ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড জগন্নাথপুর, মা ও শিশু সহ ৩ জনের প্রাণহানি

11
জগন্নাথপুরে ঘরের নিচে চাপা পড়ে মা ও শিশু সহ ৩ জনের মৃত্যু হয়।

মো. শাহজাহান মিয়া জগন্নাথপুর থেকে :
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কাল বৈশাখি ঘূর্ণিঝড় সব কিছু লন্ডভন্ড করে দিয়েছে। এতে মা ও শিশু সহ ৩ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। উড়িয়ে নিয়ে গেছে ঘরের টিনের ছালা। উপড়ে ও ভেঙে গেছে গাছ-গাছালি। শিলাবৃষ্টিতে পাকা ধানের ক্ষতি হয়েছে।
১৪ এপ্রিল বৃহষ্পতিবার ভোর ৫ টার দিকে জগন্নাথপুরের উপর দিয়ে প্রচন্ডবেগে কাল বৈশাখি ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়। এতে মুহূর্তের মধ্যেই যেন সব কিছু অলট-পালট হয়ে যায়। ঘনঘন বিকট শব্দ ও বজ্রপাত যেন আকাশ ভেঙে চৌচির হয়ে যাওয়ার অবস্থার সৃষ্টি হয়। ঝড়ের সাথে ছিল শিলাবৃষ্টি। এতে অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। উড়ে যায় অনেক ঘরের ছালা। ছোট-বড় অসংখ্য গাছ-গাছালি উপড়ে ও ভেঙে পড়ে যায়। কোন কিছু বুঝে উঠার আগেই সব কিছু যেন লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। প্রায় আধা ঘন্টাব্যাপি ঘূর্ণিঝড়ে প্রাণহানি সহ ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
এর মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলি ইউনিয়নের সুলেমানপুর গ্রামে একটি কাঁচা টিনসেড ঘরের উপর বড় বড় ২টি গাছ উপড়ে পড়ে যায়। এ সময় ঘরের ভেতর থাকা শিক্ষক হারুন মিয়ার পিতা এংরাজ মিয়া (৭০), তার স্ত্রী মৌসুমা আক্তার (৩৫), অবুঝ শিশু মাহিমা আক্তার (৩) ও হোসাইন মিয়া (১) সহ একই পরিবারের ৪ জন ঘর এবং গাছের নিচে চাপা পড়েন। এতে ভাগ্যক্রমে বৃদ্ধ এংরাজ মিয়া বেচেঁ গেলেও তার পুত্রবধূ মৌসুমা আক্তার, নাতিন মাহিমা আক্তার ও নাতি হোসাইন মিয়ার ঘটনাস্থলেই মর্মান্তিক মৃত্যু হয় বলে সরেজমিনে আহত বৃদ্ধ এংরাজ মিয়া জানান। তাদের বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া থানার গোসকিলা গ্রামে। তারা দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে পাটলি সুলেমানপুর গ্রামের যুক্তরাজ্য প্রবাসী বুলু মিয়ার বাড়িতে বসবাস করে আসছিলেন।
ঘর ও গাছের নিচে চাপা পড়ে মা ও ২ শিশুর প্রাণহানির খবর মসজিদ মাইকে ঘোষণা দিলে গ্রামবাসী জড়ো হন এবং জগন্নাথপুর থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের দমকল বাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে স্থানীয়দের সহযোগিতায় মৃতদেহগুলো উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সুনামগঞ্জ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে বলে থানার এসআই জিন্নাতুল ইসলাম তালুকদার জানান।