৪৪ হাজার কোটি টাকায় বিক্রি হয়ে গেল চেলসি!

4

স্পোর্টস ডেস্ক :
আগ্রহীর তালিকায় ছিলেন টেনিস তারকা সেরিনা উইলিয়ামস, ফর্মুলা ওয়ানের কিংবদন্তি লুইস হ্যামিল্টনসহ একঝাঁক ধনকুবের। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ইংলিশ ক্লাব জায়ান্ট চেলসি কিনে নিল যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী টড বোয়েলির মালিকানাধীন সংস্থা।
চেলসির পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, দুই পক্ষ ৪.২৫ বিলিয়ন পাউন্ড বা ৫.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে মালিকানা হাতবদলে রাজি হয়েছে। সবমিলিয়ে পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে ৪৯০ কোটি ইউরো বা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৪৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। এখন শুধু প্রিমিয়ার লিগ কর্তৃপক্ষ ও ব্রিটিশ সরকারের অনুমোদনের অপেক্ষা।
ক্লাবের শেয়ার বাবদ ২.৫ বিলিয়ন পাউন্ড খরচ করবেন চেলসির নতুন মালিকপক্ষ। এছাড়া বাকি টাকা খেলোয়াড়দের বেতন ও অন্যান্য খাতে ব্যয় হবে। অন্যদিকে চেলসির স্থগিত ব্যাংক একাউন্টে থাকা বিপুল পরিমাণ অর্থ চ্যারিটির জন্য দান করা হবে বলে জানা গেছে। ক্লাব বিক্রির অর্থও আব্রাহিমোভিচ পাবেন না। পুরো অর্থ খরচ করা হবে ইউক্রেনের যুদ্ধবিধ্বস্তদের পুনর্বাসনের কাজে।
বোয়েলির বিনিয়োগের ব্যবসা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের বেসবল দল লস অ্যাঞ্জেলস ডজার্সের অন্যতম মালিক তিনি। এছাড়া হোল্ডিং প্রতিষ্ঠান এলডিরিজ ইন্ডাস্ট্রিজের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং এনবিএ দল লস অ্যাঞ্জেলেস লেকার্সেও আংশিক মালিকানা রয়েছে তার। এর আগে ২০১৯ সালেও চেলসি কিনে নেওয়ার জন্য আব্রাহিমোভিচকে ২.২ বিলিয়ন পাউন্ডের প্রস্তাব দিয়েছিলেন বোয়েলি। কিন্তু সেবার রুশ ধনকুবের রাজি হননি। আর এবার তার চোখের সামনেই তার ক্লাব কিনে নিলেন মার্কিন ধনকুবের বোয়েলি। চেয়ে চেয়ে দেখা ছাড়া আব্রাহিমোভিচের আর কিছুই করার নেই।
চেলসির মালিকানায় বোয়েলির নেতৃত্বে আরও থাকছেন ক্লিয়ারলেক ক্যাপিটাল, মার্ক ওয়াল্টার এবং হ্যানসজর্গ ওয়েস। তারা সবাই বোয়েলির ব্যবসায়িক গ্রুপের অংশ। এর মধ্যে হ্যানসজর্গ ওয়েস একজন সুইস বিলিয়নিয়ার, মার্ক ওয়াল্টার মার্কিন ব্যবসায়ী, জোনাথন গোল্ডস্টেইন ব্রিটিশ ব্যবসায়ী এবং ক্লিয়ারলেক ক্যাপিটাল একটি বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান।
ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ শুরুর পরেই চেলসির পরিচালক পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ক্লাবের প্রকৃত মালিক রোমান আব্রাহিমোভিচকে। মূলত নিজ দেশের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে তার খ্যাতি (!) থাকায় যুক্তরাজ্যে থাকা সকল সম্পদ জব্দ করে ব্রিটিশ সরকার। বন্ধ করে দেওয়া হয় চেলসির ব্যাংক একাউন্টও। তবে কর্মীদের বেতন ও ম্যাচ আয়োজনসহ অ্যাওয়ে ম্যাচের খরচ বাবদ কিছু অর্থ খরচের অনুমতি ছিল। কিন্তু নতুন কোনো খেলোয়াড় কেনা-বেচার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
আব্রাহিমোভিচকে একপ্রকার নিষিদ্ধ করার পরেই চেলসি বিক্রির তোড়জোড় শুরু হয়। বোয়েলির আগে সম্ভাব্য ক্রেতা হিসেবে এনবিএ দল বোস্টন সেল্টিকসের সহ–মালিক ও আমেরিকান ব্যবসায়ী স্টিফেন পাগলিউকা ও আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনস গ্রুপের (আইএজি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান স্যার মার্টিন ব্রটনের নাম শোনা গিয়েছিল। পরে যোগ দিয়েছিলেন সেরিনা ও হ্যামিল্টন।
চেলসি কেনার জন্য ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি স্যার জিম র‌্যাটক্লিফও প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এছাড়া আগ্রহীর তালিকায় ছিলেন বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স সংস্থার সভাপতি সেবাস্তিয়ান কো, ব্রিটেনের বিশিষ্ট নির্মাণকারী সংস্থা নিক ক্যান্ডি, আমেরিকার বেসবল ক্লাব শিকাগোর কর্ণধার রিকেটস পরিবার, দক্ষিণ কোরিয়ার সংস্থা হানা গোষ্ঠী এবং সি অ্যান্ড পি স্পোর্টস লিমিটেড। কিন্তু তারা কেউই পারলেন না সফল হতে।