রমজানের শুরুতেই সবকিছু এলোমেলো হয়ে গেল। কাকতলীয় হলেও বেশ কিছু সমস্যা উপস্থিত হয়েছে একসঙ্গে। নানা সঙ্কটে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে নাগরিক জীবন। যানজট নতুন কোন বিষয় না হলেও গত কয়েকদিন ধরে এটি হয়ে উঠেছে আরও তীব্র ও অসহনীয়। প্রায় অচল করে দিয়েছে জনজীবন। রাজধানীসহ সারাদেশে গ্যাস সঙ্কটে চুলা জ¦লছে না অনেক মানুষের ঘরে। ইফতার এবং রাতের খাবার তৈরিতে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে। অনেক এলাকায় দেখা দিয়েছে পানির সঙ্কট। সব মিলিয়ে রমজানের শুরুটা নির্বিঘ্ন হয়নি।
রমজানের ব্যাপক পূর্ব প্রস্তুতি থাকে প্রতি বছর। গত দুই বছর করোনার কারণে সবকিছু ছিল অন্য রকম। মানুষের জীবন ধারা ছিল প্রায় অস্বাভাবিক। এবার করোনার প্রকোপ কম থাকায় সবকিছু ফিরেছে স্বাভাবিক ধারায়। সরকারের পক্ষ থেকেও ছিল প্রস্তুতি। বিশেষ করে রমজানে মানুষের ভোগান্তি হয় দ্রব্যমূল্যের কারণে। সরকার কয়েক মাস আগে থেকেই পণ্য সরবরাহ স্বাভাবিক রেখে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের প্রস্তুতি গ্রহণ করে থাকে। এবারও তাই করা হয়েছে। রমজান উপলক্ষে আলাদা করে দ্রব্যমূল্য অস্বাভাবিক হয়ে ওঠেনি। রমজানের সবচেয়ে ভোগান্তি হচ্ছে যানজটে। প্রতি বছর রমজানের সময় যানজট নিরসনে অফিস ও হাটবাজারের সময়সূচীতে কিছুটা পরিবর্তন আনা হয়। বন্ধ থাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। করোনার কারণে দুই বছর সবকিছু অস্বাভাবিক থাকার কারণে এবার তেমন কোন বিধিনিষেধ নেই। ক্ষতি পোষাতে খোলা রাখা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এ কারণেও বেড়েছে যানজন।
বিবিয়ানা গ্যাস ক্ষেত্রের ছয়টি কূপ হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাজধানীসহ সারাদেশেই দেখা দিয়ছে গ্যাস সঙ্কট। কূপগুলো থেকে গ্যাসের সঙ্গে বালি উঠে আসায় বাধ্য হয়ে এগুলো বন্ধ করা হয়েছে। পেট্রোবাংলা চেষ্টা করছে দ্রুত পরস্থিতি সামাল দেয়ার। চৈত্রের দাবদাহে নগরীর বিভিন্ন স্থানে দেখা দিয়েছে পানি সঙ্কট। ঢাকা ওয়াসার পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, পানি সরবরাহ স্বাভাবিক রয়েছে। এর পরও সঙ্কট সৃষ্টির কারণ হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে পানির অতিরিক্ত ব্যবহার। তীব্র গরমের সময় পানির ব্যবহার বেড়ে যায়। এখনও তাই হচ্ছে। সঙ্কট কমাতে এই সময় পানির অপচয় রোধের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে বলেছেন, আমাদের বিশাল পানি সম্পদ রয়েছে। এই পানি নিজ দেশে ব্যবহারের পরও আমরা বিদেশে সুপেয় পানি সরবরাহ করতে পারি। তবে মনে রাখতে হবে কোন সম্পদই অফুরন্ত নয়। অপচয় করলে তা দ্রুত ফুরিয়ে যেতে পারে। এজন্য পানির অপচয় বন্ধ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর কথার সূত্র ধরে বলা যায়, চাহিদার কথা বিবেচনা করে পানির অপচয় বন্ধ করতে পারলে তীব্র গরমেও সবার জন্য পানির প্রত্যাশা নিশ্চিত করা সম্ভব।