করোনার উপসর্গ নিয়ে নবীগঞ্জ বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের কর্মচারীর মৃত্যু

7

নবীগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
নবীগঞ্জে দিন দিন করোনা আক্রান্ত সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিনই ৪/৫ জন আক্রান্ত হচ্ছেন উপজেলার বিভিন্ন এলাকার লোকজন। গতকাল সোমবার ১৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫ জনের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। সোমবার গভীর রাতে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত্যু বরণ করেছেন নবীগঞ্জ বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডের কর্মচারী বিমল দাস। নিহত বিমল দাস এর মূল বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলায়। চাঁনপুরে জমি কিনে বাড়ি করে স্ত্রী সন্তানাদি নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন তিনি।
সুত্রে জানাযায়, সুনামগঞ্জ জেলার বাসিন্দা মৃত কৃষ্ণ দাসের ছেলে উক্ত বিমল দাস (৩৩) উপজেলার ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে জমি কিনে বাড়ি করে স্ত্রী সন্তানাদি নিয়ে ১০/১২ বছর ধরে বসবাস করে আসছেন। নবীগঞ্জ বিবিয়ানা গ্যাস ফিল্ডে পাওয়ার ব্রীজ কোম্পানীর কর্মচারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। দুই সপ্তাহ ধরে উক্ত বিমল দাস অসুস্থ থাকলেও গত মঙ্গলবার (২৯ জুন) পর্যন্ত কাজ করেন। মঙ্গলবারে তার শরীরে জ্বর থাকায় অফিস থেকে থাকে ছুটি দিয়ে চিকিৎসা নিতে বলা হয়। এর পর থেকে তিনি বাড়ীতে থেকেই স্থানীয় বান্দের বাজারে পল্লী চিকিৎসক গোবিন্দ বাবুর কাছে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন তার সহকর্মী লিল মনি ও স্ত্রী শুক্লা দাস।
রবিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে তার শ্বাস কষ্ট বাড়লে স্ত্রীসহ পরিবারের লোকজন তাকে প্রথমে প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে ডাক্তার না থাকায় পরে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রবিবার দিবাগত রাত (৫ই জুলাই) ১ টার দিকে তিনি মারা যান। এ বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন বিমল দাশের স্ত্রী শুক্লা দাস। সোমবার সকাল ১০ টার দিকে বিমল দাশের শেষকৃত্য চাঁনপুর গ্রামে সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে নবীগঞ্জ হাসপতাল সূত্রে জানাগেছে, গত ৭ দিনে নবীগঞ্জে করোনায় ২৩ জন নারী-পুরুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে গত ২৭ জুন ৩ জন, ২৮ জুন ৩ জন, ২৯ জুন ১ জন, ১লা জুলাই ৫ জন, ৩ জুলাই ২ জন, ৪ঠা জুলাই ৪ জন ও ৫ জুলাই ৫ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ৪ জন নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং বাকীরা নিজ নিজ বাড়িতে আইসোলেশনে রয়েছেন বলে জানাগেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। অপর দিকে চলমান পরিস্থিতির কারনে সরকার ঘোষিত লকডাউন বাস্তবায়নে উপজেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। মাস্কবিহীন ঘর থেকে বের হলেই তাদেরকে শাস্তি ও জরিমানা করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসন করোনার ভয়াবহতা থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছেন। অকারণে ঘর থেকে বের না হওয়ার জন্য বার বার অনুরোধ করছেন। প্রয়োজনীয় কাজে বের হলে স্বাস্থ্য বিধি মেনে এবং মাস্ক ব্যবহার করতে হবে বলেও সর্তক করছেন উপজেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।