হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান ঐক্য পরিষদের অনশন ॥ সংখ্যালঘু নিরাপত্তা আইন প্রণয়নের দাবি

4
সাম্প্রদায়িক হামলার প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের অনশন কর্মসূচির একাংশ।

কুমিল্লার নানুয়া দীঘিরপারে পূজা মণ্ডপে কুরআন পাওয়ার ঘটনায় দেশব্যাপী চলা সাম্প্রদায়িক হামলা, ভাংচুর, লুটপাট ও হত্যার প্রতিবাদে সিলেটে অনশন কর্মসূচি পালন করেছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান ঐক্য পরিষদ। শনিবার (২৩ অক্টোবর) ভোর ৬ টা থেকে বেলা ১২ টা পর্যন্ত সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদমিনারে অবস্থান নিয়ে অনশন করেন প্রতিবাদকারীরা।
পরে বেলা ১২ টায় বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র পালসহ সংহতি জানিয়ে উপস্থিত নেতৃস্থানীয়রা পানি পান করিয়ে অনশন ভাঙ্গান। এসময় উপস্থিত সকলের অনুরোধে প্রতিবাদ কর্মসূচি আরও এক ঘণ্টা বাড়িয়ে ১ টা পর্যন্ত চলে।
এ কর্মসূচিতে বক্তারা দেশব্যাপী চলা জঘন্য কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে সংখ্যালঘুদের জন্য আলাদা নিরাপত্তার আইন প্রণয়নের দাবি জানান। সেই সাথে কুরআন রাখার ঘটনায় ইকবালের দ্রুত বিচার বাস্তবায়নের সাথে সাথে নেপথ্যের কারিগরদের আইনের আওতায় এনে জনগণের সামনে উপস্থিত করার জোর দাবি জানান।
বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খৃস্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট মহানগরের সভাপতি অ্যাডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলার সভাপতিত্বে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে সম্প্রীতির নজির যুগ যুগ থেকে চলে আসছে। মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হিন্দু-মুসলিমদের পাশাপাশি সমাহিত করার মধ্যদিয়েও সেটি ফুটে উঠেছে। লাল সবুজের পতাকায় মিশে আছে সর্বধর্মীয় মানুষের রক্ত। তাই আমাদের এ সম্প্রীতিকে যারা কুলশিত করতে চায় তাদের কঠিন শাস্তি হওয়া উচিৎ এবং নজীর তৈরি করা দরকার। তা না হলে এরা বার বার এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি করবে।
বক্তারা সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনা মোটেও কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয় উল্লেখ করে বলেন, আমরা অতীতে এরকম আরও অনেক ঘটনা দেখেছি। কিন্তু কোন ঘটনায় সঠিক বিচার হয়নি। তাই এরা সাহস পায়, ইকবালদের মাধ্যমে এমন ঘটনা ঘটিয়ে ফায়দা নিতে চায়। তাই আমরা চাই দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে ইকবাল ও তার নেপথ্যের কারিগরদের বিচার করা হোক।
সিলেট জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কৃপেশ পালের তত্ত্বাবধানে মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট দেবব্রত চৌধুরী লিটনের সঞ্চালনায় চলা টানা ৭ ঘণ্টার কর্মসূচিতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, বাংলাদেশ গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি ব্যারিস্টার আরশ আলী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুল কাইয়ুম জালালী পংকি, মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি নাসিম হোসেন, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সিলেট মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সুদীপ রঞ্জন সেন বাপ্পু, ওয়াকার্স পার্টির জেলা সভাপতি কমরেড সিকন্দর আলী, সিলেট মহানগর বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক এমদাদ হোসেন চৌধুরী, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আনোয়ার হোসেন চৌধুরী সুমন, মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বিজিত চৌধুরী, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট এমাদ উল্লাহ শহীদুল ইসলাম শাহিন, সুজন সিলেটের সভাপতি ফারুক মাহমুদ চৌধুরী, জাসদ সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কিবরিয়া চৌধুরী, সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহফুজুর রহমান, বাসদ (মার্কসবাদী) সিলেটের আহ্বায়ক উজ্জ্বল রায়, বাসদ সিলেটের সমন্বয়ক আবু জাফর, সিলেট জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সুব্রত চক্রবর্তী জুয়েল, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি আল আজাদ, সিলেট মহানগর জাসদের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আহমদ, সিলেট ইসকনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী, জগবন্ধু মঠের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ বন্ধুপ্রীতম ব্রহ্মচারী, সিলেট মহানগর শ্রমিক লীগের সভাপতি এম শাহরিয়ার কবির সেলিম, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম রুমেল, মহানগর হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ জেলা শাখার সভাপতি প্রদীপ কুমার ভট্টাচার্য, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোপিকা শ্যাম পুরকায়স্থ, ঐক্য পরিষদ জেলা শাখার সহ-সভাপতি এডভোকেট বিজয় কৃষ্ণ বিশ্বাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা সুবল চন্দ্র পাল, সিলেট মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সুব্রত দেব, সিলেট বৌদ্ধ বিহারের উপাধ্যক্ষ শ্রীমৎ আনন্দ ভিক্ষু, সিলেট মহানগর হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ সিলেট মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দেব, ইয়ুথ ফোরাম ইসকনের পরিচালক শ্রীমৎ দেবর্ষি শ্রীবাস ব্রহ্মচারী, পূজা উদযাপন পরিষদ সিলেট জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রঞ্জন ঘোষ, ঐক্য পরিষদ মহানগর শাখার সহ সভাপতি ভিকন নিঝুম সাংমা, ঐক্য পরিষদ জেলা শাখার সহ সভাপতি রেভারেন্ড ফিলিপ বিশ্বাস, মহালয়া উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রণব কুমার দেবনাথ, ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ারের সভাপতি দানেশ সাংমা, মহানগর ঐক্য পরিষদের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট পঙ্কজ কুমার রায়, জন্মষ্টমী উদযাপন পরিষদের সাবেক আহ্বায়ক জ্যোতির্ময় সিংহ মজুমদার, পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সদস্য অধ্যাপক রজত কান্তি ভট্টাচার্য, মহানগর আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক তপন মিত্র। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ ও রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক নেতৃবৃন্দ। বিজ্ঞপ্তি