স্টাফ রিপোর্টার :
গোলাপগঞ্জে দায়েরকৃত অস্ত্র মামলায় ২ আসামীকে ১৪ বছর এবং ৩ আসামীকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল দুপুরে সিলেটের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল ৪নং আদালতের বিচারক মিজানুর রহমান ভূঁইয়া এ রায় প্রদান করেন। রায়ের পাশাপাশি দন্ডপ্রাপ্ত আসামীদেরকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরো ২ মাসের সশ্রম কারাদন্ড দেয়া হয়।
দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে, কোম্পানীগঞ্জ থানার বটেরতল গ্রামের মৃত রইছ আলীর পুত্র হাবিবুর রহমান উরফে গেদা মিয়া উরফে রাজা (৩২), গোলাপগঞ্জ থানার ইসলামপুর গ্রামের মোশারফ আলীর পুত্র নানু মিয়া (২৮), একই থানার সুনামপুর গ্রামের মৃত আসকর আলীর পুত্র সামছুল ইসলাম মন্টু (৩০), একই গ্রামের রিয়াজ উদ্দিনের পুত্র দেলোয়ার হোসেন (২৪), সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক থানার পালপুর গ্রামের মৃত গেতাব আলীর পুত্র আব্দুল সালাম উরফে কালা মিয়া (২৮)। বর্তমানে দন্ডপ্রাপ্ত সকল আসামী পলাতক রয়েছেন। খালাসপ্রাপ্ত হচ্ছেন, গোলাপগঞ্জ থানার বসন্তপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বরের পুত্র আব্দুল হক (৩৮)।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৪ সালের ১৭ ডিনেম্বর রাত সোয়া ৯ টার দিকে ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের উত্তর কানিশাইল পাহাড় লাইন রাস্তার মোড়ে ডাকাতি করার উদ্দেশ্যে অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে একদল ডাকাত ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলো। গোপনে এমন সংবাদ পেয়ে গোলাপগঞ্জ থানার একদল পুলিশ সেখানে অভিযান চালিয়ে উল্লেখিত আসামীদের ধাওয়া করে গ্রেফতার করে। এ সময় তাদের কাছ থেকে দেশীয় তৈরী ২টি সচল পাইপগান, ১২ বোর বিশিষ্ট ৬টি বন্দুকের কার্তুজ, ২টি রামদা, ২টি লোহার তৈরী দরজা ভাঙ্গার শাবল উদ্ধার ও জব্দ করে। এ ঘটনায় গোলাপগঞ্জ থানার এসআই মোহাম্মদ নুনু মিয়া বাদি হয়ে ৭ আসামীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো কয়েকজনকে আসামী করে থানায় অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। যার নং- ১৮ (১৭-১২-২০১৪)।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ২০ জানুয়ারী গোলাপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ.এক.এম ফজলুল হক ৬ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন এবং ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী চার্জগঠন (অভিযোগগঠন) করে আদালত এ মামলার বিচারকার্য্য শুরু করেন। দীর্ঘ শুনানী ও ৭ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আসামী নানু মিয়া ও সামছুল ইসলাম মন্টুকে অস্ত্র আইনের ১৯ (অ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদেরকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ২ মাসের সশ্রম কারাদন্ড এবং অপর আসামী হাবিবুর রহমান উরফে গেদা মিয়া উরফে রাজা, আব্দুল সালাম উরফে কালা মিয়া ও দেলোয়ার হোসেনকে অস্ত্র আইনের ১৯ (ভ) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদেরকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ২ মাসের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করেন এবং অপর আসামী আব্দুল হককের অভিযোগ আদালতে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে এ মামলা থেকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন আদালত। রাষ্ট্রপক্ষে এডিশনাল পিপি এডভোকেট মো: জসীম উদ্দিন মামলাটি পরিচালানা করেন।