কাজিরবাজার ডেস্ক :
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানিতে নির্ধারিত দেশের পাশাপাশি বিকল্প ব্যবস্থা থাকতে হবে। যে কোন পণ্য মজুদদারের বিরুদ্ধে জোরদার অভিযান চলবে। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে মন্ত্রী-এমপিসহ সকলকে তৎপর থাকতে হবে। রাস্তায় কোন প্রকার টংঘর, অস্থায়ী দোকান থাকবে না। যানজট নিরসনে পুলিশকে কঠোর অবস্থানে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সোমবার নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির জরুরী বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত দেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, বৈঠকে বলা হয় বিরোধী দলসহ সকলকে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মসূচী পালনে পুলিশ বাধা প্রদান করবে না। অনুমতি সাপেক্ষে তারা শান্তিপূর্ণভাবে সভা, সমাবেশ, সেমিনার করতে পারবে। তবে রাজনৈতিক কর্মসূচীর নামে কোন প্রকার অরাজকতা বরদাস্ত করা হবে না।
সূত্র জানায়, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন থেকে নিত্যপণ্য (চাল, গম, ডাল, তেল ইত্যাদি) আমদানিতে বিকল্প ব্যবস্থা থাকতে হবে। শুধু এক দেশ নয়, অন্য কোন দেশ থেকে আসতে পারে, তাতে কি পরিমাণ খরচ হবে, সুবিধা, অসুবিধা কিÑ তা বিস্তারিত থাকতে হবে প্রস্তাবে। অর্থাৎ ভারত থেকে গম আমদানি করতে গেলে পাশাপাশি অন্য দেশ যেমন রাশিয়া, ব্রাজিল থেকে আনতে খরচ কত পড়বে বা গুণগত মান কেমন হবে, এ সম্পর্কে বিস্তারিত থাকতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মূল্যস্ফীতি বিশ্বের সকল দেশে আছে। ইউক্রেন পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বের অর্থনৈতিক অবস্থা পাল্টে গেছে। তারপরও মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে হবে। এ জন্য সকলকে তৎপর থাকতে হবে। প্রতিদিন বাজার মনিটরিং করতে হবে। প্রয়োজনে আমদানি করতে হবে।
যানজট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রাস্তাঘাটে অস্থায়ী দোকানপাট, টংঘর কেন? ভিআইপি রোডে কেন রিক্সা ঢোকে? রাস্তার মোড়ে মোড়ে এত জ্যাম হয় কেন? পুলিশ কি করে? এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তিনি সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিরোধী দলকে সভা-সমাবেশ করতে দিতে হবে। রাজনৈতিক কর্মসূচী তারা শান্তিপূর্ণভাবে পালন করুক। শান্তিপূর্ণভাবে সভা, সমাবেশ, সেমিনার করতে কোন আপত্তি থাকার কথা নয়। রোহিঙ্গা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের কেউ রোহিঙ্গা বলবেন না। তারা হলো বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক।
প্রায় প্রতিদিনই নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে। ঘোষণা দিয়েও সরকার ভোজ্য তেলের দাম কমাতে পারছে না। বৈশি^ক পরিস্থিতির কারণে জ¦ালানি তেলের বাজারও অস্থির। যদিও বাজারদর নিয়ে সাধারণ মানুষের হাঁসফাঁস অবস্থা হওয়ার আগেই তৎপর হয়েছে সরকার। কিন্ত পরিস্থিতি পাল্টাচ্ছে না। বরং কিছু ক্ষেত্রে অবনতি হচ্ছে। এই অবস্থায় পুরো পরিস্থিতিকে নিরাপত্তার দৃষ্টিকোন থেকে বিবেচনা করা হচ্ছে। সার্বিক আলোচনার জন্য ডাকা হয়েছে নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে ভারসাম্য রক্ষাসহ বাজার তদারকির বিষয়েও আলোচনা হয়। এমনকি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, গুজব ছড়িয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা প্রতিরোধের বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে যানজটে সৃষ্ট জনদুর্ভোগ, জোরপূর্বক বাস্তচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক বা রোহিঙ্গাদের অবস্থা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয় বলে সংশ্লিষ্ট এক মন্ত্রী বলেন।
২০১৯ সালের ২৭ মার্চ নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়। প্রধানমন্ত্রী এ কমিটির আহবায়ক। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী, আইনমন্ত্রী, অর্থমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, পরিকল্পনামন্ত্রী, শিল্পমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রী, বিমান ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী, বিদ্যুৎ, জ¦ালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রী, মন্ত্রী পরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান ছাড়াও পররাষ্ট্র সচিব, জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব, প্রতিরক্ষা সচিব, অর্থ বিভাগের সচিব, আইন সচিব, আইজিপি, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, এনএসআইয়ের মহাপরিচালক, ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ রাইফেলসের মহাপরিচালক জাতীয় এ কমিটির সদস্য। জানা গেছে শুধু আইনমন্ত্রী ছাড়া বাকি সকল সদস্যই জরুরী এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
