স্টাফ রিপোর্টার :
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সিলেট বিভাগের দায়িত্ব পাওয়া শাখাওয়াত হোসেন শফিক গতকাল সোমবার প্রথমবারের মতো সিলেট সফর করেছেন। সফরকালে তিনি তিন ওলির মাজার সহ জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কর্মী সভায় যোগ দেন।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনার নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে সংগঠনকে গতিশীল করতে নতুন দিকনির্দেশনার কয়েকটি বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। আমি লজ্জিত হই, আমার মতো আপনারাও অনেকেই কুণ্ঠাবোধ করেন, হাঁটতে গিয়ে হোঁচট খান, যখন আমাদেরকে শুনতে হয়, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ে অনুপ্রবেশকারী শব্দটি সংযোজন হয়। আমাদের লজ্জার জায়গাটি তখনই আমাদেরকে আঁকড়ে ধরে, যখন শুনতে হয় বঙ্গবন্ধুর সংগঠনে, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের সংগঠন আওয়ামী লীগে নাকি জামায়াত-শিবিরের অনুপ্রবেশকারীরা অবস্থান করছে। যদি সত্যিই আওয়ামী লীগের কর্মী হতে চাই, তবে প্রতিজ্ঞা করতে হবে, আদর্শিক ও চেতনার জায়গা থেকে সমন্বয়ের মাধ্যমে এই অনুপ্রবেশকারীদের সংগঠন থেকে বের করে দেব।
শফিক বলেন, নেত্রীর কাছ থেকে আদিষ্ট হয়ে আমার দ্বিতীয় বার্তা, আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ে আগামীতে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হবে। তবে যারা দুর্নীতিতে জড়িত, তারা আওয়ামী লীগের যে পর্যায়েই থাকুক, তারা আগামীতে নেতৃত্বে আসতে পারবে না। মাদক, চাঁদাবাজি, ভূমিদখলবাজ এই বিষয়গুলোর সাথে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সোচ্চার। শেখ হাসিনা তাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। তিনি আরো বলেন, যারা বিভিন্ন নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, স্বতন্ত্র নির্বাচন করেছেন, হয়তোবা জয়লাভও করেছেন, তাদেরকে নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে আসীন করা যাবে না। তারা দল করতে পারবে, সদস্য হতে পারবে, কিন্তু নেতৃত্বের মূল জায়গায় দাবিদার হতে পারবে না।
সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খানের পরিচালনায় কর্মীসভায় সিলেট-৩ আসনের সাংসদ মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য বদর উদ্দিন আহমদ কামরান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফুর রহমান, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এর আগে সম্পাদক ও সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা শাখাওয়াত হোসেন শফিক গতকাল সোমবার বেলা সাড়ে ১২টায় বিমানের একটি ফ্লাইটে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌছান। সেখানে তাকে স্বাগত জানান সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ, অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সেখানে তিনি নেতাকর্মীদের হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেন, আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে এই বিভাগের দায়িত্ব পেয়ে সিলেটে এসেছি, এখানে আমি কোন একক নেতার নামে শ্লোগান শুনতে আসিনি। আমাদের নেতা একজনই, তিনি হলেন শেখ হাসিনা। শ্লোগান একটাই হবে আমাদের সেটি হচ্ছে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’। তাই আমি বিনয়ের সাথে আপনাদের অনুরোধ করছি কোন ব্যাক্তির নামে শ্লোগান দিবেন না।
তিনি বলেন, আমি কোন প্রশাসক হয়ে সিলেটে আসিনি, এসেছি আপনাদের বন্ধু হিসেবে আপনাদের কথা শুনতে। আগামীতে এই পূণ্যভূমি সিলেটে আওয়ামী লীগকে সুসংগঠিত করতে আপনাদের কথা আমি আমাদের নেত্রীর কাছে তুলে ধরব। পরে তিনি হযরত শাহজালাল (রহ.), হযরত শাহপরাণ (রহ.) এবং কুশিঘাট এলাকায় শাহ গাজী বুরহান উদ্দিন (রহ.) এর মাজার জিয়ারত করেন। এছাড়া আগামী ২দিন তিনি সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জ জেলা সফর করবেন বলে জানা গেছে।