স্টাফ রিপোর্টার :
বিভাগীয় নগরী সিলেটের ফুটপাতের দোকানগুলোতে কেনাকাটায় ব্যস্ত মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তরা। বিলাসবহুল বিপণী বিতান থেকে কেনাকাটা যাদের সাধ্যের বাইরে, এমন ক্রেতাদের ভরসা ফুটপাত। তবে ফুটপাতের এসব দোকানগুলোর কারণে রাস্তা পুরো দখল হয়ে যাওয়ায় লোকজনের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়েছে। ফুটপাতের দোকানগুলোতে প্রশাসনের নজরদারীতে থাকলেও ঈদে তাদের করার কিছু থাকে না।
ঈদ আসতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকী। তাই ফুটপাতের উপর বসা কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভীড় দেখা যাচ্ছে, বেড়েছে কেনাবেচা। ভ্রাম্যমাণ এই দোকানগুলোতে সাধারণত বিক্রি হয় দেশ-বিদেশ থেকে আসা পুরোনো কাপড়-জুতা। পাশাপাশি অনেক দোকানে থাকে নতুন পণ্যও।
তবে ফুটপাতে গড়ে ওঠা কাপড়ের দোকানে বেচাকেনা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নগরীর বিলাসবহুল মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। তাদের কয়েকজন জানালেন, ঈদের আর মাত্র এক সপ্তাহ বাকি। ব্যবসা জমজমাট করার জন্য দেশি-বিদেশি কাপড় আর জুতা দোকানে সাজিয়ে বসলেও ফুটপাতে গড়ে ওঠা সস্তা কাপড়ের দোকানের কারণে তাদের বেচা-বিক্রিতে ভাটা পড়েছে। খুব রুচিসম্মত ক্রেতা ছাড়া নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্রেতারা বিলাসবহুল মার্কেটে আসছেন না। খুব অল্প মূল্যের দামের কাপড় কিনতে তারা ছুটে যান ফুটপাতের দোকানগুলোতে।
নগরীর বিভিন্ন ফুটপাতের দোকান ঘুরে দেখা গেছে, রাস্তার পাশে ভ্রাম্যমান দোকান বসিয়ে বিভিন্ন ধরণের কাপড় যেমন শার্ট, প্যান্ট, মেহেদি, জুতাসহ আরও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রি করা হচ্ছে। নগরীর বন্দরবাজারে অবস্থিত কোর্ট পয়েন্ট, সুরমা মার্কেটের সম্মুখ থেকে পোস্ট অফিস পর্যন্ত এবং মধুবন মার্কেট প্রাঙ্গণ থেকে জিন্দাবাজার হয়ে চৌহাট্টা পর্যন্ত অস্থায়ীভাবে ফুটপাতে গড়ে উঠেছে দোকানগুলোতে। এসব দোকানে নিম্নবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারের ক্রেতারা প্রতিদিন ভীড় জমাচ্ছেন। স্বল্প আয়ের মানুষের এসব নিয়ে মাথাব্যথা নেই। তারা চান সাধ আর সাধ্যের সমন্বয়। তাই ঈদে নিজের আর পরিবারের সদস্যদের নতুন জামা-জুতা কিনে দিতে তারা ছুটছেন ফুটপাতের দোকানে। স্বল্প খরচে মিটিয়ে নিচ্ছেন নিজেদের চাহিদা। তবে কেনাকাটায় নারীদের উপস্থিতিই বেশি। প্রচন্ড ভিড়ের মাঝে কথা বলার সময় নেই ক্রেতা-বিক্রেতাদের।
কথা হয় বন্দরবাজারের ফুটপাতে কাপড় কিনতে আসা নাসরিন বেগমের সাথে। তিনি বলেন, কাপড়ের দাম সীমিত হলেও মান খুব একটা মন্দ নয়। তাছাড়া বিলাসবহুল মার্কেটে কাপড়ের দাম খুবই চড়া। আমার তা কেনার সাধ্য নেই।
নগরীর প্রাণকেন্দ্র জিন্দাবাজারে শার্ট, প্যান্টের জমজমাট ফুটপাত ব্যবসা করছেন নীলফামারী জেলার বাসিন্দা মুক্তার মিয়া। তিনি জানান, বিভিন্ন মৌসুমে তারা সিলেট ব্যবসা করতে আসেন। তার দোকানে ১শ’ টাকা থেকে ৭শ’ টাকা দরের শার্ট-প্যান্ট রয়েছে।
সুরমা পয়েন্টের ফুটপাতে কেনাকাটা করতে আসা রিক্সা চালক নিজাম উদ্দিন বলেন, আমাগো মত মানুষের আবার ঈদ। তারপরও ঈদে কিছুতো কেনাকাটা করতে হয়।
এদিকে, ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা যে খুব নির্বিঘেœ ব্যবসা করছেন তা নয়। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ঠিকানাবিহীনভাবে ব্যবসা করে আসছি। নেই কোনো নিরাপত্তা। মাঝেমধ্যেই উচ্ছেদের ঝামেলায় পড়তে হয়। আমাদের অনেক চাপের মধ্য দিয়ে ব্যবসা চালাতে হচ্ছে।