স্টাফ রিপোর্টার :
একটি চাঁদাবাজ ও সন্ত্রাসীচক্রের বিরুদ্ধে মামলা করে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছেন ওসমানীনগর থানার রাউতখাই গ্রামের সিদ্দেক আলীর ছেলে শাহীন মিয়া। তাদের অব্যাহত হুমকির কারণে তাকে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেফতার না করায় আসামিরা প্রতিনিয়ত তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।
গতকাল রবিবার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন শাহীন মিয়া। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসীরা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করেও ধরা ছোয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। সন্ত্রাসীরা প্রভাবশালী হওয়া পুলিশও তাদেও গ্রেপ্তার করছে না।’
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাজ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর হামলার ঘটনার বাদী, ম্যানচেস্টা যুবলীগের সহ-সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী কামাল আহমদ ওসমানীনগর থানার মোল্লারপাড়া মৌজায় তার পিতার ক্রয়কৃত ১৫ শতক ভূমিতে বাউন্ডারীসহ ভবন নির্মাণ করে আমাকে দেখাশুনা করার দায়িত্ব দেন এবং সেখানে বসবাসের অনুমতি প্রদান করেন। এই ভবন নির্মাণের শুরু থেকে বালাগঞ্জ থানার মজলিসপুর গ্রামের মো. সাজিদ আলীর ছেলে আব্দুল খালিক বিভিন্ন সময় মোবাইল ফোনে এবং ভবন নির্মাণস্থলে এসে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তিনি এই জায়গা দখল করে নেবেন বলেও হুমকি দেন। এ জায়গাটি তার বলেও দাবি করে আনছেন। আমি বিষয়টি কামাল আহমদকে জানালে তিনি দেশে এসে আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের খবর পেয়ে আব্দুল খালিক ক্ষুব্ধ হয়ে তার সহযোগীদের নিয়ে ওই ভূমি থেকে কামাল আহমদকে উচ্ছেদ করার পরিকল্পনা করে।
শাহীন মিয়ার হাত পা ও মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার হমলার কথা উল্লেক কওে তিনি বলেন, গত ১৫ সেপ্টেম্বর আব্দুল খালিকের সহযোগী সিলেট নগরীর শাহজালাল উপশহরের স্প্রীং গার্ডেনের বাসিন্দা শামীম, ওসমানীনগরের দশহাল গ্রামের আব্দুল গনির পুত্র মোস্তাক আহমদ, বালাগঞ্জের রাজাপুর গ্রামের মো. আব্দুল মতিন জায়গীরদারের পুত্র মো. গোফরান আহমদ, মোল্লাপাড়া গ্রামের রাসেল, দশহাল গ্রামের সুমন, মোল্লাপাড়া গ্রামের মো. খালিকুর রহমানের পুত্র মো. লতিফুর রহমান, বানীগাঁও গ্রামের আপ্তাব আলীর পুত্র মজনু মিয়া, এয়ারপোর্ট থানার চাতলীবন্দ গ্রামের ফরিদ আহমদ আমার ওপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। তারা রাত তিনটার দিকে বাসায় প্রবেশ করে আমার হাত পা ও মুখ গামছা দিয়ে বেঁধে দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। তাকে কুপিয়ে জখম করার অভিযোগ কওে তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদেও একাধিক কুপে আমার ডান পায়ে রক্তাক্ত জখমের পাশাপাশি পায়ের রগ কেটে যায়। মারাত্মক জখম অবস্থায় সন্ত্রাসীরা আমাকে বস্তাবন্দী করে একটি গাড়িতে তুলে শেরপুর ব্রীজের কাছে নিয়ে বস্তার মুখ খুলে তারা আবারও তাদের সাথে থাকা রড দিয়ে আমাকে প্রাণে মারার উদ্দেশ্যে বেধড়ক পেঠাতে থাকে। এক সময় তারা আমাকে মৃত ভেবে ফেলে রেখে তারা চলে গেলে ভোরে ওসমানীনগর থানা পুলিশ আমাকে উদ্ধার করে বালাগঞ্জ সরকারি হাসপাতালে প্রেরণ করে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে।
ন্যায় বিচার পেতে শঙ্কার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হলে এ ঘটনায় থানায় মামলা করতে গেলে থানা পুলিশ মামলা নিতে গড়িমশি করে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে। পরে নিরুপায় হয়ে উপরে উল্লেখিত ৯ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে মামলা দায়ের করি। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ কোনো আসামিকে গ্রেফতার করেনি। মামলা নিতে সময় ক্ষেপন করা আর এখন আসামিদের গ্রেফতার না করায় থানা পুলিশের এমন আচরণে আমি ন্যায়বিচার নিয়ে শঙ্কিত। প্রভাবশালী এক রাজনৈতিক নেতার মদদে আসামিরা বেপরোয়া কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। হয়তো ওই নেতার ইশারায়ই আমার ওপর নৃশংস ও পৈশাচিক হামলা করেও পার পেয়ে যাবে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন মহল ও সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।