কাজিরবাজার ডেস্ক :
ফুসফুস ও কিডনি জটিলতার কারণে এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বার বার জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার দুপুরে বিএনপি চেয়ারপার্সনের গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ নিয়ে আদালতে রিট করা হয়েছে।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ফখরুল বলেন, চিকিৎসকদের কাছ থেকে যতটুকু জেনেছি তাঁর হার্টের সমস্যা আছে, সেই সমস্যা না গেলে তার ফুসফুসে যেভাবে পানি এসে যায় সেটা বন্ধ হবে না। তাঁর চিকিৎসকরা মনে করছেন যে, ‘কিডনি ইজ নট ফ্যাংশনিং প্রোপারলি’। তার লিভারও ঠিকভাবে কাজ করছে না। যে কারণে জ্বর চলে গেলেও আবার তার জ্বর আসছে। রবিবার তাঁর জ্বর এসেছিল। চিকিৎসকরা তাদের সর্বস্ব দিয়ে চেষ্টা করছেন। যেটা বার বার করে তারা বলছেন যে, আমাদের হাসপাতালগুলো ইক্যুইপ্ট না। তাঁকে এডভান্স সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা করানো উচিত। এর আগে সিসিইউতে থাকা অবস্থায় ২৮ মে খালেদা জিয়া হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হন। ৩০ মে তার জ্বর নিয়ন্ত্রণে আসে।
খালেদা জিয়ার জন্মদিনের বিষয়ে আদালতে রিট হওয়া প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ সম্পর্কে যে কথা বলা হয়েছে- এটা তো ফেইক। এভারকেয়ার হাসপাতালের যে রিপোর্টের কথা বলা হয়েছে এই ধরনের কোন রিপোর্টই এভারকেয়ার করেনি। আর যে তারিখটা বসিয়েছে তারা- এটা ফলসলি করা হয়েছে। যে কাগজটা তারা দিয়েছে যার ওপরে আদালত একটা হুকুম দিয়েছে, এই হুকুমটা আমি জানি না ‘বিং এ ল ইয়ার’ এটা কিভাবে দিলেন?
ফখরুল বলেন, দেশে তো রাজনীতি নেই। এখন উদ্দেশ্য তাদের একটাই- এই ধরনের ইস্যুগুলো তুলে এনে জাতিকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা, ডায়ভার্ট করার চেষ্টা করা এবং মূল সমস্যা থেকে জনগণকে ভুল দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারা এসব করছে। যে ভদ্রলোক রিট করেছেন তিনি তো পারসোনালি সংক্ষুব্ধ নন। আমি যতটুক আইন বুঝি, রিটটা তখনই হতে পারে ‘ইফ এনি ওয়ান ইজ পারসোনালি এফগ্রিভ’। ব্যক্তিগতভাবে যদি সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, নিজে সংক্ষুব্ধ হয় তখন ‘হি কেন গো ফর এ রিট’। এটা তা না। খালেদা জিয়ার জন্মদিনের বিষয়ে কি আছে, না আছে এটা তো তাদের দায়িত্ব না। এটা থেকে প্রমাণিত হয়- ‘জুডিশিয়ারি ইজ নট ফ্রি’। জুডিশিয়ারির কিন্তু এটা আমলেই নেয়া উচিত ছিল না। ‘দে শুড হেল বিন টোটালি রং’।
সাংবাদিকদের কাছে ফখরুল বলেন, একটা জিনিস খেয়াল করে দেখবেন- বহু লোকের কিন্তু জন্ম তারিখ আসল একটা আর সার্টিফিকেটে আরেকটা। কারণ হচ্ছে, আমাদের জেনারেশনের সময় সঠিকভাবে বাবা-মায়েরা জন্ম তারিখ মনে রাখতে পারতেন না। তাঁরা ডায়েরি-টায়েরি ম্যানটেন করতেন না। ফলে জন্ম তারিখ দুই রকম হতে পারে। এটা কোন দিন ইস্যু হতে পারে না। ‘এখন পার্টিকুলার একটা তারিখে কেউ জন্ম নিতে পারবে না’- এটা ঘোষণা দিয়ে দিলে তো হয়ে যায়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির শেকড় আছে বলেই টিকে আছে। এত নির্যাতন, গুম-খুন, হাজার হাজার মামলার পরও বিএনপি টিকে আছে শুধু এই দলের ‘ডিপ রুট’, মানুষের হৃদয়ের অনেক গভীর চলে গেছে বলেই।