সিলেটে বিশাল শোক র্যালি সহ বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন করা হয়েছে। সোমবার ৩০ মে বিকাল ৩টায় সিলেট জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে নগরীর রেজিস্ট্রারী মাঠ থেকে শুরু করে এই শোক র্যালি আম্বরখানা পয়েন্টে গিয়ে শেষ হয়।
এই শোক র্যালিতে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, কৃষকদল, শ্রমিকদল, মহিলাদল সহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশগ্রহণ করেন। র্যালির সম্মুখ অংশে বিএনপির দলীয় বিশাল পতাকা, নেতাকর্মীদের হাতে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্বলিত বিভিন্ন ফেস্টুন দেখা যায়। র্যালি শুরু হওয়ার পরে নগরীর বিভিন্ন শেণীপেশার মানুষ রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে অবলোকন করেন।
র্যালি শুরু হওয়ার পূর্বে রেজিস্ট্রারী মাঠে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও সিলেট -১ আসনের বিএনপির ধানের শীষের প্রার্থী খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ ক্ষুদ্রঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির আহবায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালি পংকী।
রেজিস্ট্রারী মাঠে র্যালি পূর্ববতী সমাবেশে বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপার্সনের অন্যতম খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেন, সন্ত্রাসী কায়দায় দমনপীড়নের মাধ্যমে সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন জায়গায় হামলা, মামলা করা হচ্ছে। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও বিএনপির বিরুদ্ধে এই সরকার কোনো সমালোচনা করার কোনো ক্ষেত্র না পেয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নভাবে অপপ্রচার চালিয়ে আসছে। বিএনপি এদেশের গণমানুষের সংগঠন, আজকের ঐতিহাসিক শোক র্যালি তার জ্বলন্ত প্রমাণ। আজ সুশৃঙ্খল এই শোক র্যালি সফল করে তুলার জন্য সকল নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এ সময় সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদত বার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি। জিয়াউর রহমানের জীবন আদর্শ ধারণ করে গণতন্ত্র রক্ষায় আমাদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আজ শোকের দিন। জিয়াউর রহমান কে যদি বিপদগামীরা হত্যা না করতো তাহলে বাংলাদেশ একটি উন্নত মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেত।
সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, সিলেট বিএনপির ঘাঁটি তা বার বার প্রমাণিত। আজ সিলেটবাসী ঐতিহাসিকভাবে জিয়াউর রহমানকে শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে। মহানগর বিএনপির আহবায়ক আবদুল কাইয়ুম জালালি পংকী বলেন, সারাদেশে যেভাবে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলা,মামলা করা হচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে সরকারের বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই হামলা মামলা প্রতিরোধ করতে হবে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এড. এমরান আহমদ চৌধুরী, বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এড. আবদুল গাফফার, এ টিএম ফয়েজ উদ্দিন,আশিক চৌধুরী, মাহবুবুর রব চৌধুরী ফয়সল, মামুনুর রশীদ মামুন, ইসতিয়াক আহমদ সিদ্দিকী, সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, এড.হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, মাহবুবুল হক চৌধুরী বদরুল হক চৌধুরী।
মহানগর বিএনপির নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদস্য সচিব মিফতাহ্ সিদ্দিকী, আহবায়ক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক হুমায়ুন কবির শাহীন, ফরহাদ চৌধুরী শামিম, রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, জিয়াউল গনি আরেফিন জিল্লুর, এড.হাবিবুর রহমান হাবিব, সৈয়দ মিসবাহ উদ্দিন, সুদীপ রঞ্জন সেন বাপ্পু, এমদাদ হোসেন চৌধুরী, আজমল বক্ত চৌধুরী সাদেক, নজীবুর রহমান নজীব, মইন উদ্দিন সোহেল, এড.রোকসানা বেগম শাহনাজ, সালেহ আহমদ খসরু, আহবায়ক কমিটির সদস্য নাসিম হোসেইন, জিয়াউল হক জিয়া, আব্দুর রহিম, আমির হোসেন, নিহার রঞ্জন দে, আব্দুল দীপক, এড.আতিকুর রহমান সাবু, মাহবুব কাদির শাহী, সৈয়দ তৌফিকুল হাদী, মুর্শেদ আহমদ মুকুল, হুমায়ুন আহমদ মাসুক, আকতার রশীদ চৌধুরী, নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ, আফজল হোসেন, শামীম মজুমদার, মতিউল বারী চৌধুরী খুর্শেদ, আবুল কালাম, ডাঃ নাজমুল ইসলাম, সৈয়দ সাফেক মাহবুব, মাহবুব চৌধুরী।
উপজেলা নেতৃবৃন্দের মধ্যে আবুল কাশেম, আব্দুর রহমান, কুহিনূর আহমদ, অহিদুজ্জামান চৌধুরী সুফি, মাহবুব আলম, জসিম উদ্দিন, নুমান আহমদ মুরাদ,জালাল উদ্দিন। অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এড.মোমিনুল ইসলাম মোমিন, শাহনেওয়াজ বক্ত চৌধুরী তারেক, মকসুদ আহমদ, আব্দুল আহাদ খান জামাল,আব্দুল ওয়াহিদ সোহেল, দেওয়ান জাকির হোসেন খান, আজিজুল হোসেন আজিজ, শহীদ আহমদ চেয়ারম্যান, তাজরুল ইসলাম তাজুল, আবুল কালাম, ইসলাম উদ্দিন, নিজাম উদ্দিন তরফদার, রায়হান এইচ খান, মাসুক এলাহি, আব্দুর রহমান, আলতাফ হোসেন সুমন, সুদীপ জ্যোতি এষ, দেলোয়ার হোসেন দিনার, ফজলে রাব্বি আহসান, সালেহা কবির শেপি, ফাহিমা কুমকুম প্রমুখ।
আম্বরখানা পয়েন্টে র্যালি পরবর্তী সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ও বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক। তাঁদের বক্তব্যের পরেই শোক র্যালিটির সমাপ্তি ঘটে।
এদিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা, মহান স্বাধীনতার ঘোষক, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাতাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া মাহফিল করেছে সিলেট জেলা বিএনপি। সোমবার বাদ জোহর নগরীর দরগাহে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাজার মসজিদ প্রাঙ্গণে উক্ত দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। মাহফিলে জেলা বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগি সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মাহফিলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাগফেরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এছাড়া মাহফিলে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থ্যতা কামনা, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু, শহীদ জিয়ার ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর মাগফেরাত, নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলী, ছাত্রদল নেতা ইফতেখার আহমদ দিনার, জুনেদ আহমদ ও গাড়ী চালক আনসার আলী সহ গুমকৃত নেতাকর্মীদের সন্ধান কামনা এবং দেশ-জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্য এডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন, মামুনুর রশীদ মামুন, মাহবুবুল হক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি এ কে এম তারেক কালাম, সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কাশেম, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা সভাপতি হাজী শাহাব উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক কুহিনুর আহমদ, বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন নেতৃবৃন্দের মধ্য থেকে উপস্থিত ছিলেন, আ ফ ম কামাল, দিদার ইবনে তাহের লস্কর, এডভোকেট ফরহাদ খন্দকার, মনিরুল ইসলাম তুরণ, মাহবুব আলম, মইনুল ইসলাম মঞ্জু, বখতিয়ার আহমদ ইমরান, শামসুর রহমান শামীম, হাজী পাবেল, ইসলাম উদ্দিন, আফতাব উদ্দিন, আতাউর রহমান আতা, নজরুল ইসলাম, বদরুল ইসলাম বদই, রায়হানুল হক, আল মামুন, আব্দুল মজিদ, শফি খান, আবু বকর সিদ্দিক, ওলিউর রহমান ওলি, ফখরুল আলম, কায়সার মাহমুদ সুমন, ফখরুল ইসলাম, শাহীন আহমদ জয়, জাহেদ আহমদ ও নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
দক্ষিণ সুরমায় বিএনপি : বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির বলেছেন, মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শহীদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপি প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে গণতন্ত্র ও জনকল্যাণের রাজনীতি করে আসছে। সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে শহীদ জিয়ার ১৯ দফা একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। ক্ষুধা দারিদ্র মুক্ত স্বনির্ভর বাংলাদেশ গড়তে জাতীয়তাবাদী শক্তির বিকল্প নেই। স্বৈরাচারী আওয়ামীলীগ সরকার গণতন্ত্র হত্যা করে দেশে একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছে। দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে দিয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবন অতীষ্ট হলেও সেদিকে সরকারের কোন দৃষ্টি নেই। তারা দেশে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে পুনরায় গদি দখলের পায়তারা করছে। শহীদ জিয়ার সৈনিকেরা বেচে থাকতে ফ্যাসিস্ট সরকারের এই ষড়যন্ত্র আর সফল হতে দেয়া হবেনা।
তিনি সোমবার দুপুরে মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪১তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে দক্ষিণ সুরমা উপজেলার বিএনপির উদ্যোগে দক্ষিণ সুরমার চন্ডিপুল এলাকায় অসহায় দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপরোক্ত কথা বলেন। দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সভাপতি হাজী শাহাবুদ্দিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কুহিনুর আহমদের পরিচালনায় খাবার বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এমদাদ হোসেন চৌধুরী ও নুরুল আলম সিদ্দিকী খালেদ।
খাবার বিতরণকালে জেলা বিএনপি ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, আমরা মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শে রাজনীতি করি। আমাদের রাজনীতির মূলমন্ত্র হচ্ছে গণতন্ত্র ও জনকল্যান। যে কোন দুর্যোগে বিএনপি মানবতার কল্যানে নিজেদেরকে নিয়োজিত করে আসছে। মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে শহীদ জিয়ার সৈনিকদের দমিয়ে রাখার সাধ্য কারো নেই।
জেল সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান শুধু মহান স্বাধীনতার ঘোষকই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন সেক্টর কমান্ডার ও বীর উত্তম। তিনি শুধু মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেননি, একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় বিশে^র বুকে ভিন্নভাবে তুলে ধরেছিলেন। সেই নেতাকে শহীদ করে দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। যার মাশুল আজো জাতিকে দিতে হচ্ছে। শহীদ জিয়ার আদর্শ বুকে ধারণ করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে সবাইকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। বিজ্ঞপ্তি