কুলাউড়া থেকে সংবাদদাতা :
কুলাউড়ায় করোনার ভ্যাকসিন নিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের টিকাদান কেন্দ্র্রে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের উপচে পড়া ভীড়ে চরম বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। এ সময় টিকা কেন্দ্রের বুথে প্রবেশের সময় লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে টিকাদান কার্যক্রম প্রায় এক ঘণ্টারও বেশি সময় বন্ধ ছিলো। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও টিকাদান কার্যক্রম স্বাভাবিক করেন।
সরেজমিন রবিবার দুপুরে টিকাদান কেন্দ্রে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীদের সাথে আলাপ করে জানা যায়, রবিবার সকাল থেকে উপজেলার উত্তর কুলাউড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও বঙ্গবন্ধু আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৬৯৮ জন শিক্ষার্থী টিকা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রে আসেন। সেখানে কোন সামাজিক দুরত্ব মানা হয়নি।
টিকা নিতে শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় টিকা দেয়ার জন্য লাইনে দাঁড়ানো নিয়ে এই দুই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাকবিতন্ডা দেখা দেয়। পরে দুই স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে টিকা কেন্দ্রের চারিপাশে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এসময় বঙ্গবন্ধু আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী ইমা ও শাকিল এবং উত্তর কুলাউড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের আরেক ছাত্রী আহত হয়। তাদের হাসপাতালের জরুরী বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হয়। এ ঘটনায় টিকাদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তার, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. আনোয়ারসহ পুলিশ প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও টিকাদান কার্যক্রম স্বাভাবিক করেন। এদিকে শিক্ষার্থীদের টিকা কার্যক্রম নিয়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হওয়াতে সাধারণ মানুষের টিকাদান কার্যক্রম ব্যাহত হয়। টিকা দিতে যাওয়া মানুষ দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে উপজেলার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ফাইজার টিকাদান শুরু হয় কুলাউড়া হাসপাতালের টিকা কেন্দ্রে। ২ জানুয়ারি পর্যন্ত ৭৫২৫ জন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীকে টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া হয়। কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তার বলেন, দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিশৃঙ্খলা তৈরী হলে একজন শিক্ষার্থী আহত হন। এতে কিছু সময় টিকাদান বন্ধ থাকে। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এটিএম ফরহাদ চৌধুরী জানান, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভুল বুঝাবোঝির কারণে পরিস্থিতি কিছুটা উত্তপ্ত হয়। আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি। এরকম পরিস্থিতি যেন না হয় সেজন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সতর্ক করে দিয়েছি এবং শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্ব স্ব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নজরদারি রাখতে বলেছি।