দুর্গাপূজার আজ মহাসপ্তমী

19

স্টাফ রিপোর্টার :
শ্রী শ্রী শারদীয়া দুর্গাপূজার আজ রবিবার ২ অক্টোবর মহাসপ্তমী। দেবীর মহাসপ্তমী বিহিত পূজা শুরু ভোর ৫ টা ৩০ মিনিট। এদিন সূর্যোদয় ৫ টা ৩২ মিনিটে, সপ্তমীর সময়সীমা রাত ৬ টা ২৩ মিনিটে। পূর্বাহ্ মধ্যে দ্ব্যাত্মক-চরলগ্নে ও চরণবাংশে। দেবীর নবপত্রিকা প্রবেশ, স্থাপন ও সপ্তম্যাদিকল্পারম্ভ ও সপ্তমীবিহিতপূজা প্রশস্তা। রাত্রি ১১। ৩ গতে ১১। ৫১ মধ্যে দেবীর অর্ধরাত্রবিহিত পূজা।
পুরোহিতের মতে, শরতকালে স্বর্গের দেবতাগণ ঘুমিয়ে থাকেন। তাই দেবীকে ঘুম থেকে তোলার জন্য আহ্বান করতে হয়। দেবী এই সময় কুমারী রূপে বেল গাছের পাতায় অবস্থান করেন। তাই ষষ্ঠীর দিন বেল গাছের তলায় দেবীর বোধন ও অধিবাস সম্পন্ন হয়। বেল গাছের একটি ডালকে চিহ্নিত করে রাখা হয় এদিন। তারপর সপ্তমীর দিন ওই চিহ্নিত ডাল কেটে মণ্ডপে পূজার স্থানে নিয়ে আসতে হয়।
সূত্রে আরো জানা গেছে, মহাসপ্তমীর সকালে সর্বপ্রথম কলাবউ স্নান করানো হয়। কলাবউ বাংলার দুর্গাপূজার একটি বিশিষ্ট অঙ্গ। সপ্তমীর সকালে নদী বা জলাশয়ে নিয়ে যাওয়া হয় নবপত্রিকাকে মহাস্নান করাতে৷তখনই শাস্ত্রবিধি মেনে স্নান করিয়ে নতুন শাড়ি পরানো হয় নবপত্রিকাকে ৷ ৯টি উদ্ভিদ দিয়ে নবপত্রিকা গঠন করা হয়। এই ৯টি উদ্ভিদ মা দুর্গার ৯টি শক্তির প্রতীক। এই ৯টি উদ্ভিদ হল কদলী বা রম্ভা (কলাগাছ), কচু, হরিদ্রা (হলুদ), জয়ন্তী, বিল্ব (বেল), দাড়িম্ব (ডালিম), অশোক, মান ও ধান। নবপত্রিকাকে স্নান করিয়ে ফিরিয়ে আনা হয় বাড়ির পূজার দালান অথবা বারোয়ারি পূজামণ্ডপে ৷ সেখানে প্রবেশের পরই দুর্গাপূজার মূল প্রথাগত অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। নবপত্রিকা প্রবেশের পরই দর্পণে দেবীকে মহাস্নান করানো হয়। তারপর মন্ত্রোচ্চারণের মাধ্যমে চক্ষুদানের মধ্য দিয়ে ত্রিনয়নী দেবী দুর্গার প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়। ধূপ-ধুনো, বেল-তুলসী, আসন, বস্ত্র, নৈবেদ্য, পুষ্পমাল্য, চন্দনসহ ১৬টি উপাচার দিয়ে দেবী দুর্গাকে পূজা করা হয়। হিন্দু ক্যালেন্ডার অনুযায়ী আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের সপ্তমী তিথিতে পালিত হয় মহাসপ্তমী।
সিলেটে এবার ৬০৬টি মন্ডপে দুর্গাপূজা স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এর মধ্যে সার্বজনীন ৫৫৭টি ও পারিবারিক ৪৯টি পূজার আয়োজন করা হয়েছে। আর প্রতিটি পূজা মন্ডপ কমিটির সেচ্ছাসেবকের পাশাপাশি প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্ডপে মন্ডপে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
জগতের মঙ্গল কামনায় দেবী দুর্গা এবার গজে (হাতী) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যালোকে (পৃথিবী) আসেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ঝড় বৃষ্টি হবে এবং শস্য এবং ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে কৈলাশে (স্বর্গে) বিদায় নেবেন নৌকায় চড়ে। যার ফলে জগতের কল্যাণ সাধিত হবে। ৫ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে ৫ দিনব্যাপী এ দুর্গোৎসবের।