কাজিরবাজার ডেস্ক :
দীর্ঘ দুই বছর পর ফের স্বাভাবিক হচ্ছে স্কুল-কলেজের পাঠদান কার্যক্রম। এজন্য রাজধানীর শীর্ষ পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে নানা ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। কোথাও কোথাও ক্যাম্পাসের ভেতরেও পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হয়েছে। ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে প্রবেশ ও বাইরে বের করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের পর ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর অনলাইনে চলতে থাকে শিক্ষা কার্যক্রম। কিন্তু দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় হাঁপিয়ে ওঠেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এরপর বিভিন্ন সময় স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার দাবি ওঠে।
পরিস্থিতি বিবেচনায় গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর সীমিত পরিসরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় দ্বিতীয় দফায় ২১ জানুয়ারি ফের বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় এক মাস পর ২২ ফেব্রুয়ারি শুধু মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি ক্লাস চালু করা হয়। এরপর ২ মার্চ সীমিত আকারে প্রাথমিক স্তরে পাঠদান শুরু হয়। মঙ্গলবার থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পুরোদমে ক্লাস কার্যক্রম শুরু করতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল সালাম সোমবার বলেন, আমাদের ৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী করোনা টিকার দুটি ডোজ পেয়েছে। এতোদিন সীমিত আকারে সব শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হয়েছিল। তবে আগামীকাল থেকে সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত স্বাভাবিক রুটিনে ক্লাস করানো হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি এড়াতে গেটের সামনে হাত পরিষ্কার করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ ও বের করা হবে। কয়েকটি শ্রেণি মিলে একসঙ্গে ছুটি দেওয়া হবে। একটি গ্রুপের ছুটির পর তারা বের হওয়ার ১০ মিনিট পর অন্যরা প্রবেশ করবে।
সিদ্ধেশ্বরী গার্লস হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. সাহার উদ্দিন মোল্লা বলেন, পুরোদমে ক্লাস শুরু হবে বলে নতুন করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হয়েছে। প্রভাতী শাখার শিক্ষার্থীরা সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা ১১টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ও দিবা শাখার শিক্ষার্থীদের দুপুর সোয়া ১২টা থেকে বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত ক্লাস নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের প্রবেশ ও বের করতে চারটি গ্রুপ করা হবে। ধাপে ধাপে আলাদা সময়ে প্রবেশ ও বাইরে যাবে। স্বাস্থ্যঝুঁকি এড়াতে এসব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আজিমপুর গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মেহেরুন নেসা জানান, নতুন করে পুরো ক্যাম্পাস পরিচ্ছন্নতার কাজ করা হয়েছে। ধাপে ধাপে শিক্ষার্থীরা যাতে প্রবেশ ও বের হতে পারে সেই প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে গত সপ্তাহে প্রাথমিক ও প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শ্রেণি কার্যক্রমের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের সচিব আমিনুল ইসলাম খান জানান, প্রাথমিক স্তরে ক্লাস চলছে পুরোদমে। শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে ছয়দিনই স্কুলে যাচ্ছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য প্রাক-প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সশরীরে ক্লাস উন্মুক্ত করতে সময় নেওয়া হয়েছে। এখন তাদের জন্যও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দ্বার খুলে দেওয়া হবে। ১৫ মার্চ থেকেই তাদের সশরীরে ক্লাস নেওয়া হবে।