কাজিরবাজার ডেস্ক :
চারদিনের সফরে এখন ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে রয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একাধিক কর্মসূচি নিয়ে সোমবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে দিল্লিতে পৌঁছান তিনি।
সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গে বিএসএফের ক্ষমতা বাড়ানোর কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে কী কথা হয়- সেদিকেই নজর ছিল গোটা ভারতের।
স্থানীয় সময় বুধবার (২৪ নভেম্বর) বিকেল ৫টার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক শেষে সেখান থেকে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের বলেন, আলোচনা ভালো হয়েছে। যা বলেছি, প্রধানমন্ত্রী সব মন দিয়ে শুনেছেন। প্রথমেই পশ্চিমবঙ্গে পর পর হয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগে কেন্দ্রের কাছে বকেয়া পাওনা অর্থ নিয়ে কথা হয়। এছাড়া কেন্দ্রীয় সরকারের যেসব প্রকল্প অনুযায়ী রাজ্য সরকার টাকা পায় সেই বাকেয়া টাকা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এরপর তিনি বলেন, বিএসএফের সীমানা বাড়ানো নিয়ে আমি আমার স্পষ্ট মত দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে বলেছি, ভারতের রাজ্যগুলি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ওপর দাঁড়িয়ে আছে। তাই পশ্চিমবঙ্গকে এর গুরত্ব দিতেই হবে। বিএসএকে বেশি ক্ষমতা দেওয়া মানে বাংলার পুলিশের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হওয়া এবং হচ্ছেও তাই। সে কারণে বিএসএফ গরীব লোকজনকে গুলি করছে। সম্প্রতি কোচবিহারে ৩ জন বিএসএফর গুলিতে মারা গিয়েছে। তবে শুধু কোচবিহার নয়, এর আগে মালদা, মুর্শিদাবাদ, দিনাজপুর, উত্তর ২৪পরগণায় একই ঘটনা ঘটেছে। বিষয়গুলো স্পষ্ট করে প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি। বলেছি বিএসএফের এই পরিধি বাড়ানো অন্তত বাংলা থেকে তুলে নেওয়া হোক।
তিনি আরও বলেন, তবে আমি সেনাবাহিনীর বিরোধিতা করছি না, তাদের সম্মান করি। প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, বাংলার সীমান্তে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় রাজ্যের কাছ থেকে সহযোগিতা চাইলে আমি নিশ্চই করব। কিন্তু ওই নিয়ম বাংলা থেকে তুলে নেওয়া হোক।
এছাড়া করোনা ভাইরাসের বকেয়া ভ্যাকসিন নিয়েও কথা হয়েছে। যেহেতু রাজ্যে স্কুল খুলেছে। তাই ১২ থেকে ১৮ বয়সীদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে ভ্যাকসিন নিয়ে আসেছে তা যেন আগে বাংলা পায়, সে অনুরোধ করেছি। এছাড়া ভারতের মধ্যে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট পাট বাংলাতেই পাওয়া যায়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকোরের নীতির কারণে সেই পাট চাষীরা বাজারে বিক্রি করতে পারছে না। তাও জানিয়েছি।
সবশেষে মমতা বলেন, বাংলায় প্রধানমন্ত্রীকে ‘বিশ্ব বাণিজ্য সম্মেলনে’ এ আমন্ত্রণ জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন ২১ বা ২২ এপ্রিল তিনি বাংলায় আসবেন। এছাড়া ত্রিপুরায় রাজনৈতিক হিংসা নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। গাড়ি থেকে নেমে সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘মমতার পাশেই আছি। আলাদাভাবে দল বদল করার কোনো প্রয়োজন নেই। ’