শিপন আহমদ ওসমানীনগর থেকে :
সিলেটের ওসমানীনগরে নিখোঁজের ১ সপ্তাহ পর মাদ্রাসা ছাত্র আমিরুল ইসলাম (১৬) কে উদ্ধার করেছে ওসমানীনগর থানা পুলিশ। শনিবার রাতে রশিদপুর এলাকা থেকে আমিরুলকে উদ্ধার করা হয়। গত ৯ অক্টোবর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার বেগমপুর বাজারস্থ ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাসস্ট্যান্ড থেকে আমিরুলকে আপহরণ করে নিয়ে যায় একটি চক্র। খবর পেয়ে ঘটনার সাথে যুক্ত এক অপহরণকারীকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার গভীর রাতে হবিগঞ্জ জেলার চুনারুঘাট নতুন ব্রীজ এলাকা থেকে অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত পুত্র নজরুল ইসলাম মেনু মিয়া কিশোরগঞ্জ জেলার আহুতিয়া গ্রামের মৃত সামছুদ্দিন মিয়ার পুত্র। এ সময় অপহরনকারীর কাছ থেকে আরেকজন মাদ্রাসা ছাত্রকেও উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার হওয়া মাদ্রাসা ছাত্র শহিদুল ইসলাম (১৫)। সে হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচং থানার রেজন আলীর পুত্র। উদ্ধার হওয়া শহিদুলকে তার পিতার জিম্মায় প্রদান করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানিয়েছে থানা পুলিশ। এছাড়া গ্রেফতার নজরুল ইসলাম মেনু মিয়াকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রবিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ৯ অক্টোবর উপজেলার কিয়ামপুর গ্রামের খাইরুল ইসলামের পুত্র এবং উমরপুর টাইটেল মাদ্রাসার ছাত্র আমিরুল ইসলাম মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হলে আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। এই ঘটনায় গত বুধবার (১২ অক্টোবর) ওসমানীনগর থানায় সাধারণ ডায়রী করেন তার পিতা খাইরুল ইসলাম। ডায়েরী নং ৬২৯। ঘটনার পর থেকে আমিরুলের পরিবারের দাবি তাকে অপহরণ করা হয়েছে। একাধিক মোবাইল ফোন যোগে নিখোঁজের পরিবারকে অপহরণের কথা বলে নানা ভাবে অর্থ দাবি করছে একটি চক্র। আমিরুলকে ফিরে পেতে সিলেট লাল বাজার যাওয়ার কথা বলে বড় অংকের অর্থ দাবি করে চক্রটি। তাদের কথা মতো আমিরুলের পরিবার প্রস্তুুতি নিলেও বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। বিষয়টি ওসমানীনগর থানা পুলিশকে জানালে পুলিশ অধিকতর তদন্তের মাধ্যমে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। গোপন সংবাদের মাধ্যমে শনিবার রাত ৯টার দিকে রশিদপুর এলাকার ফুলকলি শো-রুমের সামন থেকে আমিরুলকে উদ্ধার করা হয়।
আমিরুল ইসলামের বরাতে পুলিশ জানায়, নজরুল ইসলাম মেনু মিয়াসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩জন আসামী অপহরণকারী তাকে অপহরণ করে তার পরিবারের নিকট মুক্তিপন দাবী করে। পরে তাকে সিলেটের লাল বাজারস্থ ফুলমতি আবাসিক হোটেলে আটকে রেখে নির্যাতান করা হয়। এক পর্যায়ে আমিরুলকে হোটেলে তালাবদ্ধ রেখে চলে যান অপহরণকারীরা। আমিরুলের চিৎকার শুনে হোটেলের ম্যানেজার তালা খুলে তাকে বের করে দেন।
আমিরুল ইসলামকে উদ্ধারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ অপহরনের বিষয়টি জানতে পেরে অভিযান পরিচালনা করে অপহরণকারীকে গ্রেফতার করে। এই ঘটনায় ওসামনীনগর থানার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-০৯, তারিখ- ১৬/১০/২০২২।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ওসমানীনগর থানার এস আই রফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার সাথে আর কারা জরিত সেই বিষয় তদন্ত করা হচ্ছে। অপহরণের সাথে যুক্ত থাকায় আমরা একজনকে গ্রেফতর করে আদালতে প্রেরণ করেছি। গ্রেফতারের সময় আরো একজন মাদ্রাসা ছাত্রকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে এবং তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হয়েছে।