কমিটির কার্যপরিধি অনুযায়ী দেশের নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যা ও কার্যক্রমের রিভিউ করা এ কমিটির কাজ। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতির মূল্যায়ন ও পর্যালোচনাও এ কমিটির কাজ। দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ের ওপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান এবং প্রয়োজনবোধে মন্ত্রিসভার জন্য সুপারিশ প্রণয়ন এ কমিটির কাজ।
কমিটির সিইও আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, যখনই জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কোন বিষয় থাকে তখনই আমরা সরকারের নজরে আনি। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বা করোনা মহামারীর কারণে খাদ্য সরবরাহ চেন বিঘ্নিত হয়েছে বিশ^ব্যাপী। সারাবিশে^ খাদ্য সঙ্কট দেখা দিয়েছে। মূল্যস্ফীতি দেখা দিয়েছে। ব্যবস্যা-বাণিজ্যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় মুদ্রা নিম্নমুখী হয়েছে। এগুলো অদূর ভবিষ্যতে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা বা আমাদের জীবনযাত্রা ব্যাহত করতে পারে। এগুলো আমাদের জাতীয় ইস্যু।
তিনি বলেন, যানজটও একটা ইস্যু। কারণ কর্মঘণ্টা রাস্তায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দেশের অর্থনীতি শহরভিত্তিক। বিশেষ করে ঢাকাভিত্তিক। সেই শহরে যদি আমি রাস্তার ওপরই বসে থাকি তাহলে প্রবৃদ্ধি নেমে যাওয়াই স্বাভাবিক। এধরনের বিষয় সামনে এলে আমরা সরকারকে অবহিত করি। তখন প্রয়োজন মনে করা হলে জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির বৈঠক ডাকা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা বলেন, সাধারণত জাতীয় ইস্যুতে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে নিয়ে এ কমিটি গঠন করা হয়। এমনটাই রেওয়াজ বিভিন্ন দেশে। কিন্ত আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট ভিন্ন। ২০১৯ সালে এ কমিটি গঠন করার পরও বৈঠক হয়েছে। সর্বশেষ বৈঠক হয়েছে গত জানুয়ারিতে। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খাদ্য মন্ত্রণালয় তিনটি কমিটি গঠন করেছে। এসব কমিটির মাধ্যমে সরকার পাইকারি বাজারগুলোতে মজুদদারির মাধ্যমে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে যাতে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি করা না হয় সে ব্যাপারে কঠোর তদারকি করছে। বিভিন্ন রাইস মিলে ব্যবসায়ীরা প্রয়োজনের অতিরিক্ত চাল যাতে মজুদ রেখে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে দৃষ্টি রাখছে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বর্তমান পরিস্থিতি ভিন্ন। সরকারের নানা উদ্যোগও দ্রব্যমূল্যের উর্ধগতি থামাতে পারছে না। টুক টুক করে শ্রমিকরা রাস্তায় নেমে আসছেন। বলা হচ্ছে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা এ মাসের শুরু থেকে রাজধানীর মিরপুর এলাকায় রাস্তা অবরোধ করছেন এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছেন। আসলে তাদের মূল দাবি বেতন বাড়াতে হবে, না হলে নিত্য পণ্যের দাম কমাতে হবে। গত ৬ জুন রবিবার শ্রমিকরা সকাল সাড়ে ৮টা থেকে মিরপুর ১০, ১১, ১৩ ও ১৪ নম্বর সড়ক দখলে নিয়ে বিক্ষোভ করেন। ওই এলাকার বিভিন্ন কারখানার কয়েক হাজার শ্রমিক রাস্তায় নামলে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তারা ইনডোর স্টেডিয়ামের আশপাশের কয়েকটি বহুতল ভবনের কাঁচ ভাংচুর করেছে। ইট-পাটকেল ছুড়ে গাড়িও ভেঙ্গেছে। দ্রব্যমূল্যের ছোটখাট কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়েই নিরাপত্তা সংক্রান্ত জাতীয় কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
এদিকে বাজার দরের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ দিন দিনই কমছে। সরকারের মন্ত্রীরা যা বলছেন বাস্তবে তা হচ্ছে না। আমদানি ভ্যাট অব্যাহতি দেয়ার পরও দেশের বাজারে সয়াবিন ও পাম তেলের দাম ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ৩০ দিনের ব্যবধানে দুই দফায় প্যাকেটজাত সয়াবিন তেলের লিটারে দাম বেড়েছে ৩৫ টাকা। বর্তমানে প্রতি লিটার প্যাকেটজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ২০৫ টাকায়। সবশেষ ৯ জুন সয়াবিন তেলের দাম বাড়ে লিটারে ৭ টাকা। তার আগে গত ২ জুন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, ৫-৬ দিনের মধ্যে দাম কমানোর আশ^াস দিয়েছিলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী যেদিন ভোজ্য তেলের দাম কমানোর আশ^াস দিয়েছিলেন তার আগের দিন মিল মালিকরা লিটারে ২৪ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছিলেন।
