যে কারণে যুক্তরাষ্ট্র-সৌদি আরবের সম্পর্ক এখনো অবিচ্ছেদ্য

27

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সৌদি আরবে খুব সহজেই বিবাহ বিচ্ছেদ সম্ভব। যদি কেউ তার বউকে তিন তালাক বলে তাহলেই সেখানে বিয়ে ভেঙে যায়। কিন্তু কূটনৈতিক সম্পর্ক শেষ করা এত সহজ নয়। চলতি বছরের অক্টোবরে দৈনিক ২০ লাখ ব্যারেল তেল কম উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেয় ওপেক প্লাস। এরপরই হোয়াইট হাউজ ও সৌদি রাজ পরিবারের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হয়। ডেমোক্রেটদের তীব্র প্রতিক্রিয়ায় মনে হয়েছে দীর্ঘদিনের সহযোগীকে তারা পরিত্যাগ করতে চায়। যুক্তরাষ্ট্রের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ উপসাগরীয় দেশগুলো।
প্রত্যেক সম্পর্কে খারাপ সময় থাকে বা ঝগড়া হয়। যদিও সম্পূর্ণভাবে ইতিবাচক হওয়া সম্ভব নয়, তবে আশা করা হচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্র ও উপসাগরীয় দেশগুলো সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে রাজি হবে। জ্বালানি তেলের নিরাপত্তা ইস্যুতে যে টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে, তা কিসেরভিত্তিতে প্রতিস্থাপন হবে কেউ জানে না। অনেক অসুখী দম্পতিকেও সংসার চালিয়ে যেতে দেখা যায়।
সৌদি আরবের দাবি অনুযায়ী, ওপেকের তেলের দাম কামানোর সিদ্ধান্ত ছিল কৌশলগত। তবে এরপরেই তেলের বাজারে বিশৃঙ্খলা শুরু হয়, দেখা যায় উত্থান-পতন। আসন্ন বৈশ্বিক মন্দার কারণে তেলের চাহিদা কমতে পারে। তাই সৌদি আরবের দাবি, যৌক্তিক করণেই তেলের উৎপাদন কমানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
তারপরও যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ওপেকের সিদ্ধান্তকে বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে। এর আগে সাংবাদিক জামাল খাসোগির হত্যাকা- ইস্যুতে সুর চড়া করলেও সম্প্রতি সেখান থেকে অবস্থান নরম করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সৌদির প্রিন্স মোহাম্মাদ বিন সালমানের সঙ্গে দেখাও করেছেন বাইডেন। যদিও এর তিন মাসের মধ্যেই সৌদি আরব যে সিদ্ধান্ত নিলো তাতে তেলের দামের ওপরে প্রভাব পড়ছে। এমন পরিস্থিতিতে চলমান যুদ্ধে রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে সৌদির বিরুদ্ধে। এ জন্য সৌদিকে পরিণতি ভোগ করতে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বাইডেন।
এদিকে অনেক ডেমোক্রেটরা মনে করছেন, আসন্ন মধ্যবর্তী নির্বাচনে রিপাবলিকানদের সহায়তা করতে চায় সৌদি আরব। কারণ দাম বেড়ে গেলে অসুবিধায় পড়বে বাইডেন প্রশাসন।
তবে বিভিন্ন কারণে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হলেও সৌদি আরবের কাছে ভালো বিকল্প নেই। রাশিয়া একদিকে যেমন দেশটিকে নিরাপত্তা দিতে পারবে না তেমনি প্রয়োজনীয় অস্ত্রও সরবরাহ করতে পারবে না। এরই মধ্যে রাশিয়ার সেনারা ইউক্রেনে বেকায়দায় পড়েছে। যদিও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে প্রস্তাব দিয়েছে দেশটি। অন্যদিকে সৌদি আরবের একটি কার্যকর অংশীদার হচ্ছে চীন। তবে বাণিজ্যিক সম্পর্ক যাইহোক উপসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তার দায়িত্ব রাশিয়ার মতো চীনও নেবে না। তাছাড়া উপসাগরীয় দেশের শত্রু ইরানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বজায় রাখছে তারা।