স্পোর্টস ডেস্ক :
ব্যক্তিগত জীবনের ওপর দিয়ে অনেক ঝড় বয়ে গিয়েছে সোহেল রানার। সময় গড়ানোর সঙ্গে নিজেকে গুছিয়ে নিয়ে ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন এই মিডফিল্ডার। এবার দলের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে হয়ে উঠলেন ত্রাতা! (বুধবার) সিলেটে প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানকে ১-০ গোলে হারিয়েছে আবাহনী লিমিটেড, জয়সূচক গোলটি এসেছে এই সোহেল রানার পা থেকেই।
এমনিতে শক্তির পার্থক্যে আবাহনীর কাছাকাছি নেই মোহামেডান। স্থানীয় কিংবা বিদেশি খেলোয়াড়দের পার্থক্যও বেশ। তারপরও দুই দলের লড়াই মানে অন্যরকম উত্তেজনা-লড়াই। সেই লড়াইয়ে উতরে গেছে ছয়বারের লিগ চ্যাম্পিয়নরা। তবে জিততে বেশ ঘাম ঝড়াতে হয়েছে মারিও লেমসের শিষ্যদের।
এমনিতে নিয়মিত একাদশের কয়েকজন চোটে। সবশেষ দলের মূল স্ট্রাইকার ব্রাজিলিয়ান দোরিয়েল্তনও নেই। তাকে ছাড়া প্রতিপক্ষের গোলমুখ উন্মুক্ত করা কঠিন হয়ে পড়েছিল। নাবীব নেওয়াজ জীবন-জুয়েল রানা চেষ্টা কম করেননি। কিন্তু একটির বেশি গোল আসেনি। তারুণ্যনির্ভর দল নিয়ে মোহামেডান চোখে চোখ রেখে খেলার চেষ্টা করেছে। গোল করার সুযোগ পেয়েছিল সাদা-কালোরাও। ভাগ্য তাদের সহায় হয়নি।
সিলেট জেলা স্টেডিয়ামে আক্রমণে মোহামেডানের চেয়ে আবাহনী এগিয়ে ছিল। ম্যাচের শুরুর দিকে উত্তেজনা দেখা দেয়। ৩ মিনিটের সময় শহিদুল আলম সোহেল ও ওবি মনেকের মধ্যে হাতাহাতির উপক্রম। রেফারি মোহামেডানের ইয়াসমিন ও ওবি মনেকে এবং সোহেলকে হলুদ কার্ড দেখিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। যদিও ম্যাচের গতি ঠিক রাখতে রেফারিকে পরবর্তীতে দুই দলের হাফ ডজনের বেশি খেলোয়াড়কে হলুদ কার্ড দেখাতে হয়েছে।
৮ মিনিটের সময় আবাহনীর দুর্ভাগ্য বলতে হবে। কলিনদ্রেসের ডান প্রান্তের কর্নারে জুয়েল রানা ৬ গজ দূরত্ব থেকে ভলি পোস্টে লেগে ফিরে আসলে সমর্থকরা হতাশ হয়। তিন মিনিট পর মোহামেডানও আক্রমণে ওঠে। শেখ গালিবে নেওয়াজের থ্রু থেকে সুলেমানে দিয়াবাতে বক্সে ঢুকে লক্ষ্যে শট নেওয়ার আগেই মিলাদ শেখ সোলায়মানি ক্লিয়ার করেন।
২৮ মিনিটে আবাহনীকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নাবীব নেওয়াজ জীবনের পাসে বক্সের বাইরে থেকে সোহেল রানা অরক্ষিত অবস্থায় ডান পায়ের বুলেট গতির শটে জাল কাঁপান। গোলকিপার সুজন বলের লাইনে ঝাঁপালেও কিছুই করতে পারেননি। গোল করেই নিজেদের টেন্টে গিয়ে ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর ভঙ্গি করে উদযাপন করেছেন গোল।
৩৭ মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে জুয়েল রানার শট পোস্টের বাইরে দিয়ে গেলে ব্যবধান বাড়ানো যায়নি।
এগিয়ে থেকে বিরতির পর আক্রমণে চাপ ধরে রেখে আবাহনী চেষ্টা করেছে ব্যবধান বাড়ানোর। কিন্তু সফল হতে পারেনি। ৫৪ মিনিটে রাফায়েল অগাস্তোর লবে দানিয়েল কলিনদ্রেস বক্সে ঢুকে সাইড ভলি নিলেও তা গোলকিপার জায়গা ছেড়ে একটু দূরে এসে তালুবন্দি করেন।
৭৬ মিনিটে মোহামেডান সুবর্ণ সুযোগটি হারায়। ওবি মনেকের ফ্রি-কিক গোলকিপার শহিদুলের হাত ছুঁয়ে পোস্টে লেগে বাইরে চলে গেলে সমতায় ফেরা হয়নি। শেষের দিকে দুই দলই চেষ্টা করেছে। তবে আবাহনীর জয়ে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি মোহামেডান।
আবাহনী লিমিটেড ৫ ম্যাচে চতুর্থ জয়ে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে উঠে এসেছে। সমান ম্যাচে মোহামেডান প্রথম হারে আগের ৮ পয়েন্ট নিয়ে চতুর্থ স্থানে।
দিনের অন্য ম্যাচে শেখ জামাল ১-০ গোলে হারিয়েছে শেখ রাসেলকে।