সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন ॥ হিউম্যান হলার চালক শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে অর্ধশত কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

30

স্টাফ রিপোর্টার :
জেলা হিউম্যান হলার চালক শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। একই সঙ্গে ১৮ বছর যাবত নির্বাচন না দিয়ে এ কমিটির বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে ক্ষমতা ভোগেরও অভিযোগ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন সংগঠনটির তামাবিল শাখার সাবেক সভাপতি শাহাব উদ্দিন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, সিলেট জেলায় আনুমানিক ২৫০০ গাড়ি রয়েছে। চলাচলকারী প্রতি গাড়ী থেকে ৪০ টাকা হারে প্রতিদিন এক লক্ষ টাকা আদায় করা হয়। মাস শেষে এ টাকার পরিমাণ হয় ৩০ ত্রিশ লক্ষ টাকা। এতে ১৮ বছরে পাঁচ কোটি চল্লিশ লক্ষ টাকা আত্বসাৎ করেছেন বর্তমান অনির্বাচিত সভাপতি রুনু মিয়া মঈন। প্রতি গাড়ী থেকে লাইন খরচ বাবদ ছয়শত টাকা প্রতিমাসে দিতে হয়। এতে ২৫০০ গাড়ি হতে প্রতি মাসে আয়কৃত টাকার পরিমাণ পনের লক্ষ টাকা। আর নতুন গাড়ী কিনে লাইনে চালাতে হলে রুনু মিয়া মঈনকে প্রতি গাড়ীতে ১৫ থেকে বিশ হাজার টাকা দিতে হয়। যেকোন গাড়ী মালিকানা পরিবর্তন হলেও ভর্তির নামে প্রতিটি গাড়ি থেকে বিশ হাজার টাকা দিতে হয়। গত ১৮ বছরে ২৫০০ গাড়ী নতুন ক্রয় ও মালিকানা পরিবর্তন করা হয়। এতে টাকার পরিমাণ চার কোটি টাকা। এছাড়া শ্রমিক সদস্য ফি ছয়শত টাকা করে মোট ৫০০০ হাজার শ্রমিকের কাছ থেকে ত্রিশ লক্ষ টাকা ও রিনিউ বাবত প্রতি দুই বছর পর পর একশত বিশ টাকা করে মোট ৫০০০ শ্রমিকের নিকট থেকে আরো চুয়ান্ন লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেন রুনু । বিগত ১৮ বছরে মোট আটচল্লিশ কোটি চৌরানব্বই লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন রুনু মিয়া মঈন। এভাবেই তিনি নিজের ইচ্ছামত শ্রমিক ইউনিয়নের নাম ব্যবহার করে টাকা আত্মসাৎ করে যাচ্ছেন।
নির্বচন না দিয়ে বেআইনিভাবে ক্ষমতা আকড়ে থাকার অভিযোগ করে তিনি বলেন, সিলেট জেলা হিউম্যান হলার চালক শ্রমিক ইউনিয়ন, রেজিঃ নংঃ চট্ট- ১৩২৬ বিগত ৩২ বছর আগে রেজিষ্ট্রেশন প্রাপ্ত হয়। সিলেট জেলার সর্বস্তরের হিউম্যান হলার চালক শ্রমিকদের সকল প্রকার সমস্যা সমাধান এবং শ্রমিকদের সার্বিক কল্যাণ ও উন্নয়ন করা এই সংগঠনের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে। কিন্তু বিগত প্রায় ১৮ বছর যাবত আমাদের শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান অনির্বাচিত সভাপতি রুনু মিয়া মঈন, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইনছান আলী এবং ভারপ্রাপ্ত কোষাধ্যক্ষ আরিফুল ইসলাম আরিফ ছলেবলে-কৌশলে কমিটির নির্বাচন না দিয়ে নিজেরাই বারবার ক্ষমতা ভোগ করছেন। যা শ্রম আইনের পরিপন্থি।
এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, সম্প্রতি গত ২৮ মার্চ সিলেট আঞ্চলিক শ্রম দপ্তর এর রেজিষ্টার একটি পত্র দিয়ে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার নির্দেশ দিয়েছেন। তবুও নির্বাচনের কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না বর্তমান কমিটি।
তিনি আরও বলেন, রুনু মিয়া মঈন গং সিলেট জেলা হিউম্যান হলার শ্রমিক ইউনিয়নের ক্ষমতা অবৈধভাবে দখল করে রেখেছেন। নির্বাচনের কথা বললে সাধারণ শ্রমিকদের বহিষ্কার লাইন সাসপেন্ড এবং মিথ্যা মামলা এবং হামলা করে দমন করে রাখেন। সাবেক বেবি টেক্সি চালক অবৈধ সভাপতি রুনু মিয়া মঈন শ্রমিকদের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করে শাহপরান এলাকায় বড় বড় বাড়ি তৈরি করে শ্রমিকদের টাকা দিয়ে নিজে বিলাসবহুল গাড়ি নিয়ে চলাচল করেন। রুনু মিয়া মঈন ১৯৮৫ ইং সালে বেবি ট্যাক্সি চালানোর মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন।
এ সময় তিনি রুনু মিয়া মঈনদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ ও শ্রম দপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দুলাল মিয়া, মো. আব্দুল হক, মো. মুক্তার আলী, মো. নাসির উদ্দীন, নুরুজ্জামান, রুবেল, শিমুল, আব্দুর রহমান প্রমুখ।