শাবি থেকে সংবাদদাতা :
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) শিক্ষার্থীরা৷ একই সঙ্গে চবিতে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় জড়িত প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে মানববন্ধন করেছেন শাবি শিক্ষার্থীরা।
রবিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে শাবিপ্রবির সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে এই মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়৷ এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন৷ মানববন্ধনে বক্তারা চবিতে ছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি এবং ক্যাম্পাসসহ সারাদেশে নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
মানববন্ধনে শাবির পদার্থ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী সামিরা ফারজানা বলেন, যৌন নিপীড়নের শিকার হওয়ার পরেও মেয়েদেরকে যখন বলা হয় রাতে তোমরা বের হলে কেনো ? এরকম পোষাক পরেছো কেনো? এরকম প্রশ্ন করে ভুক্তভোগীদেরকে দমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আর এ রকম ঘটনা একটি দিক থেকেই ঘটছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্টরুম নির্যাতন, র্যাগের সংস্কৃতি একটি পক্ষ থেকেই হয়ে থাকে। আর এতে ক্ষমতাসীন ছাত্রসংগঠন জড়িত থাকে।
সামিরা আরও বলেন, বহিষ্কারই চূড়ান্ত সমাধান না। আমরা চাই দোষীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। যাতে ক্যাম্পাসে কিংবা দেশের যে কোনো জায়গায় নারীদেরকে কেউ যৌন নির্যাতনের সাহস করতে না পারে।
এ সময় গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী উমর ফারুক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন নির্যাতনের ঘটনা বলে আমরা বিষয়টি জানতে পেরেছি। কিন্তু এমন অনেক ঘটনা আছে যেগুলো ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। চবিতে যে ঘটনা ঘটেছে সেটিও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়েই যৌন নিপীড়ন সেল আছে। কিন্তু সেগুলোর কোনো কার্যকারিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেলেও অকার্যকর। বিগত সময়ে যেসব অভিযোগ দেওয়া হয়েছে সেগুলো তারা এখনও বাস্তবায়ন করতে পারেনি। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শাখা যেন কার্যকরী ভূমিকা রাখে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুলাই রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হতাশার মোড় থেকে বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় নিয়ে এক ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। পাঁচজন ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে বলেও অভিযোগ করা হয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রীদেরকে রাত ১০টার আগে আবাসিক হলে প্রবেশের নির্দেশ প্রদান করেন। প্রশাসনের এই নির্দেশের পর ছাত্রীরা তা প্রত্যাহার করে চার দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে।