বাবরুল হাসান বাবলু তাহিরপুর থেকে :
টাঙ্গুয়া হাওরে ইচ্ছে মত বাড়ছে নৌকা ভাড়া। নৌকার মালিকরা যে যার মত পর্যটকদের কাছ থেকে ইচ্ছেমত ভাড়া আদায় করে হাওর ঘুরাতে নিয়ে যাচ্ছেন। দেশের দুর দুরান্ত থেকে কষ্ট করে হাওর ঘুরতে আসা পর্যটকরা নিরুপায় হয়ে বেশি ভাড়া দিয়ে নৌকা নিয়ে যাচ্ছেন হাওরে। শুক্রবার শনিবার পর্যটকদের উপস্থিতি বেশী,তাই নৌকা মিলছে কম । আর সে সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন টাঙ্গুয়া যাতায়াতকারী নৌকার মাঝি ও নৌকা ব্যবাসায়ীরা। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে হাওর ঘুরতে আসা পর্যটকদের মধ্যে।
সম্প্রতি হাওর ঘুরার জন্য ঢাকার একটি পর্যটক দল নৌকা ভাড়া করেন তাহিরপুর উপজেলা সদর রতনশ্রী গ্রামের আতাউর রহমান এর। সেই সময় আতাউর রহমান এর নৌকাটি উপজেলা প্রশাসন নিকোজিশিন করে নিয়ে যান। নৌকা না পেয়ে খুব বেকায়দার পড়েন ঢাকা থেকে আসা পর্যটকের দলটি।
অনেক খোঁজাখুঁজির পর ট্যাকেরঘাট এর শ্যামল আচার্য্যর একটি নৌকা পায় পর্যটক দলটি। নৌকার মালিক দু দিনের জন্য নৌকা ভাড়া হাকেন ৩৫ হাজার টাকা। অনোন্যপায় হয়ে সে নৌকা তারা ভাড়া নেন ২৭ হাজার টাকায়। একই অবস্থা এখানকার শত শত নৌকার। হাওরে বেশি লোকজন ঘুরতে আসলেই ইচ্ছে মত ভাড়া হাকেন। উপজেলা প্রশাসন একাধিকবার চেষ্টা করেও ভাড়া নির্ধারণ কতে পারেন নি। তাহিরপুর নৌকা ঘাটে স্থানীয়দের পাশাপাশি ঢাকা মালিকদের বজরা, চন্দ্রাবতি, ময়ুরপঙ্খি সিন্দবাদ সহ একাধিক নৌকা রয়েছে। তারা অনলাইন বা পেইজ ভিত্তিক অনেকটা ছড়া দামে বুকিং দেন। আর এর প্রভাব পড়ে স্থানীয় নৌকা গুলোতেও। বর্তমানে তাহিরপুর বাজার নৌকা ঘাট থেকে ১ রাত ২ দিনে একটি ভালো মানের নৌকা নিতে হলে গুণতে হবে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা।
টাঙ্গুয়া হাওরে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় নিয়ে বিগত সময়েও অনেক কথা উঠোছে পর্যটকদের মধ্যে। সে সময় তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ ইমতিয়াজ পর্যটকদের সুবিধার জন্য সরকারি ভাবে নৌযান শ্রমিক ও মালিকদের নিয়ে একটি ভাড়া নির্ধারণ করে উজেলা বেশকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানের ভাড়ার চার্ট টানিয়ে দেন। সেখানে উল্লেখ করা হয়, একদিন (ন্যূনতম ৮ ঘন্টা হতে ১২ ঘন্টা) ২০ জন পর্যটক নিয়ে ৩ হাজার টাকা, ৩০ জন পর্যটক নিয়ে ৪ হাজার ৫শত টাকা এবং ৪০ জন পর্যটক নিয়ে ৬ হাজার টাকা।
পবর্তীতে সময়ের পরিক্রমায় বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত সাইন বোর্ডগুলো ছিড়ে বা ভেঙ্গে ফেলেন ক্ষতিপয় কিছু লোকজন। সম্প্রতি আবরও এ নিয়ে পর্যটক মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দেয়। ফলে ৬ আগষ্ট তাহিরপুর নেযৈান মালিক সমিতি নতুন একটি ভাড়ার তালিকা প্রকাশ করে। যা পূর্বের তালিকা থেকে বেশী। নতুন ভাড়ার তালিকায় উল্লেখ তাহিরপুর ঘাট হতে ওয়াচ টাওয়ার হয়ে ট্যাকেরঘাট হয়ে পুনরায় তাহিরপুর ঘাট ছোট ইঞ্জিন নৌকা (লম্বা ৩০ থেকে ৩৫ হাত) ভাড়া – ৪০০০ টাকা, বড় ইঞ্জিন নৌকা (কাট বডি) (লম্বা ৪০ থেকে ৪৫ হাত) ভাড়া -৮০০০ হাজার টাকা, বড় ইঞ্জিন নৌকা ( স্টিল বডি) (লম্বা ৪৫ থেকে ৫০ হাত) ভাড়া -১২০০০ টাকা। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে এ ভাড়ার তালিকাও অনেকে মানছেন না। ইচ্ছে মতই ভাড়া আদায় করছেন পর্যটকদের কাছ থেকে।
ময়ুরপঙ্খি নৌ যান এর মালিক রেদোয়ান খান বলেন, পর্যটন শিল্প কে সম্প্রসারিত করতে হবে,সংকোচিত নয়। আমাদের ময়ুরপঙ্খি নৌকার ভাড়া অনেক কম নির্ধারণ করা হেয়ছে। আমরা সময় সুযোগ মত ভাড়া ভাড়াই বা কমাই না।
আবুল হোসেন নৌ পরিবহন এর মালিক উপজেলা মধ্য তাহিরপুর গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, ঢাকার কিছু নৌকার মালিক তাদের নৌকায় সামান্য সুযোগ সুবিধা বাড়িযে ভাড়াটা বেশী নিচ্ছে। এতে করে তাহির পুরের স্থানীয় নৌকার মালিকরাও ভাড়া বেশি নিচ্ছে।
তাহিরপুর ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি আবিকুল ইসলাম জানান, আমরা পর্যটকদের জন্য নৌকা ভাড়ার তালিকা নির্ধারণ করেছিলাম। সেটি বেশি হওয়ায় আমরা আবার বসে নতুন তালিকা তৈরী করবো।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ রায়হান কবির বলেন,পর্যটকদের কাছ থেকে নৌকা ভাড়া বেশি আদায করার বিষয়টি আমাকে অনেকে বলেছে। নৌকা মালিক সমিতি লোকজনদের সাথে বসে তালিকাটি পরিবর্তন করা হবে।