অঙ্গসজ্জার অন্যতম দামী ধাতু সোনার গয়না। যা আবহমান বঙ্গললনার রূপসজ্জার মূল্যবান উপকরণ। এই সোনা মূলত এতদিন ছিল আমদানিনির্ভর। তার ওপর বিশ্ববাজারে স্বর্ণের মূল্য নির্ধারণে অস্থিতিশীলতা যেন দুঃস্বপ্নময়। এমন একটি পরিস্থিতিতে যখন স্বর্ণ তার যাত্রাপথ পার করছে, সেখানে নতুন এক খবর চমক সৃষ্টি করেছে। স্বর্ণ ব্যবসায়ীরা মনে করছেন আগামীতে দামী এই ধাতুটির রফতানির সম্ভাবনা। দেশের ঐতিহ্যবাহী স্বর্ণ সংগঠন বাংলাদেশ জুয়েলারি সমিতির (বাজস) নতুন সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান তানভীর স্বর্ণ রফতানির নবযাত্রার বিষয়টি অত্যন্ত জোরালোভাবে ব্যক্ত করলেন। বেসরকারী উদ্যোগে দেশে প্রথম স্থাপিত হয়েছে ‘বসুন্ধরা গোল্ড রিফাইনারি লিঃ’। আগে বাংলাদেশে এমন প্রতিষ্ঠান ছিল না। বিদেশ থেকে আমদানি করা সোনা দিয়েই অলঙ্কার তৈরি হতো। এই অলঙ্কার বাংলাদেশের বাজারের চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট ছিল না। তৈরি করা স্বর্ণ আমদানি হতো দুবাই, সিঙ্গাপুর কিংবা ভারত থেকে। নতুন সভাপতি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় প্রতিষ্ঠিত এই রিফাইনারির মাধ্যমে দেশে উৎপাদিত সোনার গয়না খুব তাড়াতাড়ি বিদেশে রফতানি করার সুযোগ তৈরি হবে। এক সময়ের সোনা আমদানি করা বাংলাদেশ ক্রমান্বয়ে বিদেশে জুয়েলারি রফতানি করার সক্ষমতা অর্জন করবে। আন্তর্জাতিক আঙিনায় এটি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যুগান্তকারী প্রভাব তৈরি করবে।
সমিতির সভাপতির ঘোষণা অনুযায়ী বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা এখন কাঁচা সোনা আমদানি করে রিফাইন করবে। রিফাইন করা সোনা থেকে তৈরি হবে নানা ডিজাইনের গয়না। এই গয়না নিজস্ব বাজারের চাহিদা পূরণ করে রফতানি হবে বিদেশে। বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশ এতদিন স্বর্ণ আমদানির কোন নীতিমালা ছিল না। এ কারণে অধিকাংশ স্বর্ণ আমদানি হতো অবৈধ উপায়ে। এইসব সোনা আটক হতো দেশে প্রবেশের সময়। আটককৃত সোনায় পাহাড় তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভোল্টে। অবৈধ পথে আমদানির কারণে সরকার বঞ্চিত হতো শুল্ক থেকে। বর্তমান সরকার একটি সমন্বিত ও যুগোপযোগী স্বর্ণ আমাদিন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। এই নীতিমালার অধীনে এখন সব ধরনের স্বর্ণ আমদানির সুযোগ তৈরি হয়েছে। এখন ব্যসায়ীরা সোনার গয়না তৈরি করে তা রফতানির চিন্তা করছেন।