জকিগঞ্জের দুই রিটার্নিং কর্মকর্তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

9

স্টাফ রিপোর্টার :
জকিগঞ্জের ইউপি নির্বাচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত দুই রিটার্নিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীব ও আরিফুল হককে দুইদিনের জেলগেট জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সোমবার ১৭ জানুয়ারি জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চৌকি আদালতে পুলিশের চাওয়া ৫দিনের রিমান্ড শুনানি শেষে ম্যাজিস্ট্রেট শ্যাম কান্ত সিনহা দুপুর পৌনে ১ টার দিকে তাদেরকে ২ দিনের জেলগেট জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ দেন।
রিমান্ড শুনানিতে রাষ্ট্র পক্ষে অংশ নেন সিএসআই নুর হোসেন ও আসামী পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন এবং এডভোকেট কাওসার রশিদ বাহার। শুনানি শেষে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জকিগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত সুমন চন্দ্র সরকার।
অন্যদিকে দুই রিটার্নিং কর্মকর্তাকে আদালতে হাজির করার খবরে সোমবার সকাল থেকে আদালত প্রাঙ্গণে এসে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন ইউপি নির্বাচনের প্রায় অর্ধশত প্রার্থীরা। বিক্ষোভে বিক্ষুব্ধ প্রার্থী ও সাধারণ মানুষ শাদমান সাকীব ও আরিফুল হকের শাস্তি চেয়ে নানা শ্লোগান দিয়ে পুন:নির্বাচনের দাবী জানান।
উল্লেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি পঞ্চম ধাপের ইউপি ভোটের দিন বিকেল ৩টা ৪০ মিনিটের সময় জকিগঞ্জের মরিচা ভোট কেন্দ্রের সামনে থেকে চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীর সিল দেয়া ও খালি ব্যালট পেপার মোট ১২শ, মুড়ি বই ৮টি, ব্যালেট বাক্সের সিলগালা লক ৮টি, নগদ টাকা ১ লাখ সাড়ে ২১ হাজার, ফেন্সিডিলের খালি বোতল, কালো রঙের ঢাকা মেট্রো-ঠ ১৩-৭০২৮ গাড়ীসহ হাতেনাতে সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এম কাজী এমদাদুল ইসলাম, পুলিশ সুপার (এসপি) ফরিদ উদ্দিন পিপিএম ও জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো. শুক্কুর মাহমুদ মিয়ার হাতে ধরা পড়েন রিটার্নিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীব ও আরিফুল হক। তাৎক্ষণিক কাজলসার ইউপি ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। সুলতানপুর ইউপির গণিপুর ভোটকেন্দ্রেও সীল মারা ব্যালেট পেপার বাক্সে ভরার ঘটনায় উত্তেজিত ভোটাররা ঐ কেন্দ্রের ব্যালেট বাক্স ছিনিয়ে নিয়ে পুকুরে ফেলে দিলে গণিপুর কেন্দ্রের ভোটগ্রহণও স্থগিত করা হয়।
এ ঘটনায় দুই রির্টানিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মরিচা ভোট কেন্দ্রের ইনচার্জ জৈন্তা থানার এ এসআই আব্দুল হাকিম বাদী হয়ে স্থানীয় সরকার আইনে জকিগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃত শাদমান সাকীব (৩২) উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও আরিফুল হক (৩৬) উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা। নির্বাচনে তারা দুজন রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। ৬ জানুয়ারি রিটার্নিং কর্মকর্তা শাদমান সাকীবকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তা আরিফুল হক থানা হাজতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে চিকিৎসার জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত সপ্তাহে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জকিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই দুই কর্মকর্তার ৫ দিন করে রিমান্ড আবেদন করেছিলেন। আদালত শুনানির জন্য ১৭ জানুয়ারী নির্ধারণ করেন।