স্টাফ রিপোর্টার :
বন্যাকবলিত সিলেটে প্রায় প্রতিটি ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি-কাশির প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় প্রত্যেক ঘরে কেউ না কেউ জ্বর বা সর্দি আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বর্তমানে দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত বুধবার সকাল থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নতুন করে আরও ১ হাজার ৭৯০ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়েছে। দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ার সময় জ্বর ও সর্দি-কাশি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লেও অধিকাংশ সিলেটের মানুষের করোনা পরীক্ষায় আগ্রহ নেই। ফলে পানিবাহিত রোগের পাশাপাশি করোনা সংক্রমণের ঝুঁকিও বাড়ছে।
বিভিন্ন ফার্মেসি ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- গত কয়েকদিনে জ্বর, সর্দি ও কাশির ওষুধের চাহিদা বেড়েছে। জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত ব্যক্তিরা চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়েই নাপা, প্যারাসিটামল, হিস্টাসিনসহ বিভিন্ন ওষুধ সেবন করছেন। এসব ওষুধ খেয়ে দুই তিন দিনের মধ্যে অনেকের জ্বর ভালো হয়েছে বলে দাবি করেন ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা। তবে জ্বর, সর্দি থাকলেও আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের প্রাত্যহিক কাজ করে যাচ্ছেন। মেলামেশা করছেন সবার সঙ্গেই।
জানা গেছে, সিলেটজুড়ে আষাঢ় মাসে চিরায়ত দৃশ্য এই রোদ, এই বৃষ্টি। আবহাওয়ার পাশাপাশি হঠাৎ পরিবর্তন ঘটছে তাপমাত্রার। আর এতেই বাড়ছে জ্বর-সর্দি। সিলেট শহর থেকে শুরু করে জেলা উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। সম্প্রতি দেশে ভাইরাল ফিভারের পাশাপাশি ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে চিকিৎসকরা বলছেন এটা নাকি মৌসুমি জ্বর এ নিয়ে দ্বিধায় পড়ার কোন কারণ নেই, তবে তারা বলছেন, এই মুহূর্তে জ্বর এলে বাসায় বসে থাকার সুযোগ নেই। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী করাতে হবে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা।
স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এখন ঋতু পরিবর্তন হচ্ছে। দেখা যাচ্ছে দিনের বেলায় প্রচুর গরম, আবার তার ভেতরে হঠাৎ বৃষ্টি চলে এলো। কেউ কেউ একটু বৃষ্টিতেও ভিজল, ফলে হঠাৎ প্রচুর গরম থেকে শরীর ঠান্ডা হয়ে গেল জ্বর চলে আসে।
এদিকে, করোনা সংক্রমণ বাড়ায় সরকার নতুন করে মাস্ক পরার নির্দেশনা দিলেও তা রয়ে গেছে কাগজেই। সরকারি-বেসরকারি অফিস আদালত থেকে শুরু করে হাসপাতাল, হাট বাজার কোথাও মাস্কের ব্যবহার নেই। এতে করে দ্রুত করোনা সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
সিলেটের ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, পরীক্ষার পাশাপাশি যারা এখনও করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ বা বুস্টার ডোজ গ্রহণ করেনি তাদের দ্রুত তা নেওয়া উচিত। কারণ দেশে ফের সংক্রমণ বাড়ছে। এবার বিভিন্ন জটিল রোগে আক্রান্তরা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সিলেট বিভাগীয় কার্যালয়র পরিচালক ডা. হিমাংশু লাল রায় আরো বলেন, অনেকেই জ্বর-সর্দিতে আক্রান্ত হচ্ছেন। যারা আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের দ্রুত পরীক্ষা করা উচিত। এতে করে নিজে ও পরিবারের সদস্যরা নিরাপদ থাকবেন।