করোনা মোকাবেলায় দায়িত্বশীল আচরণ

10

করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে সরকারি ছুটি ও অঘোষিত লকডাউনের মধ্যে গত এক মাস বন্ধ রয়েছে শপিং মল ও মার্কেট। বেশ কয়েকটি শর্ত মেনে ১০ মে থেকে প্রতিদিন বিকেল ৪টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখার অনুমতি দিয়েছে সরকার। ঈদ সামনে রেখে দোকান খোলার সিদ্ধান্ত এলেও এ অবস্থার মধ্যে দোকান খোলার ঝুঁকি নেবেন কি না সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা। কারণ দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কয়েক দিন ধরে দ্রুত বাড়ছে। দেশের ৬৪ জেলাতেই এখন ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকানপাট খোলা আদৌ কি সম্ভব? প্রকাশিত খবরে বলা হচ্ছে, রাজধানী সহ দেশের বেশির ভাগ মার্কেটে করোনা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করার সক্ষমতা নেই। ছোট ছোট দোকানের কারণে সংক্রমণ ঠেকাতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করাও সম্ভব হবে না। এতে কেনাকাটা করতে আসা মানুষের ভিড়ে ব্যবসায়ী ও ক্রেতা উভয়ই পড়বেন করোনাঝুঁকিতে। শপিং মল খুলে দেওয়ার ঘোষণায় স্বাস্থ্য খাতসহ অন্য সব পর্যায়ের বিশেষজ্ঞদের মধ্যে উদ্বেগ আরো বেড়েছে। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মহল থেকে শুরু হয়েছে সমালোচনা। কেউ কেউ এই সিদ্ধান্তকে আত্মঘাতী বলেও অভিহিত করেছেন। করোনা সংক্রমণের বড় ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে শপিং মলগুলো।
সরকারের নির্দেশনায় দোকান খোলার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা দিয়ে সীমিত পরিসরে খোলার অনুমতি দিয়েছে সরকার। কেউ যদি মনে করেন স্বাস্থ্যবিধি মানতে পারবেন না, তিনি দোকান না-ও খুলতে পারেন। অন্যদিকে সচেতন মহল বলছে, করোনাকালে শপিং মলের বিকল্প হতে পারে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলো। এতে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করেই মানুষ নিজের প্রয়োজন মেটাতে পারে। আর মানুষের দোরগোড়ায় প্রয়োজনীয় পণ্য পৌঁছে দিয়ে সেই কাজটি করছে ই-কমার্স কম্পানিগুলো।
সুপার মার্কেট ও দোকানপাট খোলার সরকারি ঘোষণায় রাজধানীর ফুটপাতের দোকানিরাও দোকান সাজিয়ে বসার চিন্তা করছেন বলে খবরে প্রকাশ। তাঁরা বলছেন, নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান চালু করবেন। কিন্তু ফুটপাতের দোকানে আদৌ নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা কি সম্ভব? সুতরাং শপিং মল কিংবা ফুটপাত-ঝুঁকি অবশ্যই রয়েছে। আর সে কারণেই শপিং মল না খোলার ব্যাপারে বসুন্ধরা সিটি কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে ধন্যবাদ জানাতে হবে।
করোনা সংক্রমণ রোধে সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।