স্টাফ রিপোর্টার :
ওসমানীনগর উপজেলার পশ্চিম পৈলনপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামের আব্দুল একিম ওরফে আব্দুল হেকিমের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তারই প্রথম স্ত্রী রহিমা বেগমের পুত্র আব্দুল কালাম। তিনি বলেছেন, ‘বাবা আমাদের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করেছেন। এর পেছনে দূরভীসন্ধিমূলক উদ্দেশ্য রয়েছে। এতে আমরা বিব্রত অনুভব করছি।
বৃহস্পতিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বাবার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করেন তিনি।
এ সময় লিখিত বক্তব্যে আব্দুল কালাম বলেন, ‘আমার পিতা বয়োবৃদ্ধ হলেও এখনও পুরোপুরি শক্ত সামর্থ্য মানুষ। তিনি নানাকারণে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের উপর হামলার চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন। সম্প্রতি আমাদের উপর হামলা করার জন্য আমাদের ঘরের পাশে রড হাতে নিয়ে তার বিচরণের দৃশ্য সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাবা আব্দুল একিম গত ২০ ডিসেম্বর ওসমানীনগরে আমাদের বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ মিথ্যা অভিযোগ তুলে ধরে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছেন। এ সময় আমাদের গ্রামের কেউ তার সঙ্গে ছিলেন না। যারা ছিলেন তারা অন্য গ্রামের লোক।’
নিজেরা গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করছেন দাবি করে তিনি আরও বলেন, ‘পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে পিতার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করার কোনো ইচ্ছা আমাদের ছিল না। কিন্তু তিনি নিজেই আমাদেরকে সমাজে হেয় করতে গিয়ে মিথ্যে অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করে আমাদেরও উন্মুক্তভাবে কথা বলতে বাধ্য করেছেন।’
আব্দুল হেকিম সংবাদ সম্মেলনে পরিবার সম্পর্কে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য তুলে ধরেছেন দাবি করে কালাম বলেন, ‘এ সব অভিযোগ সমাজে আমাদেরকে হেয় করেছে। প্রকৃত সত্য ঘটনা হচ্ছেÑ আমার পিতার ক্রয় করা কোনো ভূমি নেই। পৈত্রিক ভূমির ব্যাপারে আদালতের শরণাপন্ন হয়ে (১৩/০৯ নম্বর) মামলা দায়েরের পর সহকারী জজ আদালত, বালাগঞ্জ আমাদের পিতা ও তার দুই ভাইয়ের প্রত্যেককে ২.৯৬ একর ভূমির হিস্যা প্রদানের রায় প্রদান করেন। সে অনুযায়ী আমার পিতা ২.৯৬ একর ভূমির মালিক। অথচ সংবাদ সম্মেলনে তিনি দাবি করেছেন তাহার ভরণপোষণ করায় তৃতীয় স্ত্রী ও সন্তানদেরকে তিনি তাঁর জমির কিছু অংশ (৪একর) হেবা ঘেষণা দিয়েছেন এবং এ জন্য আমরা নাকি ক্ষিপ্ত হয়ে জমি নিজেদের নামে লিখে দেওয়ার কথা বলেছি।’
বাবার তৃতীয় স্ত্রী দাবি করা নারী প্রকৃত অর্থে ৪র্থ স্ত্রী উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে তিনি আরও বলেন, ‘আমার মায়ের কাবিন সংক্রান্ত যে সব তথ্য তুলে ধরেছেন তাও মিথ্যে। তিনি বলেছেনÑ আমার মাকে তিনি ১৯৬০ সালের আগে বিয়ে করেছেন। অথচ কাবিন অনুযায়ী আমার মায়ের বিয়ে হয়েছে ১৯৬২ সালে। এছাড়া তিনি তার করা সবগুলো বিয়ে ১৯৬০ সালের আগে হয়েছে উল্লেখ করে বলেছেন তখন প্রথম স্ত্রীর অনুমতি নেওয়ার প্রযোজন হত না। কিন্তু, বাস্তবে দেখা যাচ্ছেÑ তাঁর সবগুলো বিয়ে ১৯৬০ সালের পরে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
প্রথম স্ত্রী রহিমা বেগমের অনুমতি ছাড়া বিয়ে করা এবং তাকে বিভিন্ন সময়ে নির্যাতনের অভিযোগে আব্দুল হেকিমের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলেও তথ্য তুলে ধরেন ছেলে আব্দুল কালাম।
পরিবারের প্রায় সবাই যুক্তরাজ্য ও কানাডা প্রবাসী উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ কারণে গ্রামে ও সিলেট নগরে আমাদের অনেকগুলো বাসা বাড়ি রয়েছে। সহায় সম্বলের দিক দিয়ে আমরা কোনোভাবেই দুর্বল নই। সুতরাং আমাদের নামে ভূমি লিখে দেওয়ার দাবি জানানোর অভিযোগটি সঠিক নয়।’