পুলিশী নির্যাতনে রায়হান হত্যা মামলা ॥ পলাতক আসামী নোমানকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ

14

স্টাফ রিপোর্টার :
নগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশি হেফাজতে রায়হান আহমদ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি পলাতক আব্দুল্লাহ আল নোমানকে আদালতে হাজির হতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার দুপুরে সিলেটের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক মো. আমিরুল ইসলাম এই নির্দেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এমএ ফজল চৌধুরী।
তিনি বলেন, পলাতক আসামি আব্দুল্লাহ আল নোমানের মালামাল ক্রোক করতে হুলিয়া ও ক্রোকি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আদালত। কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ তার বাড়িতে গিয়ে তাকে পায়নি। এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছে পুলিশ।
এমএ ফজল আরো বলেন, বুধবার ধার্য্য তারিখ ছিলো পরবর্তী আদেশের জন্য। আদালত পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি ছাপানোর নির্দেশ দিয়েছেন। কমপক্ষে দুটি পত্রিকায় নোমানের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তি ছাপানো হবে। এর মাধ্যমে তাকে অবহিত করা হবে যে, তিনি আদালতে হাজির না হলে তার অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য শুরু হবে। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ শিগগিরই হবে বলেও জানিয়েছেন এই আইনজীবী।
এর আগে গত ৫ ডিসেম্বর নোমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও তার মালামাল ক্রোকের পরোয়ানার বিষয়ে শুনানির তারিখ ধার্য্য ছিলো। কিন্তু পুলিশের কাছ থেকে সেদিন পরোয়ানার প্রতিবেদন না পাওয়ায় শুনানি পিছিয়ে ২২ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়।
এদিকে, আদালতে শুনানিকালে রায়হান হত্যার প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত এসআই আকবর হোসেন ভূঁঁইয়া, এসআই হাসান উদ্দিন, এএসআই আশেক এলাহী, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাস ও হারুনুর রশিদকে আদালতে হাজির করা হয়। এ সময় নিহত রায়হানের মা সালমা বেগমসহ অন্যান্য স্বজনরাও আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য- ২০২০ সালের ১১ অক্টোবর ভোরে নগরীর আখালিয়ার এলাকার বাসিন্দা রায়হান আহমদকে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে মারা যান তিনি। পরদিন তার স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নী কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটির তদন্তে প্রথমে পুলিশ ছিলো। পরে সে বছরের ১৩ অক্টোবর মামলাটি স্থানান্তর করা হয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কাছে। চলতি বছরের ৫ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পরিদর্শক আওলাদ হোসেন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ১ হাজার ৯০০ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। যে ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হয়, এদের মধ্যে ৫ জনই পুলিশ সদস্য। অভিযুক্ত অপরজন আব্দুল্লাহ আল নোমান, যার বাড়ি কোম্পানীগঞ্জে। তার বিরুদ্ধে ঘটনার পর ভিডিও ফুটেজ গায়েব করার অভিযোগ রয়েছে। অভিযুক্ত পাঁচ পুলিশ সদস্য কারাগারে থাকলেও নোমান এখনও পলাতক রয়েছেন।