তার আগে ৬ মে থেকে প্যাকেটজাত সয়াবিন তেল লিটারে ৩৮ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল লিটারে ৪৪ টাকা ও পাম তেল লিটারে ৪২ টাকা বাড়ে। দাম বাড়িয়েও বাজার স্বাভাবিক করা সম্ভব হচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত মাঠে নামে জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদফতর। এরপরই গুদামে মজুদ করা সয়াবিন ও পাম তেল বেরিয়ে আসতে শুরু করে। এখন পর্যন্ত সারাদেশে প্রায় ১১ লাখ লিটার তেল জব্দ করা হয়েছে।
দেশে শুধু তেলই না, চাল, ডাল, আটা, চিনিসহ প্রায় সব খাদ্য এবং নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম বেড়েছে। চলতি অর্থবছরে গমের দাম বেড়েছে ৮৫ শতাংশ, চিনির দাম ১৩ শতাংশ ও জ¦ালানি তেলের দাম বেড়েছে ৬৫ শতাংশ। ফার্মের মুরগির ডিমের দাম ৩০ টাকা হালি বা ৯০ টাকা ডজনে পাওয়া যেত। এখন সেই ডিমের হালি ৪০ থেকে ৪২ টাকা ও ডজন ১২২ থেকে ১২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একমাস আগেও ব্রয়লার মুরগির কেজি ছিল ১৩৫-১৪০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়।
ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ- টিসিবি বলছে, এক বছর আগের তুলনায় এখন ডিমের দর ৪০ শতাংশ বেশি। যুদ্ধের কারণে রাশিয়া ও ইউক্রেন গম রফতানি বন্ধ করায় দেশের বাজারে আবার বেড়েছে আটার দাম। বিপণনকারী কোম্পানিগুলো আটার দুই কেজির প্যাকেটের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে ১০৮ থেকে ১১৫ টাকা। প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ৬ থেকে সাড়ে ৮ টাকা।
টিসিবির তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত মাসের শেষদিকে রাজধানীতে প্রতি কেজি মোটা চালের গড় দাম ছিল ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা। এছাড়া ভালমানের চালের দাম প্রতি কেজিতে ছিল ৬০ থেকে ৬৮ টাকা। মোটা চাল বিক্রি হয়েছে ৪৮-৫০ টাকায় এবং ভালমানের চাল বিক্রি হয়েছে ৭০ থেকে ৭৬ টাকায়।
রাজধানীসহ সারাদেশে তেল ও চালের অবৈধ মজুদদারের বিরুদ্ধে খাদ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য অধিদফতর, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী অভিযান চালাচ্ছে। এতে বিপুল পরিমাণ ভোজ্যতেল উদ্ধার হয়েছে। বের হয়ে আসছে চালের অবৈধ মজুদও।
গত বছরের ৩ নবেম্বর লিটার প্রতি ১৫ টাকা বাড়ানোর ফলে বর্তমানে প্রতি লিটার ডিজেল বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। ওয়েলপ্রাইসডটকমে প্রকাশিত তথ্যমতে বিশ^বাজারে রবিবার পর্যন্ত জ¦ালানি তেলের ক্রুডের প্রতি ব্যারেলের দাম রয়েছে ১২০ ডলার ৬৭ সেন্ট। জ¦ালানি তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন প্রতিদিন লোকসান দিচ্ছে ৬৫ কোটি টাকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ না হলে ভবিষ্যতে জ¦ালানি তেলের দাম আরও বাড়তে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বৈদেশিক লেনদেনের চলতি হিসাবের ভারসাম্যের হালনাগাদ যে তথ্য ৮ মে প্রকাশ করেছে, সেখানে বলা হয়েছে ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ সময়ে ৬ হাজার ১৫২ কোটি ডলারের বিভিন্ন ধরনের পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ। একই সময়ে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে ৩ হাজার ৬৬১ কোটি ডলার আয় করেছেন রফতানিকারকরা। এই হিসাবে অর্থবছরের ৯ মাসে পণ্য বাণিজ্যে সার্বিক ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৯১ কোটি ডলার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না থামলে বাণিজ্য ঘাটতি আরও বাড়বে। কারণ মহামারী করোনা নিয়ন্ত্রণে আসায় দেশে সব ধরনের পণ্যের চাহিদা ব্যাপক বেড়েছে। এদিকে গত কয়েক দিনে ডলারের দাম বেড়েছে সাড়ে ৯ শতাংশের বেশি। ফলে বর্তমানে আমদানির জন্য এলসি করা পণ্য দেশে আসলে দাম আরও বাড়বে।
ঢাকা শহরে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে ৮০ লাখের বেশি কর্মঘণ্টা। আর এতে দিনে ক্ষতি হচ্ছে প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। যা ২০১৭ সালে ছিল দিনে ৫০ লাখ কর্মঘণ্টা। বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) দুর্ঘটনা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষণায় এসব কথা বলা হয়েছে। গবেষণা বলছে, ক্রমবর্ধমান যানজটে সময় বেশি চলে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটানো কিংবা অন্যান্য কাজে সময় কমে যাচ্ছে, যা মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি করছে।