থন দেয় তাহলে এক বছরের কারাদণ্ড ও কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা।’
অত্যাবশ্যকীয় সেবা খাতের বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘স্থল, জল, রেল ও আকাশপথের যাত্রী বা পণ্য সেবাও অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা বলে পরিচিত হবে। স্থল, সমুদ্র, নদী বা বিমানবন্দরের পণ্য খালাস, সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালনায় কোনো প্রতিষ্ঠান বা এ সংক্রান্ত পরিষেবাও অত্যাবশ্যকীয়।’
‘এছাড়া সরকার কোনো সেবাকে অত্যাবশ্যকীয় মনে করলে তা ঘোষণা করতে পারবে। কোনো কারণে বাস বা ট্রাক চলাচলে কেউ হরতাল করলে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারবে। আইন অমান্য করলে শাস্তির বিধান আছে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের মালিক যদি বেআইনি লেআউট চালু করে সেক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬ মাস জেল ও অনূর্ধ্ব এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ড দেওয়া যাবে। কেউ প্ররোচনা দিলে তাহলে মূল অপরাধের শাস্তিই পাবে।’
‘এছাড়া সরকারি কোনো অফিস হলে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া যাবে। যেমন কোনো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের এমডি যদি লেঅফ ঘোষণা করেন তাহলে এর বাইরেও বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আইনটিতে ১৪টি ধারা আছে উল্লেখ করে মন্ত্রিপরিষদ সচিব কয়েকটি ধারার বিষয় সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরে বলেন, ‘আইনের ৪ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে-সরকার কোন বিষয়গুলোকে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা করবে।’
‘৫ নম্বর ধারায় কিছু চাকরিতে কর্মরতদের নির্দিষ্ট এলাকা ত্যাগ না করার ক্ষমতা, আরেক ধারায় বলা হয়েছে ধর্মঘট, লকডাউন বা লেঅফ নিষিদ্ধ করার কথা বলা হয়েছে।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘অনেক সময় শিল্প প্রতিষ্ঠানে লেঅফ বা নক আউট করা হয়। সরকার যদি মনে করে এগুলো জাস্টিফায়েড নয়, তাহলে এগুলো নিষিদ্ধ করতে পারবে।’