প্রবাসী আয় বৃদ্ধি

5

খ্রিস্ট নববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তরফ থেকে উপহার পাওয়া গেছে প্রবাসী বাংলাদেশী শ্রমজীবীদের জন্য। ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে প্রবাসী আয় বা রেমিটেন্স বৈধ পথে পাঠালে তারা ২ শতাংশ হারে নগদ প্রণোদনা পেতেন। এবারে এর হার আরও বেড়েছে দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ প্রণোদনার নতুন হার হয়েছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ, যা রবিবার থেকে প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। উল্লেখ করা আবশ্যক, প্রবাসী আয়ে নগদ প্রণোদনা দেয়ায় বিশ্বব্যাপী করোনা অতিমারীর প্রবল প্রকোপের মধ্যেও বিগত দু’বছরে রেকর্ড পরিমাণ বেড়েছে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার আয়। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসী আয় হয়েছে দুই হাজার ৪৮০ কোটি ডলার, যা ২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ৩৬ শতাংশ বেশি। বাংলাদেশী মুদ্রায় এর পরিমাণ ২ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ধরে)। বিদায়ী অর্থবছরে পণ্য রফতানি করে আয় হয়েছে ৩ হাজার ৮৭৬ কোটি ডলার। অর্থাৎ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে রফতানি আয়ের পরেই রয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রেরিত অর্থের পরিমাণ। তবে ২০২১-২২ অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ৫ মাসে প্রবাসী আয় কমেছে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ২১ শতাংশ। মূলত ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় হুন্ডির ও অন্যান্য মাধ্যমে প্রবাসী আয় বেশি পাঠানো হচ্ছে দেশে। অর্থমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, ৪৯ শতাংশ প্রবাসী আয় আসে আনুষ্ঠানিক চ্যানেলে। ৫১ শতাংশ আসে অনানুষ্ঠানিক চ্যানেলে। নতুন করে প্রণোদনার হার বাড়ানোর ফলে চলতি অর্থবছরের শেষে দুই হাজার ৬০০ কোটি ডলার প্রবাসী আয় আসবে বলে আশাবাদী অর্থমন্ত্রী।
প্রবাসী আয় বাড়ানোর জন্য সম্প্রতি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক সোনালী ব্যাংকের উদ্যোগে চালুকৃত রেমিটেন্স সেবা ‘ব্লেজ’-এর মাধ্যমে বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশীরা দিনরাত ২৪ ঘণ্টা যে কোন সময় যে কোন মুহূর্তে স্বোপার্জিত অর্থ দেশে পাঠাতে পারছেন। এতে সময় লাগছে মাত্র কয়েক সেকেন্ড। ‘ব্লেজ’-এর মাধ্যমে টাকা পাঠালে ব্যাংকিং কার্যক্রমের বাইরে এবং ছুটির দিনেও টাকা পাঠানো যাচ্ছে যে কোন সময়। এর মাধ্যমে প্রভূত উপকৃত হচ্ছেন প্রবাসী বাংলাদেশীরা। প্রবাসী আয়ের ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিদেশী মুদ্রার মজুদ এই প্রথম অতিক্রম করেছে ৪৬ বিলিয়ন ডলার। অবশ্য এর মধ্যে আইএমএফের কিছু অনুদানও রয়েছে। তবে রিজার্ভের পরিমাণ বাড়ার জন্য প্রধান কৃতিত্বের দাবিদার প্রবাসী বাংলাদেশীরা এবং সরকার প্রদত্ত নগদ প্রণোদনা। প্রবাসী আয়ের এই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার জন্য প্রণোদনা ২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪ শতাংশ করার জন্য অর্থমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছিলেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী। যার ইতিবাচক প্রতিফলন ঘটেছে প্রণোদনার হার বাড়ানোর মাধ্যমে।