বড়লেখা থেকে সংবাদদাতা :
সারাদেশের ন্যায় মৌলভীবাজারের বড়লেখা পৌরসভাসহ দশ ইউনিয়নে এক যোগে শুরু হয়েছে করোনার গণটিকা কার্যক্রম কর্মসূচি। শনিবার সকালে বড়লেখার দক্ষিনভাগ (উত্তর) ইউনিয়নে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বড়লেখা উপজেলা চেয়ারম্যান সোয়েব আহমদ। এ সময় বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.রত্নদ্বীপ বিশ্বাস, থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সর্দার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু গনটিকা উদ্বোধনের পরই দেখা যায় ভিন্ন চিত্র। করোনা থেকে বাঁচতে টিকা নিতে আসা হাজার হাজার মানুষ মানেননি স্বাস্থ্যবিধি। বেশির ভাগেরই মুখে ছিলো না মাস্ক। সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা উপজেলার নির্ধারিত টিকা কেন্দ্র গুলোতে ছিলো না পা ফেলার ফুরসত। এতে করোনা থেকে বাঁচতে টিকা নিতে আসা মানুষজন উল্টো করোনায় সংক্রমিত হয়ে বাড়ি ফেরার আশংকা করা হচ্ছে।
সরেজমিন উপজেলার বেশ কয়েকটি টিকা কেন্দ্র ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ইউনিয়নে নির্ধারিত ৬শত ডোজ টিকা বরাদ্দ থাকলেও হাজার হাজার মানুষ করোনার টিকা নিতে আসছেন। ফলে শেষ পর্যন্ত অনেকে টিকা নিতে না পেরে বাড়ি ফিরেছেন৷ টিকা নিতে আসা মানুষজন সামাজিক দূরত্ব মানছেন না। গা ঘেঁষাঘেঁষি করে লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন৷ বেশিরভাগ মানুষের মুখেই নেই মাস্ক। আবার অনেকের কাছে মাস্ক দেখা গেলেও নেই সঠিক ব্যবহার। কেউ পরেছের তুথনিতে, কেউ গলায় ঝুলিয়ে রেখেছেন আবার কেউবা পকেটে রেখেছেন। এতে করে করোনার টিকা নিতে আসা মানুষজনের মধ্যে করোনার ব্যাপক সংক্রমণ ঘটতে পারে বলে আশংকা করা হচ্ছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশের ন্যায় মৌলভীবাজারের বড়লেখায় শনিবার সকালে গণটিকা কার্যক্রম শুরু হয়৷ উপজেলার একটি পৌরসভা ও দশটি ইউনিয়নে এই কার্যক্রম চলে৷ প্রতিটি ইউনিয়নে ৬শত ডোজ টিকা এবং পৌরসভায় ১৮শত ডোজ টিকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। প্রতিটি ইউনিয়নের টিকা কেন্দ্রে তিনটি বুথে ৬০০ জন করে দশ ইউনিয়নে মোট ৬ হাজার জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ১টি করে বুথে ১ হজার ৮০০ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। সকাল ৯ টা থেকে শুরু হয়ে কার্যক্রম চলে বিকাল তিনটা পর্যন্ত। তবে অনেক কেন্দ্রে টিকার ডোজ শেষ হওয়ায় দুপুরের মধ্যেও টিকা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ফলে অনেকেই টিকা নিতে না পেরে ফিরে গেছেন। আগামী ১৪ আগস্ট থেকে ফের গণটিকা কার্যক্রম শুরু হবে৷
এদিকে সাধারণ মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মানাতে প্রত্যেক টিকা কেন্দ্রে পুলিশ, আনসার ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ ও স্কাউট সদস্যরা কাজ করেছে৷ তবে হাজার হাজার মানুষের ভিড় সামলাতে ব্যর্থ হয়েছে তারা। সাধারণ মানুষ কোনরকম নির্দেশনা না মেনে লাইনে দাঁড়ান। একজন আরেকজনে একেবারে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন। কে কার আগে টিকা নিবেন এই নিয়ে ছিলো প্রতিযোগিতা। তবে শেষ পর্যন্ত টিকা নিতে আসা বেশিরভাই টিকা গ্রহণ করতে পারেননি।
এ বিষয়ে বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রত্নদ্বীপ বিশ্বাস বলেন, ‘ উপজেলায় করোনার গনটিকা কার্যক্রম সফল ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। মানুষ ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে করোনার টিকা নিতে আসেন৷ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে প্রশাসন কাজ করেছে৷
বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী বলেন, ‘ স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে পুলিশ, আনসার ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ এবং স্কাউটের সদস্যরা কাজ করেছে। এছাড়া স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও কাজ করেছে। যারা মাস্ক আনেননি তাদের মাস্ক প্রদান করা হয়েছে।