ওসমানী ও শামসুদ্দিন হাসপাতালে বসছে অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট

7

কাজিরবাজার ডেস্ক :
সিলেটের দুটি হাসপাতালে ‘অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট’ বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ। এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে এই প্ল্যান্ট বসানো হবে। এজন্য স্থান নির্ধারণ করে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে। প্ল্যান্টগুলো স্থাপন হয়ে গেলে এ দুই হাসপাতালে অক্সিজেনের সংকট দূর হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, সিলেটের এ দুই হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে বর্তমানে কেন্দ্রীয় সঞ্চালন লাইন কিংবা সিলিন্ডারের মাধ্যমে ভ্যাকুয়াম ইনসালটেড এভাপরাটর (ভিআইই) ট্যাংক থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয় রোগীদের। দু-একদিন পরপরই গাড়ি দিয়ে অক্সিজেন নিয়ে এসে ভিআইই ট্যাংক বা সিলিন্ডার পূরণ করা হয়। ভারত থেকে আমদানিকৃত ও চট্টগ্রামে উৎপাদিত অক্সিজেনের উপর নির্ভরশীল দেশের হাসপাতালগুলো। এ প্রক্রিয়ায় সিলেটে অক্সিজেন সরবরাহে অনেক সময়ই দেরি হয়ে যায়। তখন অক্সিজেন সংকট দেখা দেয় ওসমানী ও শামসুদ্দিন হাসপাতালে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট স্থাপন করা হলে গাড়িযোগে অক্সিজেন সরবরারে প্রয়োজন পড়বে না। কার, অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট বাতাস থেকে অক্সিজেন শুষে নেয়। এরপর প্ল্যান্টে ফিল্টারসহ অন্যান্য প্রক্রিয়ায় অক্সিজেনের পরিমাণ বাড়ানো হয়। সেই অক্সিজেন সরবরাহ করা হয় হাসপাতালের রোগীদের।
জানা গেছে, গেল বছরের ২ জুন কোভিড-১৯ রেসপন্স ইমার্জেন্সি অ্যাসিসট্যান্স প্রজেক্ট (সিআরইএপি) শীর্ষক প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদন পায়। এ প্রকল্পের মোট প্রাক্কলিত ব্যয় এক হাজার ৩৬৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। ২০২০ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় কোভিড-১৯ মোকাবেলায় সক্ষমতা বৃদ্ধিসহ সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নতির লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) প্রকল্পে অর্থায়ন করছে।
এ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ৩০টি অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট বসানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব প্ল্যান্ট বসাতে প্রাক্কলিত ব্যয় ৬৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ হিসেবে একেকটি প্ল্যান্টে খরচ হবে ২ কোটি ২৫ লাখ টাকা। সিলেটে দুটি প্ল্যান্ট বসাতে খরচ হবে ৫ কোটি টাকা।
তবে গত ৩০ নভেম্বর বাংলাদেশকে ৮টি অ্যাম্বুলেন্স এবং ১০০টি অক্সিজেন জেনারেটর অনুদান দিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। ফলে ৩০টি প্ল্যান্ট বসাতে জেনারেটর কেনার সিদ্ধান্ত বাতিল হতে পারে। অনুদানের অক্সিজেন জেনারেটর দিয়েই বসানো হতে পারে প্ল্যান্ট। এক্ষেত্রে খরচ অনেকটাই কমে আসবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১০ হাজার লিটারের একটি অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট এবং শহীদ শামসুদ্দিন আহমদ হাসপাতালে ৫ হাজার লিটারের একটি প্ল্যান্ট বসানো হবে। সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের নির্দেশে এ দুই হাসপাতালে প্ল্যান্ট বসানোর স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। পরে এ বিষয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত বলেন, ‘অক্সিজেন জেনারেটর প্ল্যান্ট বসানোর জন্য আমাদেরকে স্থান নির্ধারণ করে পাঠাতে বলা হয়েছিল। আমরা পাঠিয়েছি। এখন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এ বিষয়টি দেখছেন।’ প্ল্যান্ট দুটি বসানো হলে সিলেটে অক্সিজেনের সংকট থাকবে না বলেও আশা প্রকাশ করেছেন তিনি।