জনগণের পাঁচটি মৌলিক অধিকারে- খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের যে পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনা সেটাই বর্তমান সরকারের অবধারিত অঙ্গীকার। খাদ্য সকল মানুষের নিয়মিত চাহিদাই নয়, বরং পুষ্টিকর, মানসম্মত আহারের আয়োজনও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সবার আগে মানুষকে খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে হয়। পাশাপাশি নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত খাবারও জীবন সুরক্ষায় যে প্রাসঙ্গিক আবেদন রাখে, তার মূল্যও কোন অংশে কম নয়। দেশের সার্বিক জনগোষ্ঠীর কল্যাণে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার সবার মাঝে পৌঁছে দেয়া বর্তমান সরকারের মহৎ ও বৃহৎ কর্মপরিকল্পনা। তেমন সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায় আগামী দশ বছরের জন্য খাদ্য কর্মসূচী প্রণয়ন করাও এক অপরিহার্য জরুরী পদক্ষেপ। এমন পরিকল্পনার জন্য পথ নির্দেশনা তৈরিও এক সুনির্দিষ্ট কর্মবিধি। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রায় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য জীবনমান সুরক্ষায় অত্যন্ত জরুরী। তেমন কর্মপরিকল্পনায় সরকার নিয়েছে বিভিন্ন রকম জনবান্ধব পদক্ষেপ, যা সামগ্রিক জনগণকে এক নিরাপদ ও নিশ্চিত জীবনযাত্রা উপহার দেবে। ক্ষুধামুক্ত একটি উন্নত দেশ গড়ার প্রত্যয়ে জনগণের মাঝে খাদ্যপণ্য অবারিত করাও এক প্রকার সচেতন দায়বদ্ধতা। এর আগে নেয়া হয়েছিল অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা যা ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়ার অন্যতম অঙ্গীকার। সেখানে নতুন মাত্রায় যুক্ত হচ্ছে এই দশ বছরের দীর্ঘ খাদ্য পরিকল্পনা যা একটি সুসংহত জনগোষ্ঠীর নিরাপদ জীবনের অনুষঙ্গ।
পুষ্টিকর ও মানসম্মত খাবার স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়ামক শক্তি। এমন বার্তা জনগণের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে সন্দেহ নেই। আর সেই সমৃদ্ধ বার্তা গণমাধ্যম কর্মীরাই জনগণের মাঝে পৌঁছে দেবে। জনসাধারণ যদি তাদের সুনিশ্চিত গন্তব্যে এগিয়ে যাওয়ার বার্তাটি নিতে না পারে, তাহলে জাতির সামনে বিপর্যয় নেমে আসতে পারে। অর্থাৎ লক্ষ্য অর্জনে অনেকখানি পিছিয়ে যেতে পারে। টেকসই উন্নয়নে স্বাস্থ্যসম্মত মানবসম্পদ তৈরি করাও একটি দেশের জন্য কাক্সিক্ষত যাত্রাপথ। আর এই অভিগমনে গণমাধ্যম কর্মীদের অনন্য ভূমিকা সংশ্লিষ্টদের মাঝে সাড়া জাগাবে।
খাদ্যমন্ত্রী ১৯৭৫ পরবর্তী দুঃসহ ক্রান্তিকাল অতিক্রমের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেছেন, সে সময় মানুষের এক বেলা খেয়ে বাকি সময় উপোস করাটাও জীবনের চলার পথের সঙ্গী হয়েছিল। বর্তমান সরকার সেই দুর্যোগ থেকে অনেকটাই এগিয়ে এসেছে। খাদ্য ঘাটতির সুযোগ তেমন নেই। মানুষ এখন দুবেলা আহার-সংস্থানে সক্ষম। তবে খাদ্যে পুষ্টি ও নিরাপত্তার ব্যাপারটি অবহেলাও উপেক্ষা করা যাবে না। বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের অভিযাত্রায় জোর কদমে এগিয়ে যাচ্ছে। সেখানে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়টি জরুরী ভিত্তিতে সম্পৃক্ত হলে গণমানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষাও সুনিশ্চিত হবে। যা দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে রাখবে যুগান্তকারী ভূমিকা।