চুনারুঘাট থেকে সংবাদদাতা :
সম্প্রতি চলমান কঠোর লকডাউনে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা প্রশাসন করোনাভাইরাস প্রতিরোধে প্রতিদিনই তৎপর থাকলেও উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলে থামছে না জনসমাগম। বাজারগুলোতে ঘুরে দেখা যায় মানুষের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। মানুষের আনাগোনা দেখে মনে হচ্ছে স্বাভাবিক অবস্থা বিরাজ করছে। কোন প্রকারের লকডাউনের বলাই নেই। হাট-বাজারগুলোতে মানুষের ঢল ও চায়ের স্টলগুলোতে একত্রিত হয়ে মানুষের আড্ডা প্রায়ই দেখা যায়। আর এর ফাকে প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামীণ বাজারগুলোর চায়ের স্টলে ক্যারাম খেলার নামে চলছে জুয়া। হোটেল ও চায়ের স্টলসহ অলিগলিতে ক্যারাম বসিয়ে অবৈধভাবে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন দোকানিরা।
আর সচেতন মহলের লোকজনরা বলছেন উপজেলা ও স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা নিরব কেন? চুনারুঘাট উপজেলা ও পৌরসভাসহ বিভিন্ন গ্রামীণ হাট-বাজারগুলোতে স্বাভাবিক জীবনযাপনের মতো মানুষেরা চলাফেরা করছেন ও ভিড় করে কেনা-বেচা করছেন। সামাজিক দূরত্বও কেউ মেনে চলছেন না। ফলে করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ উপজেলাতে প্রতিদিনই করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবুও চুনারুঘাটের দক্ষিণাঞ্চলের গাজীপুর, আহম্মদাবাদ, দেওরগাছ ইউনিয়নসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি হাট-বাজারের অলিগলিতে গিয়ে দেখা যায়- জনসমাগম একটুও কমেনি। গ্রামীণ বাজারে চায়ের স্টল গুলোতে রাত অবধি চলে আড্ডাবাজদের বিচরণ। এ বাজারগুলোতে বিভিন্ন স্থান থেকে ফেরা এক শ্রেণির মানুষের আড্ডাস্থলে পরিণত হয়েছে। এছাড়া সামাজিক দূরত্ব রক্ষা না হওয়ায় ক্রমশ: ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে এসব এলাকা গুলো।
মূলত আসরের নামাজের পর থেকে রাত অবধি চলে এসব আড্ডাবাজদের আড্ডা। এছাড়াও চায়ের দোকানের পাশাপাশি মুদির দোকানও থাকে খোলা। ক্রেতারা সেখানে সামাজিক দূরত্ব না মেনে ভিড় করে মালামাল কিনছেন। ক্রেতা-বিক্রেতাদের অধিকাংশ মাস্ক ব্যবহার করছেন না। উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের বাজারগুলোতে নেই প্রশাসন, সেনাবাহিনী ও পুলিশের আগমন। আবার উত্তরাঞ্চলের বাজারগুলোতে আগমন টের পেয়ে তড়িঘড়ি করে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের পালাতেও দেখা যায়।
সম্প্রতি সময়ে উপজেলা সদর ও উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন ইউনিয়নের বাজারগুলোতে সামাজিক দূরত্ব না মানার কারণ, সরকারি আদেশ অমান্যসহ বিভিন্ন অপরাধে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন জনকে জরিমানা কারার চিত্র দেখা গেলেও উপজেলার দক্ষিণাঞ্চলের বাজারগুলোতে দেখা যায়নি ভ্রাম্যমান আদালতের চিত্র।
এ ব্যাপারে বক্তব্য নিতে চুনারুঘাট উপজেলার দায়িত্ব প্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সত্যজিৎ রায় দাশ এর সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি বলেন, মোবাইল কোর্টে ব্যস্ত আছি পরে কথা বলব। আর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি মিল্টন চন্দ্র পাল এর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে, তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
উল্লেখ্য যে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক আইডিতে ২৬ জুলাই রাতের দেওয়া তথ্যমতে চুনারুঘাট উপজেলায় করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)-এ নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৩ জন, এবং মোট আক্রান্ত হয়েছেন- ৪৬৪ জন, মোট সুস্থ হয়েছেন- ৩৩৫ জন। মোট মৃত্যুবরণ করেছেন- ৪ জন। চিকিৎসাধীন / আইসোলেসনে আছেন- ১২৫ জন এর মধ্যে (৩ জন হাসপাতালে আর ১২২ জন হোম কোয়ারেন্টেনে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে। যা মোট সংক্রমণের হার- ১৭.৯৬%, মোট সুস্থতার হার- ৭২.১৯%, মোট মৃত্যুর হার- ০.৮৬%।