আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেছে নতুন নির্বাচন কমিশন। সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের কর্মকৌশল নির্ধারণে কমিশন বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে। আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে রবিবার শিক্ষাবিদদের দিয়ে শুরু হয়েছে প্রথা সংলাপ। ধারাবাহিকভাবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, নির্বাচন বিশেষজ্ঞ ও সাংবাদিকদের সঙ্গে সংলাপ করবে ইসি। সবার শেষে সংলাপ হবে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে। অতীতেও নির্বাচন কমিশন এ ধরনের সংলাপ করেছে। মাঝে মধ্যে কোন কোন রাজনৈতিক দল বর্জন করেছে সংলাপ। ইসির প্রথম দিনের সংলাপে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ৩০ শিক্ষাবিদকে। এর মধ্যে অংশ নিয়েছেন মাত্র ১৩ জন। অনুপস্থিতির দীর্ঘ তালিকা অপ্রত্যাশিত। গ্রহণযোগ্য নির্বাচন শুধু ইসির একার দায়িত্ব নয়। এমন একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানে সকল নাগরিকের দায়িত্ব রয়েছে। এ কারণেই ইসি সকল শ্রেণী-পেশার মানুষের মতামত গ্রহণ করে থাকে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেছেন, ‘অনেকের অসুবিধা থাকতে পারে। যারা এসেছেন তাদের সঙ্গে খুব ভালভাবেই আলোচনা হয়েছে। সবাই এলে আমরা আরও বেশি খুশি হতাম।’
শিক্ষাবিদদের উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘অতীতে কিছু নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। আগামী নির্বাচন যেন অধিক অংশগ্রহণমূলক হয় সেজন্য সবার মতামত নেয়া হচ্ছে। জাতীয় সংসদ ও স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য ইসি কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সকল রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ। এজন্য কমিশন কি কি করতে পারে সে বিষয়ে আমরা সকলের মত নেয়ার চেষ্টা করছি।’ নতুন সিইসির বক্তব্য বেশ স্পষ্ট ও আন্তরিক। ইতোমধ্যে সিইসি হাবিবুল আউয়াল এবং কমিশনারদের নিয়ে অনেক বিশ্লেষণ হয়েছে। কঠোর সমালোচকরাও এই নিয়োগের বিরুদ্ধে তেমন যুক্তি দেখাতে পারেননি। বিরোধীদলের পক্ষ থেকেও জোরালো বিরোধিতা শোনা যায়নি। এজন্য নতুন ইসির কাছে মানুষের প্রত্যাশা তৈরি হচ্ছে। বৈঠকে অংশ নিয়ে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক জাফর ইকবাল ইসির উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা যত ভাল কাজই করেন, গালি খেতেই হবে। সবার কাছে নিরপেক্ষ হওয়া সম্ভব নয়। তাই গালি নিয়ে ভাববেন না। আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে যেন বলতে পারেন কাজ ঠিক করেছি।’ একই সঙ্গে তিনি তার প্রত্যাশার কথাও বলেন, ‘স্বপ্ন দেখি এমন নির্বাচন হবে যেখানে বিজয়ী এবং পরাজিত দল দুটিই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল হবে।’ তার এই প্রত্যাশার সঙ্গে সুর মিলিয়ে আমরাও বলতে চাই, সকলের মত নিয়ে একটি সঠিক নির্বাচন কৌশল ঠিক করা হোক। কে কি বলবে এ নিয়ে ভাবার দরকার নেই। দেশের সকল মানুষেরই প্রত্যাশা একটি গ্রহণযোগ্য সুষ্ঠু নির্বাচন।