নবীগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
নবীগঞ্জে সিনোমার গল্পের মত বেঁচে ফিরলো সৌদি প্রবাসী তারেক মিয়া (২৮)। জীবিকার তাগিদে প্রায় ৪ বছর পূর্বে পাড়ি জমান দূর প্রবাস সৌদি আরবে। সেখানে ভালোই চলছিল তার জীবন যাপন। হঠাৎ শারীরিক অসুস্থতা দেখা দিলে স্থানীয় (সৌদি আরব) কিং আব্দুল আজিজ হসপিটালে ভর্তি হন তারেক। এ সময় চিকিৎসকরা জানান, তার দু’টি কিডনি বিকল হয়ে পড়েছে। বেঁচে থাকার কোনো আশাই নেই। দীর্ঘ ৪ বছর নিজ কর্মস্থল সৌদি থাকার পর আকস্মিক এ দুঃসংবাদটি পায় তারেক। সে নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের গুজাখাইর গ্রামের কামরুল হাসানের পুত্র। হাস্যজ্জ্বল তারেক বেঁচে থাকার আশা বাদ দিয়ে বিকল দু’টি কিডনি নিয়ে গত (২ সেপ্টম্বর) সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে আসে। দু’টি কিডনি বিকল হওয়ার ফলে ব্যয়বহুল চিকিৎসা ও নিরাশ জীবন নিয়ে হতাশা দেখা দেয় তারেক এর পরিবারে। অপরদিকে সৌদি প্রবাসী তারেক দেখতেও নায়েক এর মত। এত সুন্দর চেহারার অধিকারী ঠগবগে যুবকের করুন এই পরিণতি মেনে নিতে পারেননি তার এলাকার লোকজনসহ দেশ বিদেশের মানুষ। তারক এর ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ভাইরাল হয়ে যায় তার অসুস্থতার সংবাদ। এরপর দেশ বিদেশ থেকে তারেক এর চিকিৎসার জন্য টাকা পাঠাতে থাকেন বিভিন্ন শ্রেণীপেশার লোকজন। এতে ও বেঁচে ফেরার আশা ছিল না তারেকের। বোনের ছেলে কিডনির কারণে মৃত্যুবরণ করবে মেনে নিতে পারেননি তারেকের মায়ের বোন রেহেনা আক্তার (৩৯)। নিজরে একটি কিডনি দান করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তারেকের দিকে। এতে করে বেঁচে থাকার কিছুটা সঞ্চয় তৈরী হয় তারেক ও তার পরিবারের লোকজনের মধ্যে। দীর্ঘ ৬ মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর বেঁচে থাকার আশা বুকে বেঁধে গত ২১ ডিসেম্বর রাজধানী ঢাকার সিকেডি এন্ড ইউরোলজী হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে একটি কিডনি তার খালা রেহেনার শরীর থেকে ট্রান্সফার করা হয় তারেক এর শরীরে। অপারেশনের পর থেকে একটি কিডনি পেয়ে তারেক এর শরীরে উন্নতি দেখা দিয়েছে। এখন বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে তারেক। রেহেনা আক্তারের ত্যাগ ও দেশ বিদেশ থেকে সাহায্য পাঠানো ব্যক্তিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানায় তারেক। এ ব্যাপারে তারেক জানান, বেঁচে থাকার কোনোই আশাই ছিল না। বন্ধু, বান্ধব, আত্মীয়স্বজন, দেশ বিদেশের বিভিন্ন শ্রেণীপেশার লোকজনের আর্থিক সাহায্য পেয়ে আমি অভিভূত। আমি এখন সুস্থতাবোধ করছি। দেশবাসীসহ সকলের কাছে রোগমুক্তির জন্য দোয়া চাচ্ছি। আপনারা সকলে আমার জন্য দোয়া করবেন।