স্টাফ রিপোর্টার :
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্ত্রীর লাশ ফেলে রেখে যাওয়া সেই স্বামীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত খোকন মিয়া (৩০) মোগলাবাজার থানার দাউদপুর এলাকার তিরাশি গ্রামের লাল মিয়ার পুত্র। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টার দিকে তার বাড়ির পাশে থেকে তাকে গ্রেফতার করে থানা পুলিশ।
এর আগে গত বুধবার তার বিরুদ্ধে স্ত্রীকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ ওঠে। তবে খোকনের পরিবারের দাবি- আত্মহত্যা করেছেন ওই গৃহবধূ।
জানা যায়, খোকন মিয়া বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তার স্ত্রী রুমী বেগমকে (২১) সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত ডাক্তার রুমীকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপরই হাসপাতাল থেকে উধাও হয়ে যান খোকন। খোকনের সঙ্গে আসা তার ভাইকেও খুঁজে পাওয়া যায়নি হাসপাতালে। রুমী বেগমের বাবার বাড়ি এয়ারপোর্ট থানার খাদিমনগর ইউনিয়নের সাহেব বাজার এলাকায়। বুধবার রাতে রুমীর ভাই জুনেদ মিয়া বলেন, খোকনের সঙ্গে তার বোনের পারিবারিকভাবে ২ বছর আগে বিয়ে হয়। খোকন ও রুমীর সংসারে ১ মেয়ে সন্তান রয়েছে। জুনেদ বলেন, বিয়ের পর থেকেই খোকন বিভিন্ন সময় যৌতুক দাবি করে রুমীকে নির্যাতন করতেন। সম্প্রতি নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। বুধবার সকালে রুমী তার মাকে কান্নাভেজা কণ্ঠে ফোন করে বলেন- আমাকে বাড়িতে নিয়ে যাও। ওরা আমাকে মেরে ফেলবে।
বুধবার বিকেলে খোকন তার শ্বশুরবাড়িতে ফোন করে বলেন, রুমী গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। তারা রুমীকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছেন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে খোকন ও তার ভাই রুমীকে প্রথমে দক্ষিণ সুরমার নর্থ-ইস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তাররা রুমীকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সন্ধ্যা ৬টার দিকে রুমিকে ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জুনেদ তার বোনকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে খোকন ও তার পরিবারের সদস্যদের কঠোর শান্তি দাবি করেন।
এদিকে, রুমী নিহতের ঘটনায় তার ভাই জুনেদ মিয়া বাদী হয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার মোগলাবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে মোগলাবাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামসুদ্দোহা পিপিএম বৃহস্পতিবার বিকেলে বলেন, নিহত গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর ভিত্তিতে অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করা হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।