স্টাফ রিপোর্টার :
তাপদাহ অব্যাহত থাকায় সিলেট অঞ্চলের জনজীবনে নেমে এসেছে বিপর্যস্ত। আকাশ থেকে যেন আগুন ঝরছে। তীব্র গরমের দাপটে ছেদ ঘটেছে ঈদ আনন্দেও। মানুষজন প্রাণভরে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারছেন না।
প্রতিবছর বর্ষা ও ঈদের এই মৌসুমে সিলেটের বিভিন্ন বিনোদন স্পট লোকে লোকারণ্য থাকলেও এবার সেই চিত্র নেই। ঈদের দিন থেকেই সিলেটে বইছে তাপদাহ। বাইরে বের হলেই মনে হচ্ছে অগ্নিকুণ্ড। বৃষ্টি নেই, বাতাস নেই। তার ওপর ঠিকমতো থাকছে না বিদ্যুৎও! রোদ, গরম আর লোডশেডিংয়ে হাঁপিয়ে উঠেছেন সিলেটের মানুষ।
ঈদের দিন সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর সোমবার ১১ জুলাই থেকে সিলেটে ক্রমশ তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে। সোমবার সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর মঙ্গলবার ১২ জুলাই তাপমাত্রা ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। আর বুধবারের তাপমাত্রাও ছিল ৩৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসের ওপরে। গতকাল বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা উর্ধ্বমূখী। এই তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সিলেট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার।
সিলেট আবহাওয়া কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ জানান, ঈদের আগে থেকে সিলেটে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এবার ঈদও কেটেছে বৃষ্টিহীন। বর্ষা মৌসুম শুরু হলেও বৃষ্টি নেই সিলেটে। তাই তাপপ্রবাহ দীর্ঘমেয়াদি রূপ নিয়েছে। মার্চ-এপ্রিলের তীব্র তাপপ্রবাহের পর থেকে সিলেটের ওপর দিয়ে কখনও মৃদু আবার কখনও মাঝারি তাপপ্রবাহ বইছে। ভারী বর্ষণ শুরু না হওয়া পর্যন্ত এই তাপপ্রবাহ প্রশমিত হওয়ার আপত কোনো সম্ভাবনা নেই।
এক প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়া কর্মকর্তা সাঈদ আহমদ বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয়েছে একটি লঘুচাপ। এটি আরও ঘনীভূত হচ্ছে। এর প্রভাবে সিলেটসহ প্রায় সারা দেশে বিরাজ করছে গুমোট আবহাওয়া। লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হতে পারে। তাই বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকায় রাজশাহীতে তীব্র গরম অনুভূত হচ্ছে। ৩৭/৩৭ ডিগ্রি তাপমাত্রা হলেও সেটি ৪০ ডিগ্রির ওপরে অনুভূত হচ্ছে।
এদিকে সপ্তাহের শেষে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, কাল শনিবার ১৬ জুলাই থেকে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা আছে, সেদিন নগরীসহ সিলেটের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিপাত হতে পারে বলেও জানান সিলেট আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের এই আবহাওয়া কর্মকর্তা।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ২৪ ঘণ্টার এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দেশের ৮ বিভাগে বৃষ্টিসহ দমকা ও ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ সময় বাতাসের গতি প্রতি ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৪০-৫০ কিলোমিটার হতে পারে। এছাড়া দেশের উত্তরাঞ্চলের কোথাও কোথাও মাঝারি ও ভারী বৃষ্টি হতে পারে। অন্যদিকে দেশের যে সকল অঞ্চলে তাপপ্রবাহ চলমান রয়েছে, সেই অঞ্চল সমূহের উপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। সে সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের বর্ষণ হতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।