ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক চলাচল বন্ধে অভিযানে নেমেছে সিসিক

6
ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা, ইজিবাইক, টমটম বন্ধে সিসিকের অভিযান পরিচালনা করছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।

স্টাফ রিপোর্টার :
সম্প্রতি উচ্চ আদালতের নির্দেশে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়নে আজ সোমবার ৮ নভেম্বর থেকে নগরীতে অভিযানে নামার ঘোষণা দিয়েছিলেন সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
তবে আজ সোমবার থেকে নয়, একদিন আগেই ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইকের বিরুদ্ধে অ্যাকশনে নেমেছেন মেয়র আরিফ। গতকাল রবিবার দুপুরে নগরীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি ব্যাটারিচালিত রিক্সা জব্দ করেন তিনি।
জানা যায়, রবিবার ৭ নভেম্বর দুপুর দেড়টার দিকে নগরীর সুবিধবাজারে ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইকের বিরুদ্ধে অভিযানে নামেন মেয়র আরিফুল হক। এ সময় মেয়রের সঙ্গে সিসিকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সিলেট মেট্রোপলিট পুলিশের একটি দল ও সিসিক কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। অভিযানকালে মেয়র আরিফ প্রায় ২০টি রিকশা জব্দ করে নগরভবনে নিয়ে আসেন।
জানা যায়, নিষিদ্ধ হওয়ার পরও সিলেটে কয়েক হাজার ব্যাটারিচালিত রিক্সা চলাচল করছে। বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় চলাচল করছে ইজিবাইক। অবৈধ এসব যানবাহনের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। এতে আহত হচ্ছেন চালক, যাত্রী ও পথচারী। এসব রিক্সা ও ইজিবাইকের ব্যাটারি চার্জের জন্যও অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। নগরীতে কয়েকটি সিন্ডিকেট মিলে এই ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইকের ব্যবসা করে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর সাথে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং বাম সংগঠনের কতিপয় শ্রমিকনেতারাও জড়িত আছেন বলে জানা গেছে। তাদের মদদেই মূলত সিলেটে চলে আসছে এই অবৈধ রিক্সা ও ইজিবাইকের ব্যবসা।
এদিকে, সিসিকের অভিযান পরিচালনার ঘোষণার পর থেকেই আন্দোলনে নেমেছেন রিক্সা মালিক-শ্রমিকরা। এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাম সংগঠনের নেতারা। গত শনিবার ৬ নভেম্বর ‘রিকশা, ব্যাটারি রিক্সা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ’র ব্যানারে রিক্সা শ্রমিকদের নিয়ে বিশাল সমাবেশ করেছেন বাসদ নেতারা। এছাড়াও বিভিন্ন বাম সংগঠনের নেতারা ওয়ার্ড ও কলোনিভিত্তিক সভা করে রিকশা মালিক-শ্রমিকদের সংগঠিত করার চেষ্টা শুরু করছেন। সিটি করপোরেশনের বিরুদ্ধে তাদেরকে উস্কে দেয়ার চেষ্টা করছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে গত শনিবার নগরীর আম্বরখানাস্থ বাসদ কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেছে ব্যাটারিচালিত রিকশা শ্রমিকরা। রিক্সা, ব্যাটারি রিক্সা-ভ্যান ও ইজিবাইক চালক সংগ্রাম পরিষদ’র ব্যানারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির মহানগর শাখার সংগঠক ও বাসদ নেতা প্রণব জ্যোতি পাল। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাসদ সিলেটের সমন্বয়ক আবু জাফর।
এদিকে, কোনো আন্দোলনই সিটি করপোরেশনের অভিযান ব্যাহত করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। রবিবার অভিযানকালে তিনি বলেন, ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক চলাচল বন্ধে উচ্চ আদালতের নির্দেশ রয়েছে। আদালতের নির্দেশ বাস্তবায়নে গতকাল থেকে অভিযান শুরু, চলবে ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত। নগরীর প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে এমন অভিযান চলবে। এতে কেউ বাধার সৃষ্টি করলে আদালত অবমাননা করবেন। যারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন, বিশৃঙ্খলা করবেন- তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।’
অভিযানকালে মেয়র আরিফ আরও বলেন, কোনো ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক চালক যদি সিসিক কর্মী হিসেবে ডেইলি বেসিসে (প্রতিদিনের ভাতাভিত্তিক) কাজ করতে চান তবে তাকে সুযোগ দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, এর আগেও নগরীতে ব্যাটারিচালিত রিক্সা চলাচল বন্ধ করতে অভিযান চালায় সিসিক। জুন মাসে অভিযান শুরুর পরই ব্যাটারিচালিত রিক্সা মালিক ও চালকরা আন্দোলনে নামেন। ওই সময় নগরভবনেও হামলা চালান তারা। এ ঘটনায় সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করা হয়।