কাজিরবাজার ডেস্ক :
চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেস শেষে শি জিনপিংকে আবারও পার্টির মহাসচিব করা হয়েছে। এতে করে তৃতীয়বারের মতো দেশটির প্রেসিডেন্ট হলেন শি জিনপিং। আর টানা তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসায় আগের চেয়েও আরও শক্তিশালী হয়েছেন শি।
কমিউনিস্ট পার্টির সবচেয়ে শক্তিশালী সাত সদস্যের পলিটব্যুরো স্ট্যান্ডিং কমিটিতে নিজের আজ্ঞাবহ সদস্যদের নিয়ে এসেছেন শি। ফলে এখন নিজের ইচ্ছামতো যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন তিনি। পলিটব্যুারো স্ট্যান্ডিং কমিটিতে নিজের আজ্ঞাবহদের জায়গায় দিয়ে শুধুমাত্র যে শি আরও শক্তিশালী হয়েছেন তাই নয় তিনি চীনের ভবিষ্যৎ নিয়েও সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি।
সেন্টার ফর স্ট্রেটেজিক এন্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিসের পরিচালক বনি লিন বলেছেন, শি সম্ভবত বৈদশিক নীতির সব কিছুতে সিদ্ধান্ত নেবেন এবং কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন।
এক্ষেত্রে শি কি করার সিদ্ধান্ত নেন- এবং কিভাবে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেন- সেটি বিশ্বে গভীর প্রভাব ফেলবে।
চীন ও পশ্চিমা
নিজের শেষ দুই মেয়াদে বৈশ্বিক সম্পর্ক যেমন দেখেছিলেন শি, এবার নিজের নতুন মেয়াদে সসম্পূর্ণ এক ভিন্ন পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে যাচ্ছেন তিনি। চীন ও পশ্চিমাদের মধ্যে থাকা সম্পর্ক ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও প্রযুক্তি যুদ্ধ, তাইওয়ান নিয়ে দ্বন্দ্ব, কোভিড-১৯, চীনের মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া রাশিয়ার সমালোচনা না করার কারণে সম্পর্ক অন্যরকম হয়ে গেছে।
কমিউনিস্ট পার্টির কংগ্রেসে উত্থাপন করা শি জিনপিংয়ের পরবর্তী পাঁচ বছরের পরিকল্পনায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ‘অত্যাধিক পরিবর্তন’ এ বিষয়টির ওপর আলোকপাত করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ব্ল্যাকমেইল করার অত্যাধিক চেষ্টা, আটকে রাখা, অবরোধ এবং চীনের ওপর অত্যাধিক চাপ প্রয়োগ করা- যুক্তরাষ্ট্রের কার্যক্রমের নিন্দা জানাতে এ শব্দগুলো ব্যবহার করে থাকেন চীনের কূটনীতিকরা।
নো লিমিটস: দ্য ইনসাইড স্টোরি অব চাইনা’স ওয়ার উইথ দ্য ওয়েস্ট বইয়ের লেখক অ্যান্ড্রু স্মল বলেছেন, এটি পরিস্কার শি দেখছেন আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সুযোগের বদলে চীন মুশকিলের যুগে প্রবেশ করছে।
তিনি আরও বলেছেন, শঙ্কা করা হচ্ছে পশ্চিমাদের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আরও খারাপ হবে। চীন এখন পশ্চিমাদের সঙ্গে প্রকাশ্যে আরও পদ্ধতিগত প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জড়িত হয়েছে- দৃঢ়তা, আদর্শগতভাবে শত্রুতাপূর্ণ অবস্থান, পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে নিজেদের পাল্টা জোট গঠনের চেষ্টা এবং উন্নয়নশীল বিশ্বে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেছেন, এ চাপ রাশিয়ার সঙ্গে চীনের সম্পর্কেও প্রভাব পরবে। ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়া নিজেদের নিরপেক্ষ দেখানোর চেষ্টা করছে। রাশিয়ার সমালোচনা করার বদলে তারা পশ্চিমাদের দোষারোপ করার যে নীতি গ্রহণ করেছে সেটি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা নেই।