নবীগঞ্জে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় ৩ ছাত্রকে পিটিয়ে আহত

1

হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জের নবীগঞ্জে ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় ৩ ছাত্রকে পিটিয়ে আহত করার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শনিবার দুপুরে উপজেলার ইনাতগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে এই ঘটনা ঘটেছে। আহতরা হচ্ছে- হাবিবুর রহমান, তোফায়েল ও আলকাব হোসেন।
এরমধ্যে গুরুতর আহত হাবিবুর রহমানকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্য দুজনকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষ্যদর্শী সূত্রে জানা যায়, ইনাতগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র হাবিবুর রহমান, তার সহপাঠী তোফায়েল ও আলকাবসহ কয়েকজন কলেজ ক্যাম্পাসে বসা ছিলেন। এ সময় সাইন বোর্ড এলাকার বাসিন্দা সুহেল আহমেদ (ডিগ্রী ফাইনাল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী) এক ছাত্রীকে উত্যক্ত করছিল। এ সময় হাবিবুরসহ তার বন্ধুরা এর প্রতিবাদ করেন। এ নিয়ে সুহেল আহমদের সাথে হাবিবুর ও তার বন্ধুদের বাকবিতন্ডা শুরু হয়। এক পর্যায়ে ছাত্রী উত্যক্তকারী সুহেলের পক্ষ নেয় সজীব, আদিল, সাহান, নিয়াজ, জাহানসহ অর্ধশতাধিক বহিরাগত ও কলেজ ছাত্র। তারা হাবিবুর রহমানসহ ৩ জনের ওপর হামলা চালায়। মধ্যযুগীয় কায়দায় ৩ ছাত্রকে পিটিয়ে জখম করে সুহেলের লোকজন। এক পর্যায়ে ৩ জনকে কলেজের অফিসে নিয়ে গিয়ে পিঠানো হয়। প্রায় ৪০ মিনিট ৩ শিক্ষার্থীর ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। এই দৃশ্য দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ভয়ে হামলাকারীদের হাত থেকে ৩ শিক্ষার্থীকে রক্ষায় তারা এগিয়ে যাননি। এ ঘটনায় কলেজ ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে একদল পুলিশ নিয়ে ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ কাওসার আহমেদ ঘটনাস্থলে যান। তবে এর আগেই হামলাকারীরা বীরদর্পে বেরিয়ে যায়।
স্থানীয়রা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ির দূরত্ব ৫ মিনিটের। কিন্ত প্রশাসনের লোকজন যথা সময়ে ঘটনাস্থলে যায়নি। এটা দু:খজনক।
হামলায় আহত হাবিবুর, তোফায়েল ও আলকাব বলেন, ইভটিজিং করবে আবার প্রতিবাদ করলে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করবে। এমন পরিস্থিতি হলে বাহির থেকেতো শিক্ষার্থী আসবেনা। হামলাকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি করছি।
ইনাতগঞ্জ ফাঁড়ির ইনচার্জ কাওছার আলম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি।
কলেজের উপাধ্যক্ষ নুরুল আমিন বলেন, অধ্যক্ষ ছুটিতে রয়েছেন। হামলার ঘটনাটি দু:খজনক। আমরা (শিক্ষকরা) থামানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু পারিনি। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরসহ সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ মহিউদ্দিন বলেন, ঘটনাটি দু:খজনক। কলেজ ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।