শেষ মুহূর্তে জমে উঠেছে সিলেটে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ‘সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির দ্বি-বার্ষিক (২০২২-২৩) নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা। ভোটাররা প্রার্থীর যোগ্যতা অযোগ্যতার হিসেব কষছেন। নির্বাচনে প্যানেলপ্রথা প্রতিবছর থাকলেও এবার প্রথা ভেঙে স্বতন্ত্র নির্বাচন করছেন ৪ প্রার্থী। ফলে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী ২ প্যানেলের প্রার্থীদের জন্যও আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আর সাধারণ ভোটাররাও এবারের প্রথা ভাঙা প্রার্থীদের নীরবে সমর্থন জানাচ্ছেন। এছাড়া বেশ কয়েকজন উচ্চ শিক্ষিত তরুণ প্রতিভাবান ব্যবসায়ী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় জেলার সকল উপজেলার ব্যবসায়ীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ভোটারদের সাথে আলাপ করে জানাযায়, অর্ডিনারী শ্রেণীতে মো. হিফজুর রহমান খাঁন এগিয়ে রয়েছেন। তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এবার নির্বাচন করছেন। এর আগেও তিনি সিলেট চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক ছিলেন। তিনি আটাব সিলেট জোনের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে সিলেট জেলা স্কাউটস এর সহকারী কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
আগামীকাল ১১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সিলেটের ব্যবসায়ীদের বহুলপ্রতীক্ষিত এ নির্বাচন। সিলেট নগরীর ধোপাদীঘিরপারে ইউনাইটেড কমিউনিটি সেন্টারে সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিতে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড। নির্বাচন বোর্ড জানায়, সিলেট চেম্বারের ৪টি সদস্য ক্যাটাগরির মধ্যে অর্ডিনারি শ্রেণি থেকে ১২, অ্যাসোসিয়েট শ্রেণি থেকে ৬, ট্রেড গ্রুপ শ্রেণি থেকে ৩ ও টাউন অ্যাসোসিয়েশন শ্রেণি থেকে ১ জন পরিচালক নির্বাচিত হবেন। এ ২২টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪০ জন।
এর মধ্যে অর্ডিনারি শ্রেণি থেকে ১৬ জন, অ্যাসোসিয়েট শ্রেণি থেকে ১২ জন, ট্রেড গ্রুপ শ্রেণি থেকে ৩ জন এবং টাউন অ্যাসোসিয়েশন শ্রেণি থেকে ১ জন প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচনে অর্ডিনারি ভোটার সংখ্যা ১৩৪৮ জন, অ্যাসোসিয়েট ১২৪২ জন, ট্রেড গ্রুপ ৯ জন ও টাউন অ্যাসোসিয়েশন ১ জন। ১১ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের পর পরিচালকদের মধ্য থেকে সভাপতি, সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সহ-সভাপতি পদের নির্বাচন ১৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে।
৩ সদস্যবিশিষ্ট নির্বাচন বোর্ডের চেয়ারম্যান হচ্ছেন-সিলেটের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল জব্বার জলিল। ৩ সদস্যবিশিষ্ট আপিল বোরে চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন অ্যাডভোকেট এম. শহীদুল ইসলাম। সিলেট সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ ও সিলেট ব্যবসায়ী পরিষদ নামক দুটি সংগঠনের ব্যানারে দুটি প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন প্রার্থীরা।
অপরদিকে সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ ৪ ক্যাটাগরিতেই অংশ নিচ্ছে। এরমধ্যে কোন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় সিলেট সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদের ট্রেড গ্রুপ শ্রেণিতে বর্তমান সভাপতি আবু তাহের মো. শোয়েব, মো. হিজকিল গুলজার ও মো. আতিক হোসেন এবং টাউন অ্যাসোসিয়েশন শ্রেণি থেকে আমিনুর রহমান নির্বাচিত হওয়ার পথে। কেবল ঘোষণা বাকী। এখন অর্ডিনারী ও এসোসিয়েট শ্রেণিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে দুটি প্যানেলের। এছাড়া অর্ডিনারি শ্রেণিতে আরো ৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।
সিলেট চেম্বার নির্বাচনকে ঘিরে সিলেটের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতা ও প্রবীণ ব্যবসায়ী নেতারাও দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। রাজনৈতিক নেতারা দুটি প্যানেলের সভা-সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন। সুন্দর পরিবেশের সঙ্গে উত্তেজনাও আছে ব্যবসায়ীদের নির্বাচনী এ উৎসবে।
সিলেট চেম্বারের নির্বাচন পরিচালনা বোরে চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বার জলিল জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিধি মোতাবেক নির্বাচন পরিচালনা করতে গিয়ে কারো স্বার্থে আঘাত পড়লে কিছু করার নেই। তিনি বলেন, আমি নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে কারো কথায় কর্ণপাত করছি না। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে তিনি সকলের সহযোগিতা কামনা করেন। এবারের নির্বাচনে কিছু ডায়নামিক তরুণ প্রার্থীর পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থীও রয়েছেন। যারা নির্বাচিত হলে সিলেটের ব্যবসায়ীদের জন্য অসম্ভব রকমের সুফল বয়ে আনবে। বিজ্ঞপ্